গালিব আব্দুল্লাহ। বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিকামি মানুষের আশা-ভরসার প্রতীক। সুদূর তুর্কি থেকে ছুটে এসেছে মুসলিম অধ্যুষিত চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলমানদের সহায়তায়। চৈনিক সভ্যতার দাবিদার কমিউনিস্ট সরকার ছোট্ট প্রদেশটাকে মানবতার বন্দীশালায় পরিণত করেছেন। কালো আইনের মাধ্যমে মুসলমানদের সকল ধর্মীয় অধিকার কেড়ে নিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট সরকার। কুখ্যাত আইনটি অমান্য করলে নেমে আসছে চরম জুলুম-নির্যাতন, রিমান্ড, গুম এবং কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে ‘মগজ ধোলাই’ নামে চলছে সময়ের নির্মম, নিষ্ঠুর ও বর্বরতম নির্যাতন। মোটামুটিভাবে ইসলাম নামক ধর্ম ও মুসলমান নামক জাতিকে মাটির সাথে গুড়িয়ে দেয়ার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন। সমগ্র পৃথিবীতে ঠুটো জগন্নাথ জাতিসংঘ নামক অকার্যকর সংস্থাটির ‘গ্রিন সিগনালে’ ঝাঁপিয়ে পড়েছে তাবৎ ইসলাম বিরোধি শক্তি। ইতোমধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ আরবভূমি দখল করেছে বর্বর জায়নবাদিরা, মিথ্যা অভিযোগে ইরাক ও আফগানিস্তানকে ধ্বংস করা হয়েছে, লিবিয়া ও সিরিয়ায় চলছে নিষ্ঠুর ধ্বংসযজ্ঞ। থাবা বিস্তৃত করেছে কাশ্মীর, মিয়ানমার এবং পাত্তানীতে। বর্তমান পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি মাটি মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত। আসলে সত্য-মিথ্যার চিরন্তন দ্বন্দ্বই যেনো জ¦লন্ত সাক্ষ্যরূপে দৃশ্যমান! মুক্তির জন্য লড়ছে দিকে দিকে সাহসী সৈনিকেরা বিজয়ের পতাকা উড্ডীন করতে! এগিয়ে আসছেন খালিদ বিন ওলিদ এবং মুহাম্মদ বিন কাশিমের উত্তরসূরী গালিব আব্দুল্লাহরা ত্রাণকর্তা হয়ে। দশ হাজার উইঘুর মুসলিম বন্দী শিবিরে আবদ্ধ। সেখান থেকে পাঁচশতাধিক লড়াকু সত্যের সৈনিককে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়ার ঘোষণা করেছে কমিউনিস্ট সরকার। বিক্ষোভে, বিদ্রোহে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিতে ফেটে পড়ছে মুক্তিকামিরা। আন্দোলনের তীব্রতা যতই বাড়তে থাকে, মুক্তিকামিদের লড়াইয়ের অদম্য স্পৃহা ততই দুর্দমনীয় হয়ে উঠছে। এক অসম যুদ্ধ, রক্তের নদী বইয়ে সকল ষড়যন্ত্র মাড়িয়ে এবং নির্যাতনের সিঁড়ি বেয়ে এগিয়ে আসছে উইঘুরবাসীর মুক্তির নিশান। যে দেশের তরুণদের মধ্যে তাহের কিবরিয়ার মতো সাহসী, আলেয়া ও জারা মেহজাবিনের ন্যায় সংগ্রামী এবং হুরেজিহানের ন্যায় ঈমানদার নারীরা থাকে- সে দেশ তো কারো অধীন হওয়ার জন্য আসেনি। মানুষ তো এ পৃথিবীতে স্বাধীনভাবেই সৃষ্ট হয়েছে, তবে কেনো আমরা তাদের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করছি? তাই এই পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ফেলার জন্য প্রতিটি জনপদেই হুরেজিহানরা লড়াই করছে এই বলে, ‘বিদ্রোহি হও, জীবন পাবে। মীর জাফর হও, ঘৃণা পাবে। আপোষকারী হও, শোষণ পাবে। মানুষ হও, ভালোবাসা পাবে।’ চীনে কমিউনিস্ট সরকারের মুসলমানদের উপর দমন-নিপীড়ন ‘ওপেন সিক্রেট’। নেতৃস্থানীয় মুসলিম দেশগুলো রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে। চারদিকে যতই অস্থিরতা ও ঘন অন্ধকার তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে, ততই মানবতার মুক্তিরক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। উইঘুরবাসীদের ফরিয়াদে যেমন গালিব আব্দুল্লাহর আবির্ভাব ঘটিয়েছেন পালনকর্তা। তেমনিভাবে খালেছ নিয়ত ও প্রচেষ্টা করলে এমন ত্রাণকর্তা প্রতিটি জনপদেই আগমন ঘটা অসম্ভব নয়। কুরআনের এ আয়াতটি সবার কর্ণকুহরে পৌঁছে যাক, “অভিযানে বেরিয়ে পড়, অবস্থা হালকাই হোক আর ভারীই হোক (অস্ত্র কম থাকুক আর বেশি থাকুক) আর আল্লাহর রাস্তায় তোমাদের মাল দিয়ে আর তোমাদের জান দিয়ে জিহাদ কর, এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, তোমরা যদি জানতে! (সূরা তাওবা-৪১) সময়ের সাড়া জাগানো তরুণ লেখক ‘মামুন মুনতাসির‘। ‘অপারেশন জিরো সিক্সটি নাইন’ তার একটি থ্রিলারধর্মী উপন্যাস। এর মূল কাহিনি বাস্তবতার নিরিখে রচিত। কল্পনার আশ্রয় নেই বললেই চলে। এ বইয়ের প্রতিটি চরিত্রই সকল সমাজে, সকল দেশে দৃশ্যমান! খুব-একটা কথার মারপ্যাঁচ নেই, লেখার সাবলীল ভাষা এবং স্টাইলে পাঠক মাত্রই মুগ্ধ হবেন! নির্যাতিত মুসলমানদের মুক্তির জাগরণে লেখক নিজেই যেনো একজন তরুণ তুর্কি। গালিব আব্দুল্লাহ চরিত্রের মাধ্যমে ইসলাম প্রিয় মানুষগুলোর কাছে পৌঁছে যাবে নবজাগরণের বার্তা। ভিন্নস্বাদের এমন গল্প ও চরিত্রের সমাবেশ দেখি আমরা ’সাইমুম সিরিজ’ এবং ‘ফ্লাইং সসার সিরিজ’এ। বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় সাইমুম সিরিজের বিকল্প কোনো থ্রিলারধর্মী লেখা এখনো কেউ প্রেজেন্ট করতে পারেনি। প্রতিশ্রুতিবান তারুণ্যের প্রতীক এ লেখকের সাহসী প্রচেষ্টা পাঠকের প্রত্যাশা মেটাতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। আশাকরি তিনি এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন এবং সাহিত্যজগতকে আরো বেশি করে আলোকিত করবেন। এ বইটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করবে এটা নির্দ্ধিধায় বলা যায়। ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা লেখক মামুন মুনতাসির’কে বিশ্বাসী কলম সৈনিক হিসেবে কবুল করুন এবং তাঁর লেখার যোগ্যতা আরো বাড়িয়ে দিন। আমিন।
অনার্স, মাস্টার্স, ভাষাও ভাষাবিজ্ঞান, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়। কামিল (এম,এ) হাদিস বিভাগ, আরবি বিশ^বিদ্যালয়- ঢাকা। তাঁর মতে গল্প হলো সুস্বাদু খাবার রান্না করার মতো। ডাইনিং এ খাবার পরিবেশন করার মতো গল্প পরিবেশন করেন তিনি। তারই রেশ ধরে ২০১৮ সালের অমর একুশে বইমেলায় ‘যে রাতের দিন হয় না’- গল্পগ্রন্থের মাধ্যমে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা কুড়ান। গল্পের পাশাপাশি রয়েছে কবিতার ক্ষেত্রে সমান তালে বিচরণ। রচনা করেন কবিতার বই- সাদা মলাটে প্রিয়তমা (২০১৯)। পাশাপাশি লিখেছেন জনপ্রিয় থ্রিলার উপন্যাস ‘অপারেশন জিরো সিক্সটি নাইন’ (২০২০)- যা মূলত ধীরে ধীরে ধারাবাহিক সিরিজ আকারে প্রকাশিত হবে। ২০২১ সালে প্রকাশিত হলো লেখকের ‘আদুভাই সিরিজের প্রথম বই- ‘আদুভাই এখন ভার্সিটিতে’। বর্তমানে লেখকের ধারাবাহিক দুটি সিরিজ চলছে- (এক) গালিব আব্দুল্লাহ (ইসলামি থ্রিলার), (দুই) আদুভাই। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে- কালাপানিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ লেখক মামুন মুনতাসির।