"এবং সে" বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া রিফাতের মাথায় ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে। মনে হচ্ছে মাথার মধ্যে একই শব্দ বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। শব্দটাকে সে ধরতে পারছে না। ক্রমান্বয়ে শব্দের তীব্রতা বাড়ছে। ধড়মড়িয়ে উঠে চোখ খুলতেই দেখতে পায় জেরিন তার পাশে শুয়ে শিস বাজাচ্ছে। রিফাত প্রচণ্ড রেগে গিয়ে জেরিনকে একটা কড়া ধমক দিতে গিয়েও দিতে পারলাে না। রিফাত বুঝে গেলাে মেয়েটার প্রতি তার একটা মায়া জন্মে গেছে। মায়া, পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন একটি শব্দ। এর জোর এতটাই বেশি যে কেউ এই শব্দটাকে উপেক্ষা করতে পারে না। এর বাঁধনে একবার ধরা পড়লে তা থেকে ছাড়া পাওয়া সহজ নয়। অনেকেই এই শব্দটার সাথে জড়াতে চায় না। ভয় পায়। কারণ একবার জড়ালে তা থেকে বের হওয়া বড্ড মুশকিল। কিন্তু মানুষ এতটাই বিচিত্র যে এ বাঁধনে না চাইতেও বারবার ধরা দেয়। রিফাত ভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী বন্ধন এটা। যার উপর এ মায়া পড়ে তার থেকে দূরে গেলে বা সে চলে গেলে নিজের অজান্তেই চোখের জল বের হয়। ভালােবাসা না থাকলেও এ বাঁধনটাই একে অপরের সাথে নিজেদের বেঁধে রাখে। হয়তাে ভালােবাসার উর্ধ্বেও এ মায়ার বাঁধন। হয়তাে এর বলেই মানুষ মায়াজালে আটকে থাকে। এ জাল ছিন্ন করা সকলের জন্য হয়তাে সম্ভব নয়। একে উপেক্ষা করা কঠিন। সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে এই বাঁধনেই বেঁধে রেখেছেন। এটি এক অদৃশ্য শক্তিশালী টান যাকে সহজে ছেড়া যায় না। মায়া, সত্যিই এক অদ্ভুত আর রহস্যময় শব্দ।