মনভাঙ্গা মানুষগুলোর চোখ অনেকটা মৃত থাকে,যার কোন নড়াচড়া নেই, নেই কোন প্রকার পলক ফেলার অস্থিরতা। কেমন যেন ভাবলেশহীন একটাজোড়া চোখ,অনেকটা মাছের মতো। কাঁচের জিনিষ বা বাস্তবিক যেকোনকিছু ভেঙ্গে গেলে একটা শব্দ হয়। তবে মনুষের ক্ষেত্রে বিষয়টা সামান্য ভিন্ন। এই যেমন মানুষের যখন মন ভাঙ্গে তখন মন ভাঙ্গার কোন আওয়াজ হয়না। আসলেই কি তাই?আমার কেন যেন মনে হয়, মনভাঙ্গার আওয়াজ পৃথিবীর করুণতম আর্তনাদের আওয়াজ এবং যেই মনটা ভাঙ্গে সেই মানুষটাই এই অসহ্যকর আওয়াটা শুনতে পেয়ে কানে তালা লেগে যায় এবং ঠিক সেইসময়ই তার চোখ হয়ে যায় স্থব্ধ যার মধ্যে থাকে নিদারুন অপলক দৃষ্টি। আমরা সাধারণত কাঁদতে থাকা মানুষ দেখলে বিচলিত হই,তাকে শান্তনা দেবার চেষ্টা করি কিন্তু খুব অদ্ভুত ব্যাপার হলো পৃথিবীতে বেশির মানুষই কাঁদতে থাকে যা দেখা যায় না, মনের মধ্যে ভয়াবহ দুঃখ নিয়ে অনবরত কাঁদতে থাকা মনটাকে গভীরে রেখে,মুখে আশ্চর্য রকম হাসি নিয়ে ঘুরে বেড়াবার মতো ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা কেবলমাত্র মানুষকেই দিয়েছেন। “মেঘ বলেছে যাব যাব” বইটিতে সেই সকল মানুষগুলোর গল্প আছে যারা ভয়াবহ খারাপ সময়েও মাথা ঠান্ডা রেখে মুখটা হাসি হাসি করে জীবন যুদ্ধ করে যায়।কাছের প্রিয় মানুষগুলোকে ভালো রাখবার জন্য জীবনের শেষদিনটা পর্যন্ত ভাবতে থাকে। প্রিয়মানুষ কে হারিয়ে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাওয়া মন নিয়ে একেকটা দিন পার করা মানুষের গল্প “মেঘ বলেছে যাব যাব”মেঘের সাথে মানুষের জীবনের অদ্ভুত একটা মিল পাওয়া যায় মেঘ যেমন আকাশ জুড়ে বিচরণ করে একেক সময়ে একেক আকার মানুষের জীবনটাও অনেকটা তেমনই কখনও সুখ কখনও দুঃখ নিয়ে অবিকল মেঘের মতো ভাসতে থাকে সমস্ত পৃথিবীটাকে আকাশ বানিয়ে। একটা সময় নীলরং এর দুঃখগুলো বৃষ্টি হয়ে মাটিতে নেমে এসে শীতল বাতাস ছড়ায় আবার কখনও মেঘের কোণায় রোদ হেসে জীবনের ঝলমলে দিনগুলোর জানান দেয়। “মেঘ বলেছে যাব যাব”মেঘের মতো মানুষ গুলোর কথা বলবে।জীবনের কথা বলবে,সংগ্রামের কথা বলবে, ভালোবাসার কথা বলবে এবং আশেপাশে ওলিতেগলিতে ঘটে যাওয়া আমাদের শহরের গল্প বলবে॥
আদনীন কুয়াশার জন্ম ঢাকায়। বাবার চাকুরীর সুবাদে ঘুরে বেরিয়েছে দেশের নানান জেলায়,শৈশবের বেশ লম্বা সময় কেটেছে চট্টগ্রামে, তার পুরো নাম রুদাবা আদনীন, ছোটবেলা থেকে শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে জড়িত। বিটিভির নতুন কুঁডি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। বই পড়ার অভ্যাস থেকেই সাহিত্য চর্চার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। শুরুতে কবিতা লিখতেন। এখন গল্পলিখেন। ফেসবুকে নানান গ্রুপে নিজের লেখা গল্পগুলো পোস্ট করে বেশ আলোচিত হোন এবং পরবর্তিতে ছাপার অক্ষরে নিজের আত্মপ্রকাশ ঘটান। স্বামী নাসিরুদ্দীন রেহান, একমাত্র কন্যা রুদমিলা আদনীন আর একমাত্র বোন রুবাবা আদনীন মুমু কেনিয়ে লেখকের আপন ভুবন।