একসময়ের ওয়েস্টার্ন ইউনাইটেড ন্যাশন যা বর্তমানে রিপাবলিক, তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধরত বহু বছর ধরেই। রিপাবলিকের ধনী অঞ্চলের এক ধনী পরিবারের সন্তান পনেরো বছরের জুন। রিপাবলিকের প... See more
একসময়ের ওয়েস্টার্ন ইউনাইটেড ন্যাশন যা বর্তমানে রিপাবলিক, তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধরত বহু বছর ধরেই। রিপাবলিকের ধনী অঞ্চলের এক ধনী পরিবারের সন্তান পনেরো বছরের জুন। রিপাবলিকের প্রডিজি খ্যাত জুন অল্প বয়সেই মিলিটারিতে যোগ দেয়। অন্যদিকে রিপাবলিকের বস্তিতে বেড়ে ওঠা ডে, রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড়ো ক্রিমিনাল। দুটো ভিন্ন জগতের মানুষের দেখা হওয়ার কোনো কথা ছিল না। কিন্তু জুনের ভাই ক্যাপ্টেন মেটিয়াসের হত্যার পর সকল সন্দেহের তীর তাক হয় ডে'র ওপর। শুরু হয় দুজনের মধ্যকার শত্রু শত্রু খেলা। একদিকে ডে তার পরিবারকে বাঁচানোর জন্য জান বাজি রেখে যুদ্ধ করে যাচ্ছে, আর ওদিকে জুন ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর। এই সাধারণ লাড়াইয়ের মাঝেই হঠাৎ এমন এক ঘটনা ঘটে, যা দুজনের সাক্ষাতের উদ্দেশ্যের মোড় সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দেয়। এমন এক ঘটনা যা রিপাবলিক লুকিয়ে রেখেছে বহুদিন ধরে। যে-কারণে রাষ্ট্রের সকল মানুষকে বলি দিতেও তারা পিছপা হবে না।
বইয়ের নাম :- লেজেন্ড লেখক :- ম্যারি লু অনুবাদ :- এম এস আই সোহান আমিরুল আবেদীন আকাশ ধরন :- ডিস্টোপিয়ান সায়েন্স ফিকশন থ্রিলার প্রকাশনী :- ভূমিপ্রকাশ প্রচ্ছদ :- সজল চৌধুরী পৃষ্ঠা সংখ্যা :- ২০৮ মুদ্রিত মূল্য :- ৩১০ টাকা
📝ভূমিকা :- জনরা দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, "ডিস্টোপিয়ান" মানে কি? ডিস্টোপিয়ান সাহিত্য হচ্ছে সে সব উপন্যাস বা গল্প যেগুলোতে ভবিষ্যত পৃথিবীর রাজনীতি, রীতিনীতি, জীবন ব্যাবস্থার কাল্পনিক চিত্র তুলে ধরা হয়। যেখানে স্বৈরাচারী শাসকের দ্বারা শোষিত এবং অত্যাচারিত হয় পুরো সমাজ। পুরো সমাজব্যবস্থা ভাগ হয়ে যায় দুই দলে। একদল শাসক আর আরেক দল শোষিত। একদল সমাজের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে নিশ্চিন্তে। আর আরেক দলকে দুমুঠো খাবারের জন্য মরতে হয় কুকুর-বিড়ালের মত। আমেরিকান লেখিকা 'ম্যারি লু' এমন এক ভবিষ্যত পৃথিবী নিয়েই রচনা করেছেন ডিস্টোপিয়ান সাইন্স ফিকশন থ্রিলার লেজেন্ড ট্রিলজির প্রথম বই "লেজেন্ড"।
👩🏫লেখক পরিচিতি:- লেখিকা ম্যারি লু এর জন্ম ১৯৮৪ সালে চীনে। পাঁচ বছর বয়সে পুরো পরিবার আমেরিকায় চলে আসে। লেখালেখিতে সর্বোচ্চ প্রশংসিত হয়েছেন লেজেন্ড ট্রিলজির মাধ্যমে। এটা ইতোমধ্যে সিনেমার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এছাড়া লেখিকার 'ইয়াং এলিটস' ও ' 'ওয়ারক্রস' নামে আরও দুটো জনপ্রিয় সিরিজ আছে। লিখেছেন ব্যাটম্যানকে নিয়ে একটি ফ্যান ফিকশন। 'ডিস্টোপিয়ান' রচনা বিশ্বসাহিত্যে অনেক আগে থেকে জনপ্রিয় হলেও বাংলা ভাষায় এই জনরার আগমন একেবারে নতুন। জনপ্রিয় কিছু হলিউড মুভির মধ্যমে এই জনরার সাথে অনেকেই পরিচিত হয়েছে ইতোমধ্যে। এই জনরার 'দ্য হাঙ্গার গেমস', 'ডাইভারজেন্ট' সিরিজের মুভি গুলো এই দেশেও সমান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন সময় সাহিত্যের মাধ্যমে এই জনরাকে পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ার। আশা করবো এই জনরার বিশ্বসাহিত্যের অসাধারণ বইগুলো অনুবাদের পাশাপাশি মৌলিক রচনাও পাঠক হাতে পাবে এবং বাংলা সাহিত্য আরো সমৃদ্ধ হবে,,,,,,
