বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিগত শতকের সত্তর দশকের শুরুতে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য একটা নতুন দেশ সৃষ্টি করেছেন । বঙ্গোপসাগর তীরের সেই জাতিরাষ্ট্রটির নাম বাংলাদেশ। বাঙালির অধিকার আদায়ে তার জীবনব্যাপী সংগ্রাম, ত্যাগের মহিমা বিপুল বিস্ময় নিয়ে এখন পৃথিবীর সামনে উপস্থিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা পর্যায় ও প্রসঙ্গ নিয়ে গান-কবিতা-প্রবন্ধ অনেক লেখা হয়েছে। তাঁকে নিয়ে লেখা গান-কবিতা হয়েছে আবেগের শ্রেষ্ঠ উচ্চারণ । কিন্তু তাঁকে নিয়ে ছােটগল্প খুব বেশি লেখা হয়নি। এর একটি কারণ। হচ্ছে- গল্প লেখা অনেক সময় ও শ্রমসাধ্য ব্যাপার । আরেকটি বিষয় হলাে- বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় জীবন ও জীবনব্যাপী সংগ্রাম সম্পর্কে যাদের অধ্যয়ন নেই, তাদের পক্ষেও তাকে নিয়ে গল্প লেখা সহজ নয়। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, তাঁকে নিয়ে গল্প লিখতে গিয়ে যদি তথ্যবিচ্যুতি ঘটে, তবে তা কিছুতেই ঠিক কাজ হবে না। কিংবদন্তি মহাপুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা ১৬টি নির্বাচিত গল্প নিয়ে সাজানাে হলাে ‘বঙ্গবন্ধু হৃদয়ের গহিনে'। এ কথা সত্যিগৌরবগাথায় পরিপূর্ণ এই মহাপুরুষের মহাজীবনের অণু-পরমাণুও এই গল্পগুলাে ধারণ করতে পারেনি, তবুও জ্যোতির্ময় বঙ্গবন্ধুর জন্য অসীম শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন মাত্র ।
১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচরের সম্রান্ত পরিবার ভূঁইয়া বাড়িতে জন্ম। শৈশব-কৈশাের কেটেছে। ফেঞ্চুগঞ্জ ও সিলেট শহরে । শিক্ষাজীবন কেটেছে ফেঞ্চুগঞ্জ এনজিএফএফ স্কুল, সিলেট সরকারি এমসি কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সিলেট ও চট্টগ্রাম রেডিওতে সংবাদপাঠ ও উপস্থাপনা করেছেন আট বছর। বাংলাদেশ টেলিভিশনে গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘বইপত্র উপস্থাপনা করেছেন এক যুগ। কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক গণকণ্ঠে সহসম্পাদক হিসেবে। তারপর সরকারি চাকরি কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগে। সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু সচল হয়ে উঠেছেন নেশার জগৎ লেখালেখি নিয়ে। উপন্যাস, ছােটগল্প, শিশুতােষ ও কিশাের রচনা- সব মিলিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৩০। প্রকাশিত হয়েছে উপন্যাসসমগ্র ২০১৫, গল্পসমগ্র ২০১৭ | ২০১৮ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হলাে বাংলাসাহিত্যে এযাবৎ প্রকাশিত বৃহৎ কলেবরের মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক উপন্যাস ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এবং মহান চীনের গৌরবােজ্জ্বল অতীত এবং চীনা জনগণের সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে লেখা ভ্রমণ উপন্যাস ‘মহাচীনের মহাজাগরণ’ । সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেছেন কিউট সাহিত্য পুরস্কার, রাজশাহী সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, পালক অ্যাওয়ার্ড, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদ (বাসপ) পদক। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে শিক্ষায় অনগ্রসর মানুষকে শিক্ষার আলােয় আলােকিত করতে সুবর্ণচরে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘জুবিলি হাবিবউল্যা মিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিপুল গ্রন্থসমৃদ্ধ লাইব্রেরি বজলের রহমান ভূঁইয়া স্মৃতি পাঠাগার'। ভ্রমণের নেশা আছে। বাংলাদেশের গ্রাম, নদী, পাহাড়, সমুদ্র তার প্রিয়। ভ্রমণ করেছেন কানাডা, যুক্তরাজ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, থাইল্যান্ড ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ। পিতা-নুরুল আলম ভূঁইয়া, মা-আনােয়ারা বেগম, স্ত্রীজোহরা সুলতানা। দুই পুত্র : শাহরিয়ার রাইসুল ইসলাম, শাহমান রাউফুল ইসলাম । স্বপ্ন : উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ।