“আমার জীবন ও বিভাগপূর্ব বাংলাদেশের রাজনীতি" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ আবুল হাশিমের (২৭.০১.১৯০৫ ০৫.১০.১৯৭৪) পিতা মৌলভী আবুল কাসেম (০২.০২.১৮৭২১০.১০. ১৯৩৬) মন্টেগু চেমসফোর্ড সংস্কারের সময়। থেকে আমৃত্যু (১৯১৯-৩৬) প্রাদেশিক বা কেন্দ্রীয়। আইনসভার সদস্য ছিলেন। আবুল কাসেমের। জীবনব্যাপী জনকল্যাণমুখী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ। বর্ধমানবাসী ভােট দিয়ে আবুল হাশিমকে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত করেন (১৯৩৬)। ১৯৩৭ সনে জিন্নাহ হাশিমকে মুসলিম লীগে যােগদানের। জন্য আহ্বান জানান। তিনি সেই ডাকে সাড়া দেন।। ১৯৩৮ সালে হাশিম বর্ধমান জেলা মুসলিম লীগের। সভাপতি হন এবং এলাহাবাদ অধিবেশনে যােগ দেন। ১৯৪০ সালে ৩০ মার্চ লাহাের অধিবেশনে যােগ দেন। যেখানে লাহাের প্রস্তাব গৃহীত হয়। এই প্রস্তাবের। মূলকথা ছিল ভারতীয় মুসলিমদের কার্যকর ও আইনানুগ। নিরাপত্তা নিশ্চয়তাকল্পে তাদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক ও অন্যান্য অধিকার পূর্ণাঙ্গভাবে। প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে স্বাধীন। রাষ্ট্রসমূহ গঠন করা। ১৯৪৩ সনের আবুল হাশিম বঙ্গীয়। প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত। হন এবং মুসলিম লীগকে একটি গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল। দল হিসেবে গড়ে তােলেন। ১৯৪৪ সনের মধ্যে ৫ লক্ষের বেশি ২ আনার সদস্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। ১৯৪৪ সালে কলকাতা অধিবেশনে আবুল হাশিম। পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। দেশ বিভাগের। পর ১৯৫০ সালের এপ্রিল মাসে ব্যথিত চিত্তে সপরিবারে। হাশিম কলিকাতা ত্যাগ করে ঢাকা চলে আসেন। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদে সম্পৃক্ত থাকায় তিনি ১৯৫২। সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন এবং ১৬ মাস। কারাবরণ করেন। ১৯৫৩ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে খেলাফতে রব্বানী। পার্টি গঠন করেন এবং ১৯৫৬ পর্যন্ত এর নেতৃত্ব দেন। খেলাফতে রব্বানী পার্টি যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের (১৯৫৪)। শরিক দল হিসেবে ২টি আসন লাভ করে।
Abul Hashim- (১৯০৫-১৯৭৪)। জন্মগ্রহণ করেন বর্ধমানের কাশিয়াড়া গ্রামের এক অভিজাত জমিদার পরিবারে। তাঁর পিতা ছিলেন বর্ধমানের প্রখ্যাত কংগ্রেস নেতা আবুল কাসেম। তিনি বর্ধমানের রাজ কলেজ থেকে বি.এ. (১৯২৮) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল কলেজ থেকে বি.এল. ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৩৬-এ বর্ধমান থেকে নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি বঙ্গীয় বিধান সভার সদস্য নির্বাচিত হন। অতঃপর ১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। ১৯৩৮-এ বর্ধমান জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি এবং ১৯৪২ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৭-এ দেশ বিভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভায় বিরোধী দলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫২-তে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য নিযুক্ত হন। ৫২’র ২০শে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংগ্রাম পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখার জন্য কারাবরণ করেন। অতঃপর খেলাফত রব্বানী পার্টির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৬০-এ ইসলামিক একাডেমীর প্রথম পরিচালক নিযুক্ত হন। আবুল হাশিম ঐতিহাসিক ৬ দফা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পূর্ব বাংলায় বাঙালি জাতিসত্তার যে বিকাশ ঘটে তার একজন তাত্ত্বিক ছিলেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ : The Creed of Islam (1950), As I see It (1965), Integration of Pakistan (1967) প্রভৃতি।