চোখটা আঁকা হয়েছে শিকল দিয়ে। চোখটা ওপরের দিকে। চোখের কোণায় কিছুটা রক্ত। মনে হচ্ছে কোনাে তৃতীয় চোখ। চোখের মণিতে হাজারাে রহস্য। কখনাে মনে হচ্ছে চোখটা কোনাে সাপের। আবার মনে হচ্ছে ঠিক সাপের চোখ না। চোখটা ভূতের, কিংবা অন্য কোনাে প্রাণীর। অতিপ্রাকৃতিক কোনাে একটা চোখ। আবছা তন্দ্রার মধ্যেই সে গুহার মাথায় ছায়াটা আবার দেখতে পেল। সেই প্রাণীটা কারণ তার চোখটা জ্বলজ্বল করছে। মাত্র দশ হাত দূরে দাঁড়িয়ে আছে। পাখির মতাে মেয়েটা। চমকে উঠে চোখ খুলল পাবলাে। মৃত্যু মাত্র দশ হাত দূরে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ছেড়ে দেয়ার পাত্র সে নয়। মাটি হাতিয়ে সে একটা পাথরের টুকরা তুলে নেয়। পাথর দিয়ে ভূতপ্রেতের মাথা ফাটানাে যায় কি না তার জানা নেই। গেলে ভালাে, পাথরের আঘাতে ভূতের ঘিলু গলে যাবে কি না কে জানে। তবে শেষ চেষ্টা তাে করে দেখা যাক। পাবলাে পুরােপুরি প্রস্তুত। সে একটু সরে এলাে। নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ করে ফেলেছে। নিজের নিঃশ্বাসের শব্দও সে শুনতে পাচ্ছে না। গুহার গায়ে নিজেকে যতটা সম্ভব লুকিয়ে ফেলল পাবলাে। জ্বলজ্বলে লাল চোখ এগিয়ে আসছে। পাবলাে প্রস্তুত। একেবারে সামনে এসে পাবলাের দিকে তাকাল চোখ দুটো। পাবলাের হৃৎপিণ্ড উত্তেজনায় ছিটকে বের হয়ে আসার উপক্রম হলাে। সে সজোরে পাথর হাতে ঘুষি মারল। পাখির মতাে মেয়েটাও সজোরে ধাক্কা দিল তাকে। পাবলাে লুটিয়ে পড়ল গুহার দেয়ালে। বেশ আঘাত পেল সে। চোখ অন্ধকার হয়ে এলাে। প্রাণীটা অদ্ভুত শব্দ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। সাথে লুটিয়ে পড়ল পাবলাে নিজেও। জ্ঞান হারানাের আগে পাবলাের মনে হলাে, সে শেষরক্ষা করতে পারল না।
Ahmed Faruq নিজেকে সুখী মানুষ ভাবতে ভালোবাসেন। লেখেন ইচ্ছে হলে, ইচ্ছে না হলে কিছুই লেখেন না। স্বপ্ন দেখেন “লাইটহাউজ” নামক এক মিলনকেন্দ্রের। যেখানে কিছু নিঃস্ব মানুষের গল্প লেখা হবে। ছোটবড় মিলে বই লিখেছেন ২৭। ছোটগল্প লিখেছেন সবচেয়ে বেশি। ‘কাক” তার লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পগ্রন্থ। এ ছাড়াও লিখেছেন উপন্যাস, গল্প এবং নাটক। প্রচারবিমুখ নিভৃতচারী এই কথাসাহিত্যকের জন্ম ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে পুরোদমে লেখালেখি আর প্রকাশনার সাথে যুক্ত। বাবা মরহুম সামছুল হক ছিলেন কৃষিবিদ। মা ফাতেমা খাতুন, স্ত্রী জেবা, মেয়ে নাবা এবং পুত্র অবনীলকে নিয়েই তার যাপিত জীবন।