মনের মাঝে অপেক্ষা নামে দাঁড়িয়ে থাকা দেওয়াল ভাঙতেই দুইবোন সাদিয়া ও সাবিহার চেষ্টার যেন শেষ নেই। দুজনের ইচ্ছা সেই দেওয়াল ভেঙে হৃদয়ের মাঝে গড়ে তুলবে ভালোবাসার সৌধ। কিন্তু তাদের সকল চেষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছে বারবার। বিশেষ করে সাদিয়ার। সাদিয়ার সেই চেষ্টার মধ্যেই প্রিয়জনের সাথে দেশান্তরী হয়ে যায় ছোট বোন সাবিহা। সুখের আশায় প্রিয়জনকে কাছে পেলেও শুরু হয়ে যায় অবহেলার নতুন অধ্যায়। শেষ হয়ে যায় ঝড়ের মতো বয়ে যাওয়া আবেগ ও ভালোবাসা। আর সেই অবহেলা বুকে চেপেই নীরবে নিভৃতে জীবন চলছে সাবিহার। কিন্তু সাবিহা দেশান্তরী হওয়ায় সাদিয়ার অপেক্ষার দেওয়াল যেন উঁচু হতে হতে পাহাড়সম হতে থাকে। পরিবারে নেমে আসে দুঃখের অনল। এক সন্তান হারানো বাবা-মা নতুন করে আরো শক্ত হয়ে বসেছে সাদিয়াকে নিয়ে। কিন্তু সাদিয়ার দৃঢ় ইচ্ছা সে তার প্রিয়জনের হৃদয়ের সাথে হৃদয় মেলাবেই, অপেক্ষার দেওয়াল ভাঙবেই। কিন্তু পূর্বের চেয়ে বড় দেওয়াল সাদিয়াকে আটকে রাখে আরো কঠিন পরীক্ষায়। একদিকে শোকার্ত বাবা-মা অন্যদিকে মনের খোরাক, পরম শান্তির নীড়, ভালোবাসার সঙ্গী নীরব। আর সেই নীরবও অপেক্ষায় প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে পরম শান্তিতে আকাশে ওড়ার। নীরবের ঘরেও আছে বড় বাঁধা হয়ে থাকা স্ত্রী সাথি। কিন্তু সাদিয়া আর নীরব কোনোভাবেই ভাঙতে পারছে না দুই পরিবারে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি শক্ত পাহাড়। অপরদিকে বাবা-মা নতুন পাত্র ঠিক করে ফেলেছেন সাদিয়ার জন্য। শোকে বিধ্বস্ত মৃত্যুপথযাত্রী বাবা-মায়ের একটাই ইচ্ছা সাদিয়াকে নতুন পাত্রের হাতে তুলে দেওয়া। এখন কী করবে সাদিয়া? এমন এক প্রেম,ভালোবাসা, বিরহ, পারিবারিক অশান্তি ও টানাপোড়েন নিয়েই উপন্যাস অপেক্ষা-৩।
রেদোয়ান মাসুদ বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় কবি, ঔপন্যাসিক ও ছড়াকার। কবিতা দিয়ে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করলেও একজন ঔপন্যাসিক হিসেবেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। রেদোয়ান মাসুদের জন্ম ৬ই জানুয়ারী শরীয়তপুরের জাজিরায়। তিনি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ তথ্য ভান্ডার বাংলাকোষ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সি ই ও, হেলথ এইড হাসপাতাল লিঃ এর পরিচালক ও জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল মোড়ল নিউজ এর প্রকাশক। ২০১৪ সালে একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘মায়ের ভাষা’। ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘অপেক্ষা-১’। ২০২২ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম ম্যাক্সিম ‘জোছনায় পোড়া চোখ’। তার শৈশব ও কৈশর কেটেছে শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে। মাছ ধরা, ঘেলাধুলা ও বাগান করা ছিল তার প্রিয় শখ অথচ এই ইটপাথরের দেওয়ালঘেরা শহরে তাকে পেয়ে বসেছে লেখার জগতে। তবে শহরের এই যান্ত্রিক জীবনেও তাকে বারবার তাড়িয়ে বেড়ায় গ্রামের সেই মা ও মাটির গন্ধ। রেদোয়ান মাসুদ দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্থ মানুষকে খুব বেশি ভালবাসেন। শত ঝামেলার মাঝেও তিনি তাদের পাশে দাঁড়াতে কার্পণ্যবোধ করেন না। তিনি ততোটা জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপনে আগ্রহী নন। তাই আধুনিকতার এই যুগে একেবারে সাধারণ জীবনযাপন করছেন।