📖 ফ্ল্যাপ থেকে :- একসময়ের ওয়েস্টার্ন ইউনাইটেড ন্যাশন যা বর্তমানে রিপাবলিক, তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধরত বহু বছর ধরেই। রিপাবলিকের ধনী অঞ্চলের এক ধনী পরিবারের সন্তান পনেরো বছরের 'জুন'। রিপাবলিকের প্রডিজি খ্যাত জুন অল্প বয়সেই মিলিটারিতে যোগ দেয়। অন্যদিকে রিপাবলিকের বস্তিতে বেড়ে ওঠা 'ডে' রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড়ো ক্রিমিনাল। দুটো ভিন্ন জগতের মানুষের দেখা হওয়ার কোন কথা ছিল না। কিন্তু জুনের ভাই ক্যাপ্টেন মেটিয়াসের হত্যার পর সন্দেহের সব তীর তাক হয় ডে'র ওপর। শুরু হয় দুজনের মধ্যে শত্রু শত্রু খেলা। একদিকে ডে তার পরিবারকে বাঁচানোর জন্য জান বাজি রেখে যুদ্ধ করে যাচ্ছে, আর ওদিকে জুন ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর। এই সাধারণ লড়াইয়ের মধ্যেই হঠাৎ এমন এক ঘটনা ঘটে, যা দুজনের সাক্ষাতের উদ্দেশ্যের মোড় সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দেয়। এমন এক ঘটনা যা রিপাবলিক লুকিয়ে রেখেছে বহুদিন ধরে। যে-কারণে রাষ্ট্রের সব মানুষকে বলি দিতেও তারা পিছপা হবে না।
❤️পাঠ প্রতিক্রিয়া :- প্রতিটি কল্পনাপ্রবণ মানুষ বোধহয় ভবিষ্যতের পৃথিবী কেমন হবে সেটা নিয়ে ভাবতে ভালোবাসে। কোন এক অলস বিকেলে বা ঝিরিঝিরি বৃষ্টির দিনে চায়ে চুমুক দিতে দিতে ভাবে আজ থেকে ১০০ বা ২০০ বছর পরের পৃথিবী কেমন হবে? তখনকার ছেলে-মেয়েরা কিভাবে বড় হবে? কেমন হবে তাদের রাজনীতি, রীতিনীতি, জীবন যাপন, বিনোদন, পড়াশোনা? এখনকার মতো আবহাওয়া কী তখনো টিকে থাকবে? তারা কি কখনো শীতের সকালের খেজুরের রস,ভাপা পিঠার স্বাদ নিতে পারবে? তারা কি ঝুম বৃষ্টিতে কাক ভেজা হয়ে দৌড়াদৌড়ির মজা বুঝবে কখনো? এসব নিয়ে ভাবতে আমার কিন্তু বেশ লাগে! আর যখন ভবিষ্যতের পৃথিবী নিয়ে কোন বই পড়ার বা মুভি দেখার সুযোগ পাই তখন সেটা গিলতে থাকি গোগ্রাসে ,,,,,,! লেখিকা 'ম্যারি লু' তার অসাধারণ বর্ণনায় তুলে ধরেছেন ভবিষ্যতের এমনই এক পৃথিবী। কত বছর পরের এই কাহিনী তা অবশ্য লেখিকা উল্লেখ করেননি। কিন্তু পড়ার পর আমার মনে হয়েছে সুদূর ভবিষ্যত না, বরং অদূর ভবিষ্যত নিয়েই এটা লেখা। হয়তো নিজের জীবদ্দশায় দেখতে হবে এমন এক পৃথিবী! উপন্যাসের প্রধান চরিত্র "ডে" আর "জুন"। ডে রাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল আর জুন রাষ্ট্রের সেরা মেধাবীদের একজন। কিন্তু তারা একে অপরের শত্রু। ডে'র নামে আগে থেকেই বিভিন্ন অভিযোগ ছিল, কিন্তু জুনের ভাই খুন হওয়ার পর ডে কে এই খুনের জন্য অভিযুক্ত করা হয়, আর এতেই জুনের সবচেয়ে বড় শত্রুতে পরিণত হয় ডে। উপন্যাসে আমার সবচেয়ে ভালো লাগছে লেখিকার বাস্তবসম্মত বর্ণনা, চরিত্রের বাস্তবসম্মত উপস্থাপন আর বর্তমান সময়ের সাথে সঙ্গতি রেখে ভবিষ্যত পৃথিবীর চিত্রায়ন। লেখিকা সায়েন্স এর ব্যাবহার করছে কিন্তু মেপে মেপে, প্রযুক্তির যথেচ্ছ ব্যবহার