হাসান চৌধুরী সুন্দরপুর হাইস্কুলের শিক্ষক। গণিত পড়ান তিনি। অঙ্ক স্যার নামেই তিনি সবিশেষ পরিচিত। দুষ্টু ছাত্রছাত্রীরা আড়ালে-আবডালে তাঁকে বলে- টঙ্ক স্যার। অঙ্ক স্যার মনে করেন, লেখাপড়া ... See more
TK. 160 TK. 138 You Save TK. 22 (14%)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
কমিয়ে দেখুন
২৫% নিশ্চিত ছাড় ও ৯৯৯৳+ অর্ডারে ১০০৳ ভাউচার ফ্রি! (প্রতিদিন ১৩ জন পাবেন)*
আরো দেখুন
২৫% নিশ্চিত ছাড় ও ৯৯৯৳+ অর্ডারে ১০০৳ ভাউচার ফ্রি! (প্রতিদিন ১৩ জন পাবেন)*
বাংলাদেশে এই প্রথম অনলাইন বাণিজ্য মেলা রকমারিতে। ১ লক্ষাধিক পণ্যে ৭৫% পর্যন্ত ছাড়! সাথে 100+ Bundle Deal, Buy1 Get1, আর Free Shipping নির্দিষ্ট পণ্যে!
হাসান চৌধুরী সুন্দরপুর হাইস্কুলের শিক্ষক। গণিত পড়ান তিনি। অঙ্ক স্যার নামেই তিনি সবিশেষ পরিচিত। দুষ্টু ছাত্রছাত্রীরা আড়ালে-আবডালে তাঁকে বলে- টঙ্ক স্যার। অঙ্ক স্যার মনে করেন, লেখাপড়া কোনো চাপ নয়, লেখাপড়া মানে মজা। রসিয়ে রসিয়ে লেখাপড়া করতে হয়। আর তাই তিনি ক্লাসে যতটুকু পড়ান, তার চেয়ে বেশি গল্প করেন। আসলে তিনি গল্প করতে করতে পড়িয়ে ফেলেন। মজার সব গল্প। আর ক্লাসের বাইরে? সেখানেও তিনি একজন মজার মানুষ। এই মজার মানুষটিকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা দারুণ পছন্দ করে। তারা তাঁকে আপনজনও মনে করে, কারণ তাদের সব সমস্যা অঙ্ক স্যার সমাধান করে দেন, ঘটনা-দুর্ঘটনায় অঙ্ক স্যার তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। স্কুলের হেড স্যার তাঁর কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হয়ে বলেন, আপনার নাম হাসান; আপনি ক্লাসেও হাসান, ক্লাসের বাইরেও হাসান। তো, এই রকম একজন শিক্ষক থাকলে স্কুলকে আনন্দময় করে তুলতে আর কী লাগে? লাগে। সব শিক্ষক যদি অঙ্ক স্যারের মতো হতো, কী যে মজা হতো!
জন্ম ১৯৭৩ সালে নােয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে। লেখালেখির শুরু ৯০-এর দশকে। মানুষকে নিয়ে ভাবনা করতে তিনি ভালােবাসেন। ভাবুক মানুষ মৌচাকের মতো। ওদের দিকে ঢিল ছুড়লে খবর আছে। কথার মৌমাছি ভনভন করে আপনাকে ঘিরে ধরবে। মানুষের সঙ্গে মেশী তার স্বভাব, মানুষের ভেতরের গল্প জেনে নেওয়া তাঁর শখ। তার ভাঁড়ারে তাই অনেক গল্প। এই সব গল্প নিয়ে তিনি ভাবেন। বিচিত্র মানুষের বিচিত্র গল্প তাকে টোকা দেয়, তার মৌচাকে আঘাত লাগে। গল্পের মৌমাছিরা ভনভন করে বেরিয়ে আসে। পেশায় শিক্ষক মাইনুল এইচ সিরাজীর লেখার ভিন্ন একটা সুবাস আছে। কিংবা ভিন্ন একটা স্বাদ। সরল চিন্তা, সাবলীল ভাষা, রসবােধ—এই স্বাদ-সুবাসের সঙ্গে মজাদার মসলা হিসেবে যুক্ত হয়।
“ছোটবেলায় ভাগিনা-ভাগনিদের দিয়ে চুল টানাতাম। ওরা মাঝে মাঝে বিরক্ত হতো। তখন ভাবতাম, একদিন আমারও তোদের মতো ছেলেমেয়ে থাকবে। তখন আরাম করে চুল টানিয়ে নেব। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। এখন আমার একটা মেয়ে আছে, কিন্তু মাথায় টানার মতো চুলই নেই। টাক। মেয়ে বলে, বাবা, তোমার মাথার চুল এত হালকা যে, একটা পিঁপড়া হাঁটলেও দেখা যায়। কী অপমান! বাপের সঙ্গে বেয়াদবি!” .
