সাহিত্য নিয়ে প্রত্যেকেরই কিছু ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থাকে। আমি ছড়া লিখি এবং ছড়া যেহেতু কবিতারই আদি প্রকরণ তাই ছড়া ও কবিতা নিয়ে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ ও ভাবনা থাকতেই পারে। বিভিন্ন সময় সেই ভাবনাকেই গদ্যের আদলে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। ভাবনালব্ধ গদ্যগুলো বিভিন্ন ছোটকাগজে প্রকাশও পেয়েছে। তবুও লেখাগুলোকে আমি প্রবন্ধ বলি না। প্রবন্ধের প্রচলিত ব্যাকরণ ও প্রকরণে আমার গদ্য আদৌ ‘প্রবন্ধ’ নামে গণ্য হবার যোগ্য কি না সে নিয়ে আমিই সংশয়বিদ্ধ। তাই ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ- নির্ভর রচনা সংকলনের শিরোনাম ‘ছড়া-কবিতার গদ্যকথন’। গ্রন্থিত বেশ কয়েকটি লেখা আক্রমণাত্মক ভাষায় রচিত বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। এই মন্তব্য আংশিক সত্য। আক্রমণের লক্ষ্যস্থলও সুনির্দিষ্ট। যারা দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখি করেও মননে-প্রজ্ঞায় একচুলও এগোতে পারেননি; অধ্যয়ন ও অভিনিবেশ যাদের মননে অনুপস্থিত, সাহিত্যের মতো কল্যাণকামী সৃজনকর্মে তাদেব পদচারণা অনাবশ্যক। এই সরল সমীকরণই আমার পর্যবেক্ষণে প্রাধান্য পেয়েছে। এতে কারো আহত বা ক্ষুব্ধ হবার কারণ দেখি না। ক্ষুব্ধতার পরিবর্তে লেখালেখির ক্ষেত্রে নিজের দুর্বলতা চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তরণের পথ খোঁজাই হবে শ্রেয়তর। গদ্যকথন হয়তো অনেকের কাছেই সত্যকথনের স্বীকৃতি পাবে না। গ্রন্থিত ভাবনার বিপরীতে অনেকেরই ভিন্নমত থাকতে পারে। সে নিয়ে আমি ভাবিত নই। নিজের অভিজ্ঞায় যা সত্য জেনেছি তা-ই তুলে ধরেছি গদ্যের অবয়বে। ভালো লাগা না-লাগা পাঠকের ব্যক্তিগত রুচির অধীন। জাহাঙ্গীর আলম জাহান