নাই, বরং যা আছে তা অত্তাধুনিক কিন্তু অবাস্তব না, হয়তো খুব তাড়াতাড়িই আমরা দেখতে পাবো এইসব প্রযুক্তি। চরিত্র তৈরিতেও লেখিকা যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। প্রধান চরিত্র ডে বা জুন দুজনেই বুদ্ধিমান, শারীরিক ভাবে শক্তিশালী, মারামারিতে দক্ষ, কিন্তু তারপরেও তামিল সিনেমার হিরোদের মতো এক ঘুষিতে দশজনকে মেরে ফেলে না, বরং স্বাভাবিক মানুষের মতো দশ জনের সাথে লড়াই করতে গেলে নিজেও আহত হয়, জীবন বাঁচাতে পিছু হটতে হয়। আর এসব কারণেই মনে হয়নি অনেক পরের কোন পৃথিবীর গল্প এটা, বরং মনে হইছে কয়েক বছর বা কয়েক যুগ পরেই হয়তো এইসব দেখে যেতে পারবো আমরা নিজেরাই। মনে হইছে এটা হয়তো আমাদের নিজেদের সন্তানদের গল্প.....!
🔁অনুবাদ কথন:- 'টিম ট্রান্সলেটর্স' এর ব্যানারে এই বইয়ের অনুবাদ করেছেন যৌথভাবে "এম এস আই সোহান" এবং "আমিরুল আবেদীন আকাশ"। অনুবাদ অনেক সুন্দর এবং সাবলীল ছিল। অনুবাদের জন্য কোথায় আটকাতে হয়নি। দুজন অনুবাদক এক বইয়ের হলে অনেক সময় এক অংশ ভালো তো আরেক অংশ খারাপ বা বাক্য গঠনে পার্থক্য চোখে লাগে। কিন্তু এই বইয়ের ক্ষেত্রে এমন কোন সমস্যাই হয়নি। টিম ট্রান্সলেটর্সের অনুবাদে ইতোমধ্যে অনেক গুলো বই প্রকাশ হয়ে গেছে। এরমধ্যে কিছু কিছু বইয়ের খারাপ রিভিউ আশার জন্য অনেকেই হয়তো সন্দেহে আছেন এই বইটা নিবেন কিনা। সে বইগুলো যেহেতু আমি পড়িনি তাই তাদের নিয়ে কোন মন্তব্য করার উপায় নাই। কিন্তু এই বইটা যেহেতু আমি পড়ছি তাই এটুকু বলতে পারি, যদি অন্য বইয়ের রিভিউয়ের কথা চিন্তা করে এই বইটা না পড়েন তাহলে দারুন একটা বই মিস করে ফেলবেন।
🎨🖌️প্রচ্ছদ,প্রডাকশন ও অন্যান্য :- সজল ভাইয়ের প্রচ্ছদ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। উনি দিন দিন নিজেকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। পড়ার সময় মাঝে মাঝেই প্রচ্ছদের দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। ভূমিপ্রকাশ এর প্রডাকশন নিয়ে কিছু না বললেও অন্যায় হবে। এই প্রডাকশনকে অবশ্যই নান্দনিক প্রডাকশন বলা যায়। তাদের পেজ, বাইন্ডিং, প্রিন্টিং, প্রচ্ছদ সব কিছুই দারুন ছিল। আমার সংগ্রহ করা ভূমির বেস্ট প্রডাকশনের একটা ছিল এই বই (এটা মিস্টবর্ন আসার এক বছর আগের রিভিউ, এখন অবশ্যই মিস্টবর্ন সেরা হবে)। আর সবথেকে যেটা ভালো লাগছে সেটা হলো দারুন প্রডাকশন হয়েও দাম ছিল নাগালের মধ্যে। এ জন্য ভূমিপ্রকাশকে ধন্যবাদ। এছাড়া দুই একটা টাইপিং মিস্টেক ছিল, কিছু কিছু বাক্যে বাড়তি শব্দ ঢুকে গিয়ে বাক্যের অর্থ চেঞ্জ করে ফেলছে। কিন্তু এগুলো ছোট ছোট ভুল হওয়ায় পড়ার গতিকে বা গল্পের মজায় কোন ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। আশাকরি পরবর্তী সংস্করণে এই ছোট খাটো ভুল গুলো ঠিক করে আরো নিখুঁত এবং অসাধারণ একটা বই দিবে ভূমিপ্রকাশ।
এখন অপেক্ষায় আছি লেজেন্ড সিরিজের পরবর্তী বইয়ের। আশাকরি খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবো সিরিজের দ্বিতীয় বই "প্রডিজি"। পাঠক, ভবিষ্যতের দুনিয়ায় আপনাদেরকে স্বাগতম।
সাবধানে থাকুন, বেশি বেশি বই পড়ুন❤️❤️ Be Careful, Be Safe❤️❤️ বই হোক সব সময়ের সঙ্গী ❤️❤️ Happy Reading ❤️❤️
Read More
