"দারিদ্র্যের অর্থনীতি : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: দারিদ্র্য নিয়ে সুসংবাদ রয়েছে, আবার দুঃসংবাদও রয়েছে। সুসংবাদ হলাে ১৯৯০ সালে বিশ্বে ৫৫.১ শতাংশ মানুষ সহনীয়। দারিদ্র্যরেখার নিচে ছিল; ২০১৫ সালে এই হার ২৬.৩ শতাংশে নেমে আসে। দুঃসংবাদ হলাে ২০১৫ সালে পৃথিবীতে ১৯৩.৪ কোটি দরিদ্র ছিল। ১৯০০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ১৬৫ কোটি; ১৮০০ সালে ছিল ১০০ কোটি। সম্পূর্ণ দারিদ্র্য নিরসন এখনাে অনেক দূরে। যাঁরা আশাবাদী, তাঁদের প্রত্যাশা হলাে বিশ্ব থেকে দারিদ্র নির্মূল হয়ে যাবে; দারিদ্র্যের নিদর্শন শুধু বেঁচে থাকবে জাদুঘরে । যারা আশাবাদী নন, তাঁরা মনে করেন যে শুধু বর্তমান অর্জনের ভিত্তিতে দারিদ্র্য নিরসনের চূড়ান্ত মূল্যায়ন করা যাবে না । দারিদ্র্য নিরসনকে অতীতের প্রেক্ষাপটে দেখতে হবে এবং ভবিষ্যতের দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখতে হবে। তাই এই বইয়ে দারিদ্র্যের পরিমাপ ও সংজ্ঞা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দারিদ্র্যের সংজ্ঞার পরিবর্তনও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যারা ক্ষুধার্ত শুধু তারাই দরিদ্র নয়, আজকে যারা বেকার, তারাও গরিব। ধনবৈষম্যের ত্রিভুজের সর্বনিম্ন ৪০ শতাংশ মানুষও দরিদ্র। বইটি লেখা হয়েছে সাধারণ পাঠকের জন্য, দারিদ্র্য নিরসনের জন্য যারা কাজ করছেন, তাদের জন্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে দারিদ্র নিয়ে যারা পড়ছেন, তাঁদের জন্য ড. ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ, ফজলে হাসান আবেদের বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, আখতার হামিদ খানের কুমিল্লা মডেল। এবং দারিদ্র্য নিরসনে ইসলামী ব্যাংকের ভূমিকার মতাে বিতর্কিত বিষয়গুলাে বক্তানিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলােচনা করা হয়েছে।
‘৭১ পূর্ববর্তী সময়ে তিনি সর্বদাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগের সমর্থক। ২৫ মার্চের কালরাতের পর যখন অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়নি, তখনই নিজ এলাকা হবিগঞ্জে পুলিশের অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেন তিনি, নিজ হাতে তৈরি করেন অস্ত্র উন্মুক্তকরণের সরকারি লিখিত অনুমতি। অস্থায়ী সরকারের জন্য তহবিল গড়তে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিন কোটি টাকা ট্রাকে করে আগরতলা পৌঁছে দেন। বাঙালির চেতনা ও অহংকারের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার সাথে কর্তব্য পালন করা এই মানুষটির নাম আকবর আলি খান। আকবর আলি খানের জন্ম ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। নিজ গ্রামেই স্কুলজীবন শেষ করে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে চাকরিজীবনে প্রবেশ করেন। মাঝে এক বছরের জন্য লাহোরের সিভিল সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর এস.ডি.ও হিসেবে তার কর্মস্থল হয় হবিগঞ্জে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন সচিবালয়ে কাজ করেন। মাঝে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স এবং পি.এইচ.ডি করে আসেন। আকবর আলি খান এর বই সমূহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহাসিক উত্থান নিয়ে প্রামাণ্য দলিল। এছাড়াও, আকবর আলি খানের বই বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন এবং এদেশে ইসলামের বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণালব্ধ দলিল। এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত তার বই ‘হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ তার সেরা রচনা। আকবর আলি খান এর বই সমগ্রতে আরো আছে ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’, ‘বাংলায় ইসলাম প্রচারে সাফল্য’, ‘বাংলাদেশের সত্তার অন্বেষা’, ‘ডিসকভারি অব বাংলাদেশ’ ইত্যাদি বই।