"কথাশিল্পী মানিক" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস-বিশ্লেষণে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ। এ বইয়ে সংকলিত সতেরোটি প্রবন্ধের মধ্যে পনেরোটিতেই রয়েছে মানিকের সব কটি উপন্যাসের বিচার-বিশ্লেষণ। উপন্যাসের মূল্যায়ন করা হয়েছে কখনো স্বতন্ত্রভাবে, কখনো প্রবণতা অনুযায়ী। মানিক-সাহিত্যের পর্ববিভাগের ক্ষেত্রে লেখক স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় দিয়েছেন। শেষ দুটি প্রবন্ধের একটিতে বিচার্য হয়েছে ছোটগল্পের শিল্পসৌন্দর্য, আরেকটিতে কিশোরতোষ সাহিত্য। উপন্যাস মানে জীবনের সমগ্রতা সন্ধান। মানবজীবনের যে দুই পরত-ব্যক্তিসত্তা আর সমাজসত্তা-তার একটির উন্মোচনে দরকার মনোবিশ্লেষণ, আরেকটির জন্য প্রয়োজন সমাজতাত্ত্বিক বিচার। সমগ্রতা সন্ধানের আগ্রহে মানিক এই দুই প্রক্রিয়ারই দ্বারস্থ হয়েছেন। ফলে তাঁর কথাশিল্পে ঘটেছে অন্তর্বাস্তবতা আর বহির্বাস্তবতারও এক অসামান্য সমন্বয়। উপন্যাসে তাঁর অভিযাত্রার ক্রমোন্নতি, বাঁকবদল বা পূর্ণতাভিসারের চিহ্নও বর্তমান। মানবের কল্যাণসাধনই ছিল তাঁর লক্ষ্য। এই লক্ষ্যসাধনে মানুষের মনোজগতের ব্যবচ্ছেদে ব্যাপৃত হয়ে ক্রমশ অনুভব করেছেন এর সীমাবদ্ধতা। ফলে শেষ পর্যন্ত মানবের সমাজসম্পর্কের ওপরই আরোপিত হয়েছে গুরুত্ব। ব্যক্তি বিচ্ছিন্নতাবোধে আক্রান্ত হয়ে শক্তিহীন আর নিরুপায়ত্বের শিকার হতে পারে। কিন্তু যখন সে সামাজিক ঐক্যে গ্রথিত তখন তার শক্তি আর আশাবাদ অপরিসীম। এরূপ বোধের প্রতিফলনেই মানিকের উপন্যাস সৌন্দর্য লাভ করে। বইয়ের প্রবন্ধসমূহ পাঠককে মানিকের লেখকসত্তার বিচিত্রপ্রান্তের সঙ্গে পরিচয় ঘটানোসহ ওই সৌন্দর্য আস্বাদনেও সহায়তা করবে।
জন্ম ১৯৫৯ সালের ৩০ এপ্রিল, বর্তমান পিরোজপুর জেলার সেহাঙ্গল গ্রামে। তিনি পাঠ গ্রহণ করেছেন সেহাঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রজমোহন মহাবিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। লাভ করেছেন এম.ফিল. ও পিএইচ.ডি. ডিগ্রি। শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটে, বর্তমানে বাংলা বিভাগে।