পৃথিবীর অনিকেত মানুষগুলাের জন্যই দুনিয়া যতসব কর্কশ দৃশ্য ধরে রাখে। এই যেমন আমাদের গল্পের সাহেব! মধ্যবিত্ত স্কুল মাস্টারের কাছে পৃথিবীর একটি হারিয়ে যাওয়া দিক উন্মােচিত হয় ছাত্রের মাধ্যমে। ছাত্র তানিশার ছেলে। তানিশা কে? সে এক গল্প। শুধু এতটুকু বলা যায় সাধারণ গাল্পিকতা ছাড়িয়ে বহুদূর অবধি এই কাহিনীর বিস্তৃতি। দরকার ছিল না এই গল্পের, প্রয়ােজন ছিল না তানিশার এই হঠাৎ আবির্ভাবের। কিন্তু পৃথিবীর কত ঘটনাই তাে ঘটে প্রয়ােজন ছাড়া। চেনাজানা গণ্ডির অচেনা আবিষ্কারেই তাে ভরে ওঠে। মানুষের অন্তরের তাকগুলাে! গল্পের সাহেবের বেলায়ও তাই ঘটেছে। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এই উপন্যাস লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর মিদহাদ আহমদের দ্বিতীয় উপন্যাস। পড়শি বসত করে পাঠকের হৃদয় জয় করে নেবে বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। জীবন অভিজ্ঞতা বলে, এরকম পড়শিদের বসত করতে হয়। এরা বসত করে। পুরাে উপন্যাসে শারীরিক উপস্থিতি না থাকার পরও তানিশার এরূপ উপস্থাপন ও উপস্থিতি লেখকের সৃজনশীলতা ও দক্ষতারই পরিচায়ক। লেখকের সামনের দিনগুলাে মসৃণ হােক। বয়সে সবেমাত্র আঠারাের কাতারে হলেও লেখার প্রজ্ঞায় পাণ্ডিত্যের জাহির প্রতি স্তবকে স্তবকে। পাঠক যারা এই উপন্যাসটি পড়বেন, আমি হলফ করে বলতে পারি আপনাদের ঠকতে হবে না। ভিন্ন আঙ্গিকের কাহিনীর জালিকার বুনট উপভােগে আমন্ত্রণ জানাই সকলকে। ‘বাঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে বই খুলুন। অবাঞ্ছিতদের সাথে সময় কাটাতে চাইলে টেলিভিশন খুলুন।
কথাসাহিত্যে তরুণদের মধ্যে যিনি নিজের স্বাতন্ত্র্য অভিষেক ইতোমধ্যে জানান দিয়েছেন জোরালো ভাবে তিনি হলেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় তরুণ কথাসাহিত্যিক মিদহাদ আহমদ। এই কথাকার জন্মগ্রহণ করেন ২০০১ সালের ৫ নভেম্বর পুণ্যভূমি সিলেটে। বাবা আলী আহমদ ও মা রুজি আহমদের প্রথম সন্তান তিনি। কথাসাহিত্যিক মিদহাদ আহমদের প্রথম উপন্যাস 'আপন বৃদ্ধাশ্রম' প্রকাশের পর পাঠকমহল ও বোদ্ধাসমাজে তৈরি হয় তাঁর গ্রহণযোগ্যতা। নতুন ঐতিহাসিক উপন্যাস 'নূর-ই-মুঘল' সফলভাবে আত্মপ্রকাশের পর একসাথে এনে দেয় তাঁর পাঠকপ্রিয়তা ও জনপ্রিয়তা দুটোই। লেখকের এখন পর্যন্ত প্রকাশিত আরও দুইটি বইয়ের মধ্যে আছে উপন্যাস; 'পড়শি বসত করে' ও শিশুকিশোর সায়েন্স ফিকশনের বই 'টুনির মেয়ে টুনটুনি' লেখকের ভালোলাগে ছবি আঁকতে, রবীন্দ্রসংগীত শুনতে। জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এবছর উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন তিনি। আজন্ম লিখে যাবার ইচ্ছা আর 'মানুষ বইয়ের জন্য বাঁচুক' এমনটাই প্রত্যাশা করেন কথাকার মিদহাদ আহমদ।