Was this review helpful to you?
By Moniruzzaman,
16 May 2022
Verified Purchase
গল্পের পটভূমি দূর ভবিষ্যতের উপর নির্মিত। সমাজতান্ত্রিক আগ্রাসনে একটি স্টেট বিভক্ত হয়ে যায় দুটি গোষ্ঠীতে। সুবিধাসম্পন্ন সমৃদ্ধ গোষ্ঠীর নাম রিপাবলিকান। সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে নাম দেয়া হয় কলোনি। রিপাবলিকানরা এই সমাজের হর্তাকর্তা। যোগ্যতাসম্পন্ন ও জিনগতভাবে উন্নত নাগরিকরাই রিপাবলিকান হতে পারে। সেজন্য পার হতে হয় ট্রায়াল' নামে এক পরীক্ষা। পরীক্ষায় প্রাপ্ত নাম্বারের উপর নির্ভর করে ব্যক্তির নাগরিক সুবিধা। এবং অমানবিক নিয়ম ও শ্রেনী বৈষম্যে জন্ম নেয়ে অসোন্তষ। শুরু হয় বিদ্রোহ। কলোনিতে সৃষ্টি হয় বিদ্রোহী স্বরাজ দলের। রিপাবলিকান সরকার বিদ্রোহ দমনে বেশ কঠোর। জুন রিপাবলিকান আর্মির একজন অফিসার। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই ট্রায়ালের সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন ও নিজের দক্ষতায় সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পায় সে। অপরদিকে কলোনির বিদ্রোহী ছেলে ডি। যে কিনা পদে পদে রিপাবলিকানদের নিয়ম-নীতির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। তবে সে স্বরাজ দলে যোগ দেয়নি। নিজের পরিচয় গোপন রেখে একাই রিপাবলিকানদের অনেক ক্ষতি করেছে যার কারনে সরকারের কাছে সে একজন সন্ত্রাসী। ডে এর পরিচয় কেউ জানে না। ঘটনাক্রমে জুনের ভাই মেটিয়াসের মৃত্যুর ঘটনার সাথে জড়িয়ে যায় ডে। তাকে মেটিয়াসের হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ভাইয়ের হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে মরিয়া হয়ে ওঠে জুন। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই ডে র সাথে জুনের দেখা হয়ে যায়। ডে এর পরোপকারী ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয় জুন। তখনও জুন জানেনা সেইই ডে। যখন জানতে পারি তাকে গ্রেফতার করে সে। এরইমধ্যে জুন অনেক রহস্যের সম্মুখিন হয়। জানতে পারে পুরো স্টেট জুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার প্লেগ আসলে পরিকল্পিতভাবে ছড়াচ্ছে রিপাবলিকান। কলোনির মানুষদের পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য। এদিকে প্রমাণ পাওয়া গেল জুনের ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে দায়ী ডে নয় বরং তার সেনাবাহিনীর আরেক ক্যাপ্টেন টমাস। রিপাবলিকানদের ছলচাতুরি ও অমানবিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় জুন। বিদ্রোহী স্বরাজ দল এর সাহায্য নিয়ে বন্দী ডে কে নিয়ে পালিয়ে যায় ফায়ারিং স্কোয়াড থেকে। ম্যারি লু এর ডিসটোপিয়ান ট্রিলোজির প্রথম বই এই লেজেন্ড। বইটির কাহিনী অতি রোমাঞ্চকর। টিম ট্রান্সলেটেরের অনবদ্য অনুবাদ গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। অনুবাদক দ্বয়ের সাবলিল অনুবাদে গল্পের ধারা ম্লান হয়নি একটুও। গল্পটা শাসক ও শোষিতের। চক্রান্ত, রহস্য, বিদ্রোহ দিয়ে পূর্ন বইটি পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখবে নিশ্চিত। এই সিরিজের পরবর্তি বইগুলোর অপক্ষায় রইলাম। ব্যাক্তি গত রেটিং ৪/৫।
Read More
Was this review helpful to you?