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শিক্ষার হার যথেষ্ট ভালো। ২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে শিক্ষার হার ৭৩.৯ শতাংশ। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এখনো অনেক মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। দৈনন্দিনকার অভাব-অনটন, দুঃখ-দুর্দশা, আর্থিক অস্বচ্ছলতা এদেশের মানুষকে পদদলিত করে রেখেছে। অপরদিকে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে থাকা সনাতনী চিন্তা, অসুস্থ প্রতিযোগিতা, সমাজ ও আত্মকেন্দ্রিক অপসংস্কার, নিয়ম-রীতি কোমলমতি শিশু-কিশোর ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিপদ সমান, হুমকিস্বরূপ।
কিন্তু তারপরও মানুষের কাছে শিক্ষা জীবন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। একজন শিক্ষার্থী তার জীবনের সবচাইতে মহামূল্যবান জ্ঞান, দীক্ষা, লক্ষ্য ও অভিজ্ঞতা তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই অর্জন করে থাকে। এ বইতেও ঠিক তেমনই কতক ঘটনা ও গল্প বর্ণিত হয়েছে। স্কুল, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সমাজ ও জীবনের অনেক জানা-অজানা কথা উঠে এসেছে প্রতিটা পৃষ্ঠায়।
অঙ্ক স্যার টঙ্ক স্যার মূলত কিশোর গল্পগ্রন্থ। বইটিতে কিশোর উপযোগি মোট ১২টি গল্প রয়েছে। সেগুলোর শিরোনাম যথাক্রমে- অঙ্ক স্যার টঙ্ক স্যার, চশমা স্যার, সুতাকাটা ভূত, ছন্দ স্যার, এ প্লাস, ওরা পাঁচ জন, ...আপনি, আবারও এ প্লাস, দরিদ্র তহবিল, রক্তকুয়া, অমল, ছায়াবাড়ি। প্রথম ৯টি গল্প স্কুল ও চরিত্র কেন্দ্রিক হলেও শেষের ৩টি গল্প মূলত স্মৃতিকথা।
বইয়ের প্রধান চরিত্র হাসান চৌধুরী সুন্দরপুর হাইস্কুলের গণিত শিক্ষক। তিনি সকলের কাছে অঙ্ক স্যার নামে পরিচিত। স্কুলের দুষ্টু ছাত্রছাত্রীরা আড়ালে-আবডালে তাঁকে টঙ্ক স্যার বলে ডাকে। অঙ্ক স্যার মনে করেন, লেখাপড়া কোনো চাপ নয়, লেখাপড়া মানে মজা। আর তাই তিনি ক্লাসে যতটুকু পড়ান, তার চেয়ে বেশি গল্প করেন। মজার সব গল্প। আসলে তিনি গল্প করতে করতে পড়িয়ে ফেলেন। ক্লাসের বাইরেও তিনি একজন মজার মানুষ। এই মজার মানুষটিকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা দারুণ পছন্দ করে, তাঁকে আপনজন ভাবে। কারণ, শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যার সমাধান করে দেন অঙ্ক স্যার। ঘটনা-দুর্ঘটনায় তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
গল্পগুলো খুব বেশি বড় না। একেবারেই ছোট। লেখক চরিত্র গঠনের চাইতে ঘটনা ও তার বর্ণনায় বিশেষ জোর দিয়েছেন। ফলে অল্পকথায় শেষ হয়ে গেছে একেকটি কাহিনি। আমার কাছে ‘ছন্দ স্যার’ এবং ‘ওরা পাঁচ জন’ গল্প দুটি বেশি ভালো লেগেছে। গল্প শেষ হয়ে গেলেও তার রেশ থেকে গিয়েছিল অনেকটা সময়। কিন্তু পড়তে অসুবিধা হয়েছে ‘দরিদ্র তহবিল’ গল্পটি। এটাতে প্রধান চরিত্রকে প্রথম ৫ বার এক নামে, পরবর্তীতে ১৭ বার ভিন্ন নামে এবং পুনরায় প্রথম নামে উপস্থাপন করা হয়েছে। সম্পাদনায় ত্রুটি না থাকলে এই গল্পটার উপস্থাপনও সুন্দর হতে পারত।
তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করলে এটি ভীষণ উপভোগ্য একটি বই। যারা কিশোর কেন্দ্রিক ছোটগল্প পড়তে ভালোবাসেন, তাদের জন্য ‘অঙ্ক স্যার টঙ্ক স্যার’ বইটি সাজেস্ট রইল। এক বসায় পড়ে ফেলার মতো চমৎকার একটি গল্পগ্রন্থ। .