গত ২০০ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যন্ত্রের ওপর মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে অনেক, তবে মানুষের আকুলতা পড়ে আছে অন্য জায়গায়। মানুষ ‘ইন্টেলিজেন্ট’ মেশিন চায় তার পাশে- সহকর্মী হিসেবে। সমাজের অসংগতি কমাতে। এটা অবশ্যই একটা ফ্যান্টাসি, আর তাই এই ‘চিন্তা করতে পারা’ যন্ত্র এবং রোবট নিয়ে লেখা হয়েছে হাজারো গল্প এবং মুভি। বাস্তবে সেটা ঘটুক আর নাইবা ঘটুক, তবে লেখক মনে করেন এই পুরো জিনিসটাই একটা ‘পাওয়ারফুল’ আইডিয়া। গত পাঁচ দশকে ইন্টেলিজেন্ট সিস্টেমের ‘হাইপ’ আর তার 'অ্যাডভান্সমেন্ট'-এর ফারাক থাকাতে দুটো ‘এআই’ উইন্টার দমাতে পারেনি মানুষকে। তবে এবারের ঘটনা অন্য। গত ১০ বছরে একদিকে যন্ত্রের প্রসেসিং স্পিড বেড়ে যাওয়া, অন্যদিকে মেমোরি এবং স্টোরেজের দাম পড়ে যাওয়ায় মানুষ অসাধারণ কিছু ‘প্রজ্ঞা’ পেয়েছে বিগ ডেটা থেকে। ‘ডেটা ড্রিভেন’ সরকারি কয়েকটা প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থাকায়, লেখক ডেটা থেকে কার্যকরী ‘অ্যাকশনেবল ইনসাইট’ নেওয়ার জ্ঞান নিয়ে লিখেছেন আগের দুটো বই। ব্যবহারিক লেখা— হাতেকলমে ওয়ার্কবুক স্টাইলে, যাতে করতে করতে শিখে যান সবাই। নিউরাল নেটওয়ার্ক, ডিপ লার্নিং ব্যাপারটা আমাদের জন্য নতুন হলেও ইন্টারনেট যুগের তথ্যের অবারিত ধারা আটকে রাখবে না এই প্রযুক্তি বাংলায় শিখতে। নতুন প্রযুক্তি শেখার ব্যাপারটা নিয়ে বর্তমান প্রজন্মের অসম্ভব ‘উদগ্রীবতা’ তাকে বাধ্য করেছে এই বইটা টাইমলাইনের আগেই আনতে। ওপেনসোর্সের মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী আমাদের লেখক তার তিনটা বই ছেড়ে দিয়েছেন ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের আওতায়। ‘রিড ফার্স্ট, বাই লেটার’ কনসেপ্টে বইটা লেখার সময় দুটো জিনিসকে খেয়াল করা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ১. কনসেপ্ট হেভি, কোড লাইট- কিছুটা কনসেপ্ট বুক, ২. হাতেকলমে প্রতিটা স্টেপ ধরে ওয়ার্কবুক, না শিখে যাওয়ার স্কোপ কম।
ইনফরমেশন এবং কমিউনিকেশন টেকনোলজি ও কম্পিউটারের এর নানা বিষয় নিয়ে বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন একজন লেখক হলেন রকিবুল হাসান। বর্তমান যুগ হলো যোগাযোগ বিজ্ঞানের স্বর্ণযুগ। পুরো বিশ্ব চলছে বিভিন্ন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর ভর করে এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করছে বিশ্বের প্রায় সবকিছু। পৃথিবীর যেকোনো স্থানের যেকোনো মানুষের জীবনে কম্পিউটার ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। আর তাই এখন সকল শিক্ষিত মানুষেরই কম্পিউটার এবং অন্যান্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে থাকা প্রয়োজন বিশদ জ্ঞান। আর এসকল জ্ঞান সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই রচিত হয়েছে রকিবুল হাসান এর বই সমূহ। ১৯৭০ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করা এই লেখক শিক্ষাজীবন পার করেছেন ক্যাডেট কলেজে৷ ছোটবেলা থেকেই রেডিও কমিউনিকেশন নিয়ে অগাধ ভালোবাসা তাঁর। আর এরই সূত্রে ছুটিতে এলে বাসায় নিয়মিত তৈরি করতেন আরঅ্যান্ডডি ল্যাব, চাকরিজীবী বাবা-মায়ের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে। ফিউজ উড়ানো ও বাসায় আগুন লাগিয়ে দেয়া ছিল তাঁর নিয়মিত কাজ। তবে ইলেকট্রনিক কমিনিউকেশনের প্রতি ভালোবাসাই একসময় তাঁকে সাহায্য করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এর সিগন্যাল কোরে যোগ দিতে। তিনি সবসময় নতুন নতুন বিষয় শিখতে চান এবং এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ব্যক্তিগত অথবা সরকারিভাবে অংশ নিয়েছেন সত্তরটিরও অধিক ট্রেনিংয়ে, যার মধ্যে রয়েছে আমেরিকান সেনাবাহিনীর সিগন্যাল স্কুলের কোর্স এবং ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির 'লার্নিং হাউ টু লার্ন' কোর্স। ডেটা বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা অনেক, যা তাঁকে সাহায্য করেছে জাতীয় স্কেলে এদেশের টেলিকম অপারেটরগুলোর 'ইন্টারকানেকশন ভয়েস কল কস্ট মডেলিং' তৈরিতে সহযোগিতা করতে৷ তাঁর রয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনে কাজ করার অভিজ্ঞতা। আর এসকল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতেই তিনি লিখেছেন বই। রকিবুল হাসান এর বই সমগ্রতে আছে 'হাতেকলমে মেশিন লার্নিং' ও 'শূন্য থেকে পাইথন মেশিন লার্নিং: হাতেকলমে সাইকিট-লার্ন'। তাঁর রচিত এসকল বই সকলকে সাহায্য করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত নানা বিষয় সম্পর্কে সহজে জানতে ও এগুলো নিয়ে সহজে কাজ করতে।