By আসাদুজ্জামান জুয়েল,
21 Jul 2020
Verified Purchase
একসময়ের ওয়েস্টার্ন ইউনাইটেড ন্যাশন যা বর্তমানে রিপাবলিক , তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধরত বহু বছর ধরেই । রিপাবলিকের ধনী অঞ্চলের এক ধনী পরিবারের সন্তান পনেরাে বছরের ' জুন' । রিপাবলিকের প্রডিজি খ্যাত জুন অল্প বয়সেই মিলিটারিতে যােগ দেয় । অন্যদিকে রিপাবলিকের বস্তিতে বেড়ে ওঠা ডে , রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড়াে ক্রিমিনাল । দুটো ভিন্ন জগতের মানুষের দেখা হওয়ার কোনাে কথা ছিল না । কিন্তু জুনের ভাই ক্যাপ্টেন মেটিয়াসের হত্যার পর সন্দেহের সব তীর তাক হয় ডে’র ওপর । শুরু হয় দুজনের মধ্যে শত্রু শত্রু খেলা । একদিকে ডে তার পরিবারকে বাঁচানাের জন্য জান বাজি রেখে যুদ্ধ করে যাচ্ছে , আর ওদিকে জুন ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতিশােধ নিতে বদ্ধপরিকর । এই সাধারণ লড়াইয়ের মধ্যেই হঠাৎ এমন এক ঘটনা ঘটে , যা দুজনের সাক্ষাতের উদ্দেশ্যের মােড় সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দেয় । এমন এক ঘটনা যা রিপাবলিক লুকিয়ে রেখেছে বহুদিন ধরে । যে - কারণে রাষ্ট্রের সব মানুষকে বলি দিতেও তারা পিছপা হবে না ।
বইয়ের কাভার খুলতেই দেখতে পাবেন হাসিমুখে সুন্দরী লেখিকাকে 😐। এতেই আপনার মন থেকে বইয়ের কাহিনি নিয়ে সংশয় কেটে যাবে। ডিস্টোপিয়ান ঘরনার কাহিনীতে আমার বেশ আগ্রহ আছে। এতো বিশাল ঘরনার নাম দেখে আবার ভয় পাবেন না যেন! খুবই সহজ-সরল একটা কাহিনী। চিরায়ত ধনী গরীব কনসেপ্ট, শাসকগোষ্ঠীর সাথে সিভিলিয়ানদের বৈষম্য এবং অবশ্যই ব্যতিক্রমী কেউ একজন যে সিস্টেমের বিরুদ্ধে যেতে চায়। কিন্তু কেনো? গল্পের মূল চরিত্র দুইটি "ডে" এবং " জুন "। দুজনের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন দু'জনই নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে গল্প বলতে থাকে। একজন যখন নিজের পরিবারকে মরণঘাতী প্লেগ থেকে বাঁচাতে মরিয়া তখন আরেকজন মরিয়া নিজ ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে। হালকা ধাঁচের সায়েন্স ফিকশন যাদের পছন্দ তাদের জন্য চমৎকার একটি বই " লেজেন্ড "।
অনুবাদদ্বয় বেশ ভালো কাজ দেখিয়েছে। বোঝা যায় শেষের পালিশটা চমৎকার হয়েছে। ঝরঝরে অনুবাদে সদ্য প্রকাশিত বইটি বেশ সুখপাঠ্য।
