"খুনের নেশাআমার দীপেশ আবিষ্কার" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: দীপেশ চক্রবর্তী (জন্ম : ১৯৪৮) সাম্প্রতিক বিশ্বের অন্যতম একজন ইতিহাসবিদ এবং সমাজচিন্তক। গত শতাব্দীর আশির দশকে ‘সাবঅল্টার্ন স্টাডিজ' নামে যে দল নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে উত্তরউপনিবেশবাদী ইতিহাস চর্চায় নতুন | দিগন্ত উন্মােচন করেছিলাে দীপেশ চক্রবর্তী ছিলেন তার অন্যতম একজন সদস্য। অভিজাতের ইতিহাস নয় বরং নিম্নবর্গের ইতিহাসের সন্ধানে তিনি, রনজিত গুহ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গৌতম ভদ্র প্রমুখ সাবঅলটার্ন দলের বিভিন্ন সদস্যরা প্রণিধানযােগ্য অগণিত কাজ করেছেন। দীপেশ চক্রবর্তী তার পরবর্তী কাজে বিশেষ করে মনােযােগ দিয়েছেন ‘আধুনিকতার ধারণাটি নিংড়ে বুঝতে। তার ‘প্রভিন্সিয়ালাইজিং ইউরােপ’ বইটি ইতিহাস ভাবনার ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে অন্যতম প্রধান একটি বই হিসেব বিবেচিত। যা দীপেশ চক্রবর্তী বর্তমানে আমেরিকার শিকাগাে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। সমাজবিজ্ঞানে অবদানের জন্য তিনি ২০১৪ সালে মর্যাদাবান টয়েনবী পুরস্কার অর্জন করেন। তার অন্যান্য বইগুলাের ভেতর রয়েছে-‘রিথিংকিং ওয়ার্কিং ক্লাস হিস্ট্রি’, ‘হ্যাবিটেশন অফ মডার্নিটি : এসেজ ইন ওয়েক অফ সাঅলটার্ন স্টাডিজ’, ‘দি কলিং অফ হিস্ট্রি : স্যার যদুনাথ সরকার এ্যান্ড হিজ এমপায়ার অব টুথ’, ‘দি ক্রাইসিস অফ সিভিলাইজেশন : এক্সপ্লোরিং অন গ্লোবাল এ্যান্ড প্ল্যানেটরি হিস্টরিজ। বাংলায় তার প্রকাশিত বই ‘মনােরথের ঠিকানা'। দীপেশ চক্রবর্তীর জন্ম আর বেড়ে ওঠা কলকাতায়। নানা বিষয়ে পড়াশােনা করেছেন তিনি। কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে পাশ করার পর কলকাতার ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে এমবিএ করেছেন। এরপর তিনি অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে পিএইচডি করেন।
সমসাময়িক বাংলা কথাসাহিত্যে মননশীল সাহিত্যিক হিসেবে শাহাদুজ্জামানের অবস্থান অনন্য ও অগ্রণী। গল্প, উপন্যাসেই বেশি পরিচিত হলেও শাহাদুজ্জামানের উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে প্রবন্ধ, অনুবাদ, ভ্রমণ এবং গবেষণার ক্ষেত্রেও। লেখকের মতে, তিনি আল বেরুনীর মতো দীর্ঘ নয়, বরং বিস্তৃত জীবনের আকাঙ্ক্ষা করেন। ১৯৬০ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন কথাশিল্পী শাহাদুজ্জামান। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করেন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের গ্রামীণ স্বাস্থ্য প্রকল্পে। উচ্চতর শিক্ষার জন্য পরবর্তীতে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং নেদারল্যান্ডসের আমস্টার্ডাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে শাহাদুজ্জামান দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ বিভাগে। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও গবেষণা কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন। পারিবারিকভাবে সাহিত্যের যে ঘোর শৈশবেই আচ্ছন্ন করেছিলো তা-ই শাহাদুজ্জামানের সাহিত্যিক হয়ে ওঠার পাথেয় হিসেবে কাজ করেছে। ১৯৯৬ সালে মাওলা ব্রাদার্স আয়োজিত কথাসাহিত্যের পান্ডুলিপি প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়ে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম ও ছোটগল্পগ্রন্থ ‘কয়েকটি বিহ্বল পাখি’। শাহাদুজ্জামান এর বই সমূহ ঠিক প্রচলিত উপন্যাসের গৎবাঁধা আঙ্গিকে ধরা যায় না। অনেক সাহিত্যবোদ্ধা তাই তাঁর লেখাকে ফিকশন-নন ফিকশন, পদ্য-কথাসাহিত্য, সবকিছুর মিশেলে ‘ডকু ফিকশান’, আবার অনেকে ‘মেটাফিকশান’ বলে রায় দিয়ে থাকেন। শাহাদুজ্জামান এর বই সমগ্র এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্রাচের কর্নেল, আধো ঘুমে ক্যাস্ট্রোর সঙ্গে, একটি হাসপাতাল একজন নৃবিজ্ঞানী কয়েকটি ভাঙ্গা হাড়, ক্যাঙ্গারু দেখার শ্রেষ্ঠ দিন এবং অন্যান্য অনুবাদ গল্প, কয়েকটি বিহ্বল গল্প, মামলার সাক্ষী ময়নাপাখি, কাগজের নৌকায় আগুনের নদী, এবং কবি জীবনানন্দ দাশের উপরে লেখা উপন্যাস ‘একজন কমলালেবু’। কমলা রকেটসহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও রচনা করেছেন শাহাদুজ্জামান। ২০১৬ সালে বাংলা কথাসাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পান বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।