ড. মোহাম্মদ আরিফুর রহমান রচিত তথ্যবহুল ও অভিজ্ঞতালব্ধ একটি প্রয়োজনীয় বই ‘আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা’। তিনি পোস্ট-ডক্টরাল গবেষক, জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র। এ বইটি মূলত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য রচিত হয়েছে। বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন একটা স্বপ্নের মতো, এই স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থী। কীভাবে বিদেশে পড়া যায়? এজন্য কী কী করতে হবে? সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের তেমন কিছু জানা নেই। অনেক শিক্ষার্থী তার বহুদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হলেও সঠিক তথ্য ও জানাশোনার অভাবে মাঝপথে এসে হারিয়ে যায়। অনেকে মনে করে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন! আসলে, টাকার প্রয়োজন তেমন নেই। বিদেশে পড়তে আসার জন্য অনেক স্কলারশিপ বা বৃত্তি আছে। উচ্চশিক্ষার জন্য কোন দেশ ভালো হবে, স্কলারশিপের ব্যবস্থা আছে কি না, ছাত্রত্বকালীন কাজের সুযোগ আছে কিনা ইত্যাদি নানা বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে আলোচনা করা হয়েছে এ বইটিতে। বইটির সূচিপত্র দেখলেই বোঝা যাবে যে লেখক প্রতিটি বিষয় নিয়েই তার অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন। আমেরিকা আসার সহজ উপায় কী?, উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা কেন আসবে?, আমেরিকায় পড়তে আসতে হলে কী কী লাগবে?, সিজিপিএ (পএচঅ) কম হলে কী করবে?, জিআরই না দিয়ে কি আমেরিকায় আসা যায়?, ঞঙঊঋখ নাকি ওঊখঞঝ, আমেরিকা আসার জন্য কোনটা লাগবে?, ফান্ডিং বা স্কলারশিপ কীভাবে পাওয়া যায়?, বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করবে কীভাবে?, প্রফেসর বা সুপারভাইজার খোঁজ করবে কীভাবে?, প্রফেসরের কাছে কীভাবে ই-মেইল করবে? রিকমেন্ডেশন লেটার কীভাবে লিখবে? স্টেটমেন্ট অব পারপাস (ঝঙচ) কীভাবে লিখবে? কীভাবে স্কাইপ ইন্টারভিউয়ের প্রস্তুতি নেবে? ভিসার আবেদন কখন, কীভাবে করবে? আমেরিকায় কোথায় থাকবে ঠিক করেছ? ইত্যাদি বিষয় রয়েছে বইটিতে।
মোহাম্মদ আরিফুর রহমান। ডাকনাম ফাহিম। তিনি একজন ফার্মাসিস্ট, শিক্ষক ও গবেষক। জন্ম ১৯৮৫ সালের ২৪ অগাস্ট কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার কাজিহাটি গ্রামে। পিতা মো. আব্দুল কুদ্দুছ, মাতা রাশিদা খাতুন। শৈশব কেটেছে গ্রামে। পড়াশোনা শুরু করেছেন গ্রামের স্কুলে। গ্রাম থেকে প্রাইমারি পড়া শেষ করে ক্লাস সিক্সে ভর্তি হন কিশোরগঞ্জ সরকারি বালকউচ্চ বিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে এখান থেকেই এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সে বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কিশোরগঞ্জ জেলায় সর্বাধিক মার্কধারী হিসেবে পান ‘রায় সাহেব স্বর্ণপদক’। ২০০২ সালে গুরুদয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ থেকে ২০০৬ সালে স্নাতক এবং ফার্মাসিওটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগ থেকে ২০০৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৮ সালে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে পরবর্তীতে উক্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে মনবুকাগাকাশো বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার্থে জাপান যান এবং সেখানে শিজুওকা ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘অটোফেজি’। বর্তমানে তিনি আমেরিকার জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির পোস্ট-ডক্টরাল গবেষক। লেখকের স্ত্রী তানবিরা শারমিনও একজন ফার্মাসিস্ট। ছেলে আরহামকে নিয়ে তারা বসবাস করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায়। লেখক ওষুধ এবং বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে নিয়মিত লিখেন দৈনিক পত্রিকাগুলোতে। এ পর্যন্ত তার ৯টি বই প্রকাশিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ‘ওষুধের যথাযথ ব্যবহার’, ‘ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া’ ‘বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রোজার স্বাস্থ্যগত গুরুত্ব’, ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষা’ এবং ‘আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা’ উল্লেখযোগ্য।