বইয়ের ঘটনাক্রম ডিস্টোপিয়ান পৃথিবীতে, যেখানে ২০৫৪ সালে জন্মের পর থেকেই পূর্ব-পশ্চিম দু’ভাগে বিভক্ত রিপাবলিক অব আমেরিকার এবং কলোনিস অব আমেরিকার যুদ্ধ চলছে। রিপাবলিক অব আমেরিকা শাসন করেন ইলেক্টর প্রিমো। কয়েক দশক ধরেই শাসন ক্ষমতায় তিনি। ধনী এবং গরীবের বিরাট বৈষম্য সেখানে। দেশের প্রতিটি নাগরিককে ১০ বছর বয়সে বাধ্যতামূলক ‘ট্রায়াল’ নামক একটি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। তারা ভবিষ্যতে আর্মি এবং সরকারি কাজের জন্য উপযুক্ত কিনা সে জন্যই এ পরীক্ষা। যারা পরীক্ষায় ফেল করে, সবাই জানে, তাদের পাঠানো হয় লেবার ক্যাম্পে। কিন্তু, বাস্তবতা ভিন্ন। তাদের উপর জীবাণুঅস্ত্র বানানোর জন্য ভয়ানক পরীক্ষা চালানো হয়, এবং শেষে বাঁচিয়ে রাখা হয় না কাউকে। দশ বছর বয়সে ট্রায়ালে ফেল করেছিল ডে। পরীক্ষার পর মৃত্যুর হাত থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছিল। এরপর থেকেই তার বিভিন্ন বিদ্রোহী কর্মকান্ডের জন্য রিপাবলিকের কুখ্যাত অপরাধী সে। এদিকে রিপাবলিকে প্লেগের মতো ভয়াবহ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে আক্রান্ত হয় ডে’র ছোটো ভাই ইডেন। চুপিসারে হাসপাতাল থেকে ঔষধ চুরি করতে যায় ডে। কিন্তু, সেখানে রহস্যজনভাবে খুন হয় জুনের ভাই মেটিয়াস। ফেঁসে যায় ডে। জুনকেই নিযুক্ত করা তার ভাইয়ের খুনী ডে’কে খুঁজে বের করার কাজে। একই সাথে সে নিজ ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধও নিতে পারবে। এরপরের ঘটনা কি আরো বলবো? স্পয়লার হয়ে যাবে যে। ভালোবাসা, ষড়যন্ত্র, থ্রিলার, অ্যাডভেঞ্চার, ডিস্টোপিয়া, সাই-ফাইয়ের মিশ্রনে অনবদ্য কাহিনী ম্যারি লু’র এই ‘লেজেন্ড’।
Read More
Was this review helpful to you?
By Sazal Chowdhury,
18 Jul 2020
Verified Purchase
ইয়াং অ্যাডাল্ট ডিস্টোপিয়ান হিসেবে খারাপ না। ছোটো ছোটো অধ্যায়ে জুন আর ডে’র জবানিতে একেকটা অধ্যায় খারাপ লাগেনি। কিছুটা রহস্য, কিছুটা একশন, কিছুটা ড্রামা, কিছুটা বিশ্বাসঘাতকতা—সবমিলিয়ে একটা কমপ্লিট প্যাকেজ বলা যায়। সিরিজের প্রথম বই হওয়া সত্ত্বেও শেষ হয়েছে অনেকটা ক্লিফহ্যাঙার ছাড়াই। তাই প্রথম বই ধরলে পুরো সিরিজ পড়তে হবে এমন কোনো ভয় মনে না পুষে রাখলেও চলবে। অনুবাদ বেশ ভালো ছিল। আশা করি, পরবর্তী বই আরো জমবে।
Read More
Was this review helpful to you?
By হাসিবুল হাসান,
25 Jun 2020
Verified Purchase
মূল বইটা পড়েছি। চমৎকার একটা বই। অনুবাদ আসতেছে দেখে ভালো লাগলো। ডিস্টোপিয়ান সায়েন্স ফিকশন জনরার বইটার অনুবাদ আশা করি ভালো হবে। মূল বইয়ের রেটিং আমি ৪ দিবো ৫ এর মধ্যে।