বলা চলে, বাংলাদেশের ৮টি বিভাগেরই আঞ্চলিক ভাষা আছে। ভাষার প্রাণই হলো আঞ্চলিক ভাষা। প্রমিথ ভাষা বা লিখিত ভাষার থেকে আঞ্চলিক ভাষার আবেদন ও আকর্ষণ কোনভাবেই উপেক্ষা করা যায় না। এ ভাষা নিয়ে নানা রকম গবেষণা ও এর বিকাশে নানাজন নানাভাবে কাজ করছেন। ‘স্থানিক বাকরীতি ও ভাষা-বৈচিত্র্য’ শিরোনামে লেখা জাহাঙ্গীর আলাম জাহানের এ বইটি এই কর্মতৎপরতার একটি অংশ। লেখক ময়মনসিং বিভাগের কিশোরগঞ্জেয়ের বাসিন্দা বিধায় এ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষার ওপর কাজ করার পরিসর পেয়েছেন। ভাষা গবেষণার বিশ্ব স্বীকৃত নির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি না থাকলেও একাডেমিক গবেষণার কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। লেখক জাহাঙ্গীর আলম জাহান একাডেমিক কোনো পদ্ধতিতে না গিয়ে নিজের আগ্রহে ও চেষ্টায় পাঠকদের জন্য হাজির করেছেন কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের পথে-প্রান্তে হাটে-বাজারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য শব্দ ও ভাষা। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের ব্যবহৃত ভাষাগুলোকে তিনি সংগ্রহ করে তার বিশ্লেষণ করেছেন। এ রকম শ্রমসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ একটি কাজের জন্য লেখক অবশ্যই প্রশংসা পাবার যোগ্য। সব শ্রেণীর, সব অঞ্চলের মানুষের জন্যই বইটি প্রয়োজনীয়। বইটির সূচিপত্রে রয়েছে- পূর্ব ময়মনসিংহের লোকভাষা : ধরন প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য, লোকভাষার সুলুকসন্ধান, আঞ্চলিক লোকভাষা, শব্দের শেষে ‘গা’ ব্যবহার, শব্দের শেষে ইন ব্যবহার, শব্দের শেষে বাম ব্যবহার , ক, খ, শ, ষ, স বর্ণের উচ্চারণে ‘হ’ নির্ভরতা, ট এবং ঠ বর্ণের উচ্চারণে ‘ড’ নির্ভরতা ইত্যাদি।