যাদের এখন ছেলেবেলা তারা হয়তো বুঝতে পারছ না যে ছেলেবেলাটা আবার কী! মানুষের জীবনের একেকটা অধ্যায় থাকে। বয়সের সাথে সাথে ছেলেবেলা থেকে যৌবনে পা রাখে, এরপর বৃদ্ধকাল চলে আসে। কিন্তু যে কাল চলে যায় সে কাল আর ফিরে আসে না! তা কেবল স্মৃতিময় হয়ে থাকে। মোশতাক আহমেদের তেমনি একটি স্মৃতিময় ছড়ার বই ‘স্মৃতির পাতায় ছেলেবেলা’। ৪০ পৃষ্ঠার এই ছড়ার বইটিতে ৩২টি ছড়া অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মাকে মনে পড়ে, ভূতের মেয়ে ও মস্ত জাদুকর, কল্পকথার গল্প, সারা দুপুর টাপুরটুপুর, পরির দেশে, আয় কে যাবি, ছেলেবেলা, প্রকৃতির খেলাঘরসহ আরো অনেক ছড়া রয়েছে এ বইটিতে। ছেলেবেলার সব থেকে কাছের মানুষটি হলো মা। মাকে ঘিরে নানা স্মৃতি থাকে প্রতিটি মানুষেরই। কিন্তু মাতো কারো চিরকাল বেঁচে থাকে না। একদিন না একদিন এ পৃথিবী থেকে মাকে বিদায় নিতে হয়। ‘মাকে মনে পড়ে’ ছড়ায় সেই আর্তনাদ মেলে― ‘মায়ের কথা মনে হলে বর্ষা নামে চোখের জলে মাগো তুমি কোথায় গেলে ডাকে তোমার পাগলা ছেলে ভুল করে যে চাইতো ক্ষমা, ও মা তোমার দু পা ধরে।’ ভূত নিয়ে রয়েছে মজার একটি ছড়া। ভূত বলে কি কিছু আছে? এ কথার কোনো উত্তর নেই! কিন্তু ভূতের ছড়া-গল্প পছন্দ করে না এমন শিশু-কিশোর খুঁজে পাওয়া যাবে না। ভূত হলো এক কল্পনার নাম, ভূত হলো শরীর হিম হিম করা একটা অনুভূতির নাম। ‘ভূতের মেয়ে ও মস্ত জাদুকর’ শিরোনামের ছড়ায় ছড়াকার মোশতাক আহমেদ লিখেছেন― ‘দাদু আমার মস্ত জাদুকর দাদুর আছে আজব জাদুঘর সেই ঘরেতে রাত বারোটার পর যেতেই লাগে ভীষণ রকম ডর। রূপচর্চা করতে এসে দাদুর ঘরে নিশিতে ভূতের মেয়ে আটকা পড়ে জাদুর তেলের শিশিতে।’ ছড়ার জন্য চাই নিখাঁদ কল্পনার রাজ্য। এ রাজ্যে যেন শিশু- কিশোরেরা অবাদে ঘুরে বেরাতে পারে। তাদের স্বপ্ন, ইচ্ছা, ভালো লাগার বিষয়গুলো ছড়ার মধ্যে থাকতে হবে। বাংলা ভাষায় লেখা হয়েছে অসংখ্য ছড়া। এ ছড়ার পাঠকও কিন্তু অগণিত। একটি মজার বিষয় হলো এত এত ছড়া পাঠ করেও কিন্তু ছড়া পাঠের তৃষ্ণা মেটে না। যত ছড়া পাঠ করা হয় ততই আরো ছড়া পাঠের স্বাদ জাগে। মোশতাক আহমেদের এই ছড়াগুলো ছড়া পাঠের প্রতি আরো বেশি মনোযোগী করে তুলবে ছড়ার পাঠকদের।