"জাভা ওয়েব প্রোগ্রামিং" বইয়ের লেখকের কথাঃ এটি জাভা প্রােগ্রামিং নিয়ে আমার লেখা চতুর্থ বই। এই বইটি মূলত আগের বইগুলাের ধারাবাহিকতার ফসল। আমার আগের বইগুলাের অনেক পাঠকই জাভা ওয়েব প্রােগ্রামিং নিয়ে প্রচণ্ড আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে আগ্রহ থাকলেই হয় না, একটি জায়গা থেকে শুরু করতে হয়। এই শুরুর জায়গাটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই বইটি লেখা। ওয়েব প্রােগ্রামিং অনেক বড়াে একটি বিষয়। একটি বইয়ে এর খানিকটা পরিচয় করিয়ে দেওয়া প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। তবে আমি মনে করি, একটি বইয়ে সম্পূর্ণ পথের বর্ণনা না থাকলেও কোথা থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে তা যদি বলে দেওয়া যায় সেটুকুই অনেক বড়াে একটি কাজ। সেই বড়াে কাজটুকু এই বইয়ে যথাসাধ্যভাবে করার চেষ্টা করেছি। বইটি আমার অন্য বইগুলাে থেকে একটু আলাদা। এই বইয়ে একটি সম্পূর্ণ প্রােজেক্ট রয়েছে। তাই এই বই পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেউ যদি এর কোডগুলাে করে যায়, তাহলে বইটি পড়ে শেষ করার সময় একটি সম্পূর্ণ প্রােজেক্ট তৈরি হয়ে যাবে। সে অর্থে বইটি কিছুটা নির্দেশনামূলক। অনেক বিষয়ের ব্যাখ্যা থাকলেও বইটিতে তত্ত্বের চেয়ে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব বেশি দিয়েছি। কোনাে একটি প্রােগ্রামিং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ভালাে অভ্যাসের (best practices) দিকে অনেক বেশি মনােযােগ দিয়েছি। আমার ধারণা, কেউ যদি এই বইয়ের কোড এবং এর অনুশীলনীগুলাে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে, বইটি শেষ করার পর প্রােডাকশন গ্রেডের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার সক্ষমতা অর্জন করবে। যদিও আমরা ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক রকম ফ্রেমওয়ার্ক ও টুল ব্যবহার করি, কিন্তু এগুলাের বেশিরভাগই ম্যাজিকের মতাে কাজ করে। যেমন : বহুল ব্যবহৃত একটি ফ্রেমওয়ার্ক হলাে প্রিং ফ্রেমওয়ার্ক। জাভার এন্টারপ্রাইজ ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে এটি বিশেষভাবে সমাদৃত। এটিতে কাজ শুরু করতে গিয়ে অনেক কিছুতেই মনে হবে ম্যাজিকের মতাে কাজ করছে। তবে একজন প্রােগ্রামারকে অবশ্যই ম্যাজিকে বিশ্বাস করলে চলবে না। তাকে খুঁটিনাটি বিষয়গুলাে সম্পর্কে খুব ভালােভাবে জানতে হবে। এই বইয়ে জাভা ওয়েব প্রােগ্রামিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলাে, যেমন : জাভা সার্ভলেট, সার্ভলেট কনটেইনার, লগিং, জেডিবিসি, কানেকশন পুল, ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিশেষভাবে আলােচনা করা হয়েছে। এর ফলে পরবর্তী সময়ে কেউ যদি একটি হাই লেভেল ফ্রেমওয়ার্ক, যেমন :ম্প্রিংয়ে কাজ করতে যায়, তার পথ অনেক সহজ হবে এবং এর বিভিন্ন বিষয় খুব দ্রুত ধরতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। বইটি পড়ার ক্ষেত্রে পরামর্শ হবে প্রতিটি অধ্যায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর কোডগুলাে করে ফেলা। বিভিন্ন অংশে ছােটো ছােটো অনুশীলনী রয়েছে, এগুলােও করে ফেলা উচিত। যেহেতু এই বইয়ে ব্যবহারিক দিকটি অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছি, তাই অনুশীলন অর্থাৎ কোড করতে পারাটি জরুরি। বইটিতে ব্যবহৃত সব কোড গিটহাবে পাওয়া যাবে। তবে আমার অনুরােধ থাকবে কোডগুলাে কপিপেস্ট না করে, বই দেখে, পড়ে, বুঝে আইডিইতে লিখে লিখে ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা। এতে শেখার প্রক্রিয়াটি অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে। সময়ের স্বল্পতা ও বইয়ের পরিসর বিবেচনায় আরাে অনেক কিছু যুক্ত করা ইচ্ছে থাকলেও সম্ভব হলাে না। পরবর্তী বইগুলােতে আরাে অনেক বিষয় নিয়ে আলােচনার ইচ্ছে পােষণ করছি। বইটি অনেক দ্রুত লেখা হয়েছে। কোনাে মানুষই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, তাই বইতে ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। এক্ষেত্রে পাঠকদেরকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরােধ রইল।
লেখালেখির শুরুটা কবিতা দিয়ে, সেই ছোট্টবেলায়। একটা সময় কবিতার খাতাটি হারিয়ে প্রোগ্রামিংয়ের এডিটরটাই হয়ে যায় লেখালেখির নতুন ক্যানভাস। ছাত্রাবস্থা থেকে প্রোগ্রামিং-ই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। প্রোগ্রামিংয়ের জন্য পছন্দের ভাষা হলো জাভা। জাভার প্রতি ভালোবাসা থেকেই জাভা ইউজার গ্রুপ বাংলাদেশ (http://www.jugbd.org/) প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাতৃভাষায় প্রোগ্রামিং শেখার আনন্দ দিতেই প্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা জাভা নিয়ে লিখে চলেছেন একের পর এক বই। তাঁর লেখার প্রধান বৈশিষ্ট্য – তিনি জাভার যে বিষয়েই লেখেন, সেটি গভীরভাবে ব্যাখ্যা করেন। তাঁর বই পড়লে কী এবং কীভাবের পাশাপাশি ‘কেন’-এর উত্তরও পাওয়া যায়। আ ন ম বজলুর রহমানের প্রথম বই জাভা প্রোগ্রামিং নতুন শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। জাভা থ্রেড প্রোগ্রামিং, অ্যাডভান্সড জাভা প্রোগ্রামিং, জাভা ওয়েব প্রোগ্রামিং-ও সমানভাবেই পাঠক সমাদৃত হয়েছে। জাভা প্রোগ্রামিং বইটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশের চার বছর পর এবার বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়ে এর দ্বিতীয় সংস্করণটি প্রকাশিত হচ্ছে। লেখা এবং চাকরির পাশাপাশি তিনি নিয়মিত জাভা বিষয়ক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং কনফারেন্সে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। শেরপুর জেলার ভারেরা গ্রামে জন্ম আ ন ম বজলুর রহমানের, শৈশবটাও কেটেছে সেখানেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সফটওয়্যার প্রকৌশলে স্নাতক সম্পন্ন করে থেরাপ, ভ্যানটেজ ল্যাবসের মতো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানিতে চাকরি করেছেন। এর মধ্যেই গেস্ট ফ্যাকাল্টি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীদের জাভা শিখিয়েছেন দুই বছর। এরপর বিকাশ লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন সিনিয়র লিড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। বর্তমানে তিনি সিনিয়র সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত আছেন কানাডার লবলো ডিজিটালে, এবং সস্ত্রীক বসবাস করছেন টরন্টো শহরে।