"কুসুমপুরে বিভীষিকা" বইয়ের কভারে লেখা: মিতুর পা যেন মাটির সাথে আটকে গেছে। নড়তে পারছে না। ভয়ে আড়ষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ওর পেছনে তখন সুড়ঙ্গ থেকে বের হয়ে আসা আরও তিনজন এসে দাঁড়িয়েছে। ধরা পড়ে গেছে মিতু। এখন নিশ্চয়ই জীবনটা যাবে ওর। লােকটা এবার বাজখাই গলায় চিৎকার করে উঠল, এত রাতে কী চাও তুমি এখানে? মিত দেখছে, তার হাতে আর এক মুহুর্ত সময় নেই নষ্ট করবার মতাে। শেষবার একটা চেষ্টা চালায় মিতু। মরণপণ চেষ্টা। হঠাই বিদ্যুৎ বেগে বাঁ দিকে টার্ন নিয়ে দিল এক ছুট । সঙ্গে সঙ্গে লােকটা চেঁচিয়ে নির্দেশ দিল, ‘পালালাে ধর।' নির্দেশ পেয়েই লােকগুলাে মিতুর পিছু নিল। প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে মিতু। ঝােপ জঙ্গল ভেঙে উধ্বশ্বাসে ছুটছে। ওরা এখনও কিছুটা দূরে । মিতুর চেনা পথ । তাই ছুটতে অসুবিধা হলাে না। ছুটতে ছুটতে মিতু স্কুলের প্রাচীরের পাশে চলে এল। পেছনে তিন জোড়া পায়ের শব্দ কাছে আসবার আগেই মিতু ভাঙা দেয়ালের খাঁজ বেয়ে প্রাচীরের উপর উঠে লাফিয়ে পড়ল ওপাশে। তারপর এক দৌড়ে স্কুল বিল্ডিংয়ের পাশের মাঠের ঘন ঘাসে ভরা অন্ধকারে ঢুকে পড়ল। নিজেকে আড়াল করবার জন্য ঘাসের আড়ালে নিজেকে বিছিয়ে দিল। চারপাশে এখন শুধু ঘাসের বন। মাথার উপরে নক্ষত্রভরা আকাশ। চারদিকে নিরবিচ্ছিন্ন নীরবতা। ওরা এদিকে আসছে কিনা বােঝা যাচ্ছে না। কোনাে সাড়াশব্দ নেই। তবুও নড়ল না মিতু। চিত হয়ে শুয়ে রইল ওইখানে। ভাের হওয়া অবধি ওখানেই পড়ে রইল। শীতে আর কুয়াশায় শরীরটা কুঁকড়ে গেছে ওর।