১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকার ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক ৬৭৭ নম্বর বাড়িতে জন্ম হয় শেখ রাসেলের। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় লেখক ছিলেন ব্রিটিশ দার্শনিক বাট্রান্ড রাসেল। তাঁর নামের সাথে মিলিয়েই বঙ্গবন্ধু সর্বকনিষ্ঠ সন্তানের নাম রাখেন রাসেল। জীবনের প্রায় বেশিরভাগ সময় বঙ্গবন্ধুকে থাকতে হয়েছে ঘরের বাইরে। ছােট্ট রাসেল খুব কম সময়েই বাবাকে কাছে পেয়েছে। বাবার অভাব লাঘবে মা বেগম ফজিলাতুন্নেছাকেই ‘আব্বা বলে সম্বােধন করত সে। সেই ছােট্ট বয়সে বাবার আদর থেকে বঞ্চিত হবার এক চাপা কষ্ট লুকিয়ে থাকত রাসেলের হৃদয়জুড়ে। ১৯৭৫ সাল। ইউনিভার্সিটির ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তখন রাসেল। ১৫ আগস্ট কালােরাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে ছােট্ট শিশুটির প্রাণটিও কেড়ে নেয় ঘাতকের বুলেট। বাবা যেমন দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েও অনায়াসে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যেতেন ঠিক তেমনি রাসেলও আর দশজন ছেলের সাথে মিশে থাকতে পছন্দ করত। রাসেল আজ যদি বেঁচে থাকত হয়তাে বাবার মতাে মহান অথবা বড় বােন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতােই বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার কাণ্ডারী হতাে, হয়তাে হয়ে উঠত উজ্জ্বল বিশ্বমানবতার প্রতীক। শেখ রাসেলকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন প্রবন্ধ সংকলিত হয়েছে গ্রন্থটিতে। সংকলকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই গ্রন্থটিতে অনেক অজানা তথ্য ও শেখ রাসেলের জীবন ও চরিত সম্পর্কে জানতে পারবেন পাঠকবৃন্দ।
মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান মূলত সরকারি কর্মকর্তা। বইয়ের সঙ্গেই তাঁর সার্বক্ষণিক ওঠা-বসা অর্থাৎ গ্রন্থাগারিক। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়াধীন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের পরিচালক পদে চাকুরীকাল সম্পন্ন করে সম্প্রতি অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে আছেন। নানাবিধ গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নানা বিষয়ে গবেষণা করে চলেছেন নিরন্তর।কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একটি ইংরেজি দৈনিকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। বাল্যকাল থেকেই বইয়ের নেশা, অন্যদিকে লেখার নেশা। সব মিলিয়ে তিনি একজন গ্রন্থপ্রেমিক। জন্মেছেন নানা বাড়িতে ১৯৬১ সালের ১ আগস্ট, নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার রূপকথার গ্রাম খ্যাত হুলহুলিয়ায়।পিতা মফিজ উদ্দিন আহমেদ ছিলেন আদর্শবাদী শিক্ষক। এ অঞ্চলে তিনি ‘হেডপণ্ডিত’ নামে সুপরিচিত ছিলেন। মা জাহানারা আহমেদ আজন্ম গ্রন্থ অনুরাগী। ছাত্রজীবন থেকেই পরিবেশ, ইতিহাস, ঐতিহ্য, গ্রন্থ ও গ্রন্থাগার বিষয়ে কৌতুহলী ছিলেন। লিখেছেন নিরলসভাবে অনুসন্ধানী রচনা। তিনি বহু আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সেমিনার সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহন ও গবেষণার কাজে একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। সংবাদপত্রে বিষয়ভিত্তিক কলাম ছাড়াও এ পর্যন্ত তাঁর বাইশ হাজার চিঠিপত্র প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা পাঁচশ’র অধিক।