"আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ অ্যানা ১৯৪২ সালে তার ১৩তম জন্মদিনে তার বাবার কাছ থেকে একটি লাল-সাদা চেক প্রিন্টের কাপড়ে মােড়ানাে ছােট্ট লক লাগানাে অটোগ্রাফ খাতা পান। এই খাতাতেই ১৯৪২ সালের ১২ জুন থেকে তিনি তার দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ ঘটনা, কারাে সংগে কথা না বলতে পারা, নেদারল্যান্ডের অধিবাসী ইহুদিদের জীবনযাপন, বিধিনিষেধ ও পরবর্তীকালে অ্যানা নিজের অনুভূতি, বিশ্বাস ইত্যাদি সম্পর্কে লিখেছেন। অ্যানা ডায়রিটিকে ‘কিটি' বলে সম্বােধন করতেন। অ্যানা ১৯৪৪ সালের ১ আগস্ট পর্যন্ত লিখেছিলেনদুই বছর পর, ৪ আগস্ট ১৯৪৪ সালের সকালে তাঁরা জার্মান নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে ধরা পড়েন। কেউ তাঁদের লুকানাে বাসগৃহের কথা জার্মানদের কাছে বখশিসের বিনিময়ে জানিয়ে দিয়েছিলাে তা সঠিকভাবে জানা যায় না। তাঁরা ধরা পড়েন ও তাঁদেরকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আন ফ্রাংক ও তাঁর বােন মার্গো ফ্রাংককে বার্গেন-বেলজান কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ১৯৪৫ সালে টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে তাঁরা দুজনেই মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর মাইপ গিইস নামক এক ব্যক্তি ডায়রিটি উদ্ধার করেন এবং অ্যানার পিতা অটো ফ্রাংককে ডায়রিটি দেন। অটো ফ্রাংক তাদের পরিবারের একমাত্র জীবিত উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি। যুদ্ধ শেষে তাঁর পরিবারের একমাত্র বেঁচে থাকা ব্যক্তি বাবা অটো ফ্রাংক আমস্টারডামে ফিরে আসেন এবং অ্যানার দিনলিপিটি (ডায়েরি) খুঁজে বের করেন। ১৯৪৭ সালে আটো ফ্রাংক এর উদ্যোগে কনটাক্ট পাবলিসিং দ্বারা ওলন্দাজ ভাষায় হেট একটেরহাইস শিরােনামে ডায়রিটি প্রথম বই আকারে বের হয়। প্রকাশের পর থেকেই এটি সমালােচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে ইংরেজি ভাষায় ডাবলডে ও কোম্পানি দ্বারা এর ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশ হয় অ্যানা ফ্রাংক-দ্য ডায়েরি অফ আ ইয়াং গার্ল শিরােনামে। এখন পর্যন্ত বইটি ৬০টিরও বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। বইটি বিংশ শতাব্দির জনপ্রিয় বইয়ের তালিকায় স্থান করে নিয়ে এছাড়া বইটি অবলম্বনে অনেক নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।