আমরা একটি অতি কঠিন সময় পার করছি। আধুনিকতা। প্রগতিবাদ, বিজ্ঞান ও ইন্টারনেট নামের জালে আমাদের যব-বৃদ্ধ-তরুণ-কিশাের, নারী ও পুরুষ সকলের জীবন বন্দি। একদিকে যুগের উল্কা-উষ্ণ হাওয়া আমাদেরকে নক্ষেপ করছে পাপে প্লাবিত নােংরা নর্দমায়, অন্যদিকে আমাদেরকে চেপে ধরে রাখছে বেহায়াপনার মায়াবী ইন্টারনেটের জাল। একারণে সমাজে নিত্যদিন আমরা এমন সব ঘটনাপ্রবাহের মুখােমুখি হচ্ছি, যা আমাদের খুবই অপরিচিত এবং অস্বাচ্ছন্দকর। আলােচ্য বইটি তাছাওউফ বা আত্মশুদ্ধির গতানুগতিক বই নয়। বরং সমাজে অহরহ ঘটমান যেসব ঘটনা আমাদের সমাজ, সংসার, রাষ্ট্র ও জীবনব্যবস্থাকে তুমুল ঝুড়ে নাড়া দেয়, আমাদের অস্তিত্বের মূলে তীব্রবেগে আঘাত করে, সেসব ঘটনা বিশ্লেষণ করা-ই এই বইয়ের মূল বৈশিষ্ট্য। আমাদের সমাজ-সংসারে ঘটমান প্রতিটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পেছনে নিশ্চয় শরিয়াহগহিত কোনাে কারণ বা উপকরণ থাকে। সুতরাং ঘটনার ভালাে-মন্দ দিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শরিয়তের মাহাত্ম ফুটিয়ে তােলা এবং সেই আলােকে জীবন গঠন করে এসব দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলার অনুপ্রেরণা লাভ করা-ই এই বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য।। কেউ কেউ এই বিষয়টি অনুধাবন না করতে পেরে ভুল বুঝে থাকেন এবং পূর্বের এডিশনের কিছু কিছু পাঠক সমালােচনাও করেছেন এধরনের বই প্রকাশের যৌক্তিকতা নিয়ে । কিন্তু আমরা বিদগ্ধ মহলের সঙ্গে কথা বলেছি, বইটি পাঠ করার পর তাদের মতামত নিয়েছি। আমাদের বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে এধরনের বইয়ের প্রয়ােজনীয়তা আছে।কিনা, তা নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে উপস্থাপন করার অনুরােধ। করেছি। আমার জানামতে, প্রায় সকল বিদগ্ধ আলেম ও সমাজচিন্তক ব্যক্তিগণ এধরনের বইয়ের যৌক্তিকতার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন এবং আধুনিক সমাজের তথাকথিত অসভ্যতার গায়ে কুঠারাঘাত করার এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এছাড়াও অসংখ্য পাঠক অনলাইনে বইটি পাঠ করার পর আমাদেরকে পুনঃপুনঃ তাগিদ প্রদান করে বইটি পুনরায় প্রকাশ করতে এক প্রকার বাধ্যই করেছেন বললে অত্যুক্তি হবে না। সুতরাং তাদের পুনঃপুনঃ তাগিদ এবং বিদগ্ধ ও সমাজচিন্তকগণের অনুপ্রেরণায় বইটি কিছুটা সংস্কার ও সংযােজন করে পাঠকগণের সামনে আবার হাজির করা হলাে। আশা করি, সমাজের হালচাল ফুটিয়ে তুলতে এবং আধুনিকতার নামে তথাকথিত অসভ্যতার মুখােশ উন্মােচন করতে বইটি সহায়ক হবে। আল্লাহ আমাদের এই প্রয়াসকে কবুল করুন।