একষট্টি বছর বয়ষ্ক এন্টনী গ্রে সতেরই জুলাই সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, তাঁর মাথায় নতুন চুল গজিয়েছে। তিনদিনের মাথায় নতুন দাতও উঠে গেল। পঁয়ত্রিশ বছরের যুবকে পরিণত। হলেন তিনি। তার ইএসপি ক্ষমতা অবিশ্বাস্য রকম বেড়ে গেল। অন্ধ মাকড়সা প্রজাতির প্রাচীনতমা মহিলা হিরির সাথে চিন্তা দিয়ে যােগাযােগ করলেন তিনি। হিরি তাঁকে সূর্যের আলাে দিয়ে ছবি আঁকা শেখাল। কোনাে সন্দেহ নেই এই শহরে আরেকজন ইসমাইল সাহেব আছেন। সেই ইসমাইল সাহেবের চোখে আছে এই ইসমাইল সাহেবের চশমা। তিনি রীতিমতাে বাজার করছেন, অফিস করছেন, নাস্তা করছেন, ব্যাংক থেকে টাকাও তুলছেন। কিন্তু তার টাইম টেবিল আলাদা। তিনি এগিয়ে আছেন অন্যজনের চেয়ে। বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ছেন আগে, অফিসে চলে যাচ্ছেন আগে, ব্যাংক থেকে টাকাও তুলছেন আগে। অন্যজন গাড়ি ফেল করে পিছিয়ে পড়ছেন, টাকা পেয়ে ফেরত আসছেন ব্যাংক থেকে। নওফেল দাঁড়িয়ে আছে সত্য ও মিথ্যার মাঝখানে। আলমারীর ডালা খুললেই যা কিছু সত্য, তা হয়ে যাবে মিথ্যা। মিথ্যা হয়ে যাবে সত্য। আলতাফ মিস্ত্রী বেরিয়ে আসবে, ইয়াকুব মিস্ত্রী বেরিয়ে আসবে, ফারিয়াও বেরিয়ে আসবে। আবার না খুললে একটা গাঁজাখুরি গল্পের কাছে হার মানতে হবে। ফাইজাকেও থাকতে হবে ভেতরে। নওফেল এখন কোনদিকে যাবে?
শাহেদ ইকবাল। কবি, ঔপন্যাসিক ও গীতিকার। জন্ম ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৬২। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে পিএইচডি করেছেন। স্বদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি নিয়োজিত আছেন গল্প, উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন ও রম্য সাহিত্যে। তিন যুগ ধরে লেখালেখি করছেন। প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস 'দুই নম্বর যাত্রী' (১৯৯৫)। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে শয়তানের যোগব্যায়াম, নীলকন্ঠের পালক, ইথিকা, নীলপরী, রূপালী জ্যোত্মা, এই ঔরধ আমি কিভাবে পাইলাম, কাশবনের পরী প্রভৃতি। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের সাথে যৌথভাবে প্রকাশিত হয়েছে 'সায়েন্স ফিকশন সমগ্র' ও 'ক্রেমার'। সাংস্কৃতিক জগতে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের গীতিকার। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী আক্তার জাহান পলি আর দুই কন্যা তুলকা ও ইথিকাকে নিয়ে তাঁর নিজস্ব ভুবন।