এই গ্রন্থের নাম ‘মারাক্কাশের বাতাস’-এ আমরা দেখতে পাই, প্রকৃতি প্রেমিক একজন সরকারি কর্মকর্তাকে। ২২তম জলবায়ু সম্মেলেনে অংশ নেয়ার জন্য সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে তিনি মারাক্কাশে গেছেন। সকালে হাঁটতে ভালোবাসেন তিনি। বাতাস তার খুব প্রিয়। তা স্বদেশ আর বিদেশ যে দেশের বাতাসই হোক না কেন। কারণ বাতাস মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান অনুষঙ্গ। মানুষ না খেয়ে দু-চারদিন বাঁচতে পারে, কিন্তু বাতাস ছাড়া একদিন, এক ঘণ্টাও নয়। লেখকের ভাষাতেই বলি, ‘একটি জীবন্ত দেহের সাথে একটি মৃতদেহের পার্থক্য খুবই সামান্য। একটা দেহ বাতাস নিতে পারে, অন্যটা পারে না। বাতাস যোগাযোগের অনিবার্য মাধ্যমও বটে। বাতাস ছাড়া মানুষ কথা বলতে পারে না। বাতাসের কারণেই আকাশ পথে সুদূর বঙ্গদেশ থেকে আমাদের এই মারাক্কাশে আসা।’ এই কয়েকটি লাইনই মানব জীবনে বাতাসের প্রয়োজনীয়তা বোঝাবার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করি। একই রচনায় প্রবলভাবে তার দেশ-ভাবনাকে প্রত্যক্ষ করি আমরা। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশে পানির লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি, ‘গ্রীণ হাউস ইফেক্ট’ নিয়ে তিনি ভাবেন। এ ধরনের সম্মেলনে তো কত কর্মকর্তাই যান। তারা রুটিন দায়িত্বটুকু পালন করে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। কিন্তু তিনি সমস্যাটির গভীরে ঢুকেছেন। ভেবেছেন জলবায়ুর এই পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর। আর সে ভাবনার কথা প্রতিফলিত হয়েছে এই রচনায়। এ রচনায় একই সাথে উঠে এসেছে, জলবায়ু নিয়ে দেশের খেটে খাওয়া, নিরন্ন মানুষের মনোভাবের কথা। তারা স্বরাজ বোঝে না, জলবায়ু বোঝে না, ভাত বোঝে। তারা চায় দুটো ভাত, একটু নুন। এ লেখার মাধ্যমে আমরা একজন চিন্তাশীল উদ্যমী দরদী কর্মকর্তাকে প্রত্যক্ষ করি। যিনি দেশকে ভালোবাসেন প্রবলভাবে।