বাংলা ভাষা নিয়ে আমাদের গর্বের শেষ নেই। কিন্তু এ ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এ ভাষা শিক্ষা, চর্চা ও গবেষণা করতে হবে। বিশেষ করে আমাদের শিশুদের এই ভাষা শিক্ষা দিতে হবে সঠিকভাবে। প্রাথমিক বিদ্যালয় যাওয়ার পূর্বেই ঘরে বসে মা-বাবা তার শিশুকে যাতে বাংলা বর্ণমালার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে সে জন্য একটি বিশ^স্থ বই দরকার হয়। ঠিক তেমনি একটি বই লিখেছেন মনিরা ইসলাম। বইটির নাম ‘আমার ব্যঞ্জনবর্ণ’। ব্যঞ্জনবর্ণ হচ্ছে এমন কিছু বর্ণ যারা অন্য কোনো বর্ণের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে উচ্চারিত হতে পারে না। প্রতিটি ভাষায় এ ধরনের কিছু বর্ণ রয়েছে। বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা মোট ৩৯টি। এগুলো হলোÑ ক, খ, গ, ঘ, ঙ, চ, ছ, জ, ঝ, ঞ, ট, ঠ, ড, ঢ, ণ, ত, থ, দ, ধ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম, য, ও, ল, শ, ষ, স, য়, ড়, ঢ়, হ। এসব বর্ণ উচ্চারিত হওয়ার সময় মুখগহ্বরের কোথাও না-কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হয়। ব্যঞ্জনবর্ণগুলো উচ্চারিত হতে অন্য বর্ণের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। এরা মূলতঃ স্বরবর্ণের বর্ণের সাহায্যে উচ্চারিত হয়ে থাকে। বইটি শিশুর জন্য খুবই উপযোগী। বিশেষ করে চার থেকে ছয় বছরের বাচ্চাদের জন্য বইটি খুব সহায়ক হবে। প্রতিটি বর্ণকে আলাদা আলাদা করে লেখা হয়েছে। একটি বর্ণ দিয়ে কীভাবে একটি শব্দ তৈরি হচ্ছে তা দেখানো হয়েছে। সেই সাথে শব্দ দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্যও গঠন করার পদ্ধতি দেখানো হয়েছে বইটিতে। সম্পূর্ন রঙিন ও ঝকঝকে ছাপা এবং মজবুত বাঁধাই করা হয়েছে বইটি। বইটির শেষে রাখা হয়েছে অনুশীলনের জন্য একটি অংশ। করোনা সমস্যায় শিশুর বর্ণমালা পরিচয় ঘরে বসে করতে এ বইটি একজন শিক্ষকের ভূমিকা রাখবে। বাংলা ভাষা বিকাশের ইতিহাস হাজার বছরের। অষ্টাদশ শতকের শেষে এসে বাংলা ভাষা তার বর্তমান রূপ লাভ করে। বাংলা ভাষার লিপি হল বাংলা লিপি। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত বাংলা ভাষার মধ্যে শব্দগত ও উচ্চারণগত সামান্য পার্থক্য রয়েছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র ও আন্দোলনকারীরা মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষাকরণের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেন। ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইন বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় কাজে বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।