['আমি যদি মুসলমান হই" বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ কুরআন-হাদিসে যত জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ইসলাম ব্যতীত অন্যকোনাে জীবনাদর্শ গৃহীত হবে না, ইসলামের গণ্ডিকে ডেঙানাের জন্য যেন ততই উদগ্রীব আর মুখিয়ে উঠেছি! অপর সমস্ত দীনধর্মের ওপর আধিপত্য নিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যে ইসলামের আগমন ঘটেছে, সেই ইসলামকে রক্ষা করার জন্য হাজারও মতবাদ, ধর্ম, জীবনাদর্শ, পথপন্থা তার ওপর চাপিয়ে দিয়েছি। যে ইসলাম অপর সকল মতাদর্শকে পরাস্ত করে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আজ সেই ইসলামকে অক্ষমতাবশতঃ তাদেরই আশ্রিত বানিয়েছি। দায়িত্ববােধমূলক নীতিবাক্য কুরআন-হাদিসে যত শুনেছি, শৈথিল্যের বন্ধন যেন ততটাই জোরালাে হয়েছে! অজ্ঞতা, কালের জরাজীর্ণ পূতিগন্ধময় মতাদর্শ এবং জাহেলিয়্যাতের যে অন্ধকার দূর করার জন্য ইসলাম আলাের মশাল হয়ে দ্যুতি ছড়িয়েছে, সেই অজ্ঞতায় পুরােপুরি নিমজ্জিত হয়ে, তাকেই বৈধতা দিতে ‘আধুনিক ইসলাম, মডার্ন মুসলিম' অভিধার উদ্ভব ঘটিয়েছি। বিশ্বের অপরাজনীতি সমূলে উৎপাটন করতে যে নীতিআদর্শের ছাচে গড়া ইসলামের আবির্ভাব, ধর্ম আর রাজনীতির বিবেধ তৈরি করে দিয়ে, প্রতিটি স্তরের জন্য বিধিবদ্ধ ইসলামকে মানবজীবন থেকেই কেটে ফেলেছি! ইসলাম প্রণেতা ও তার ধারকবাহকদের আদর্শে রাজনীতি করার সৎসাহস হারিয়ে, ভিন্নধর্মের রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদেরকে ইসলামে প্রবেশ করিয়েছি! মহান প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ বিজ্ঞাপন ছিল, প্রবৃত্তির তাড়নায় পীড়িত হয়ে তাকে পার্থিব প্রসাদ গ্রহণের থালা-ঠোঙা বানিয়ে নিয়েছি! স্রষ্টার ঘােষিত নির্বোধমস্তিষ্কের উদ্ভাবিত সংবিধানে যখন যেকোনাে প্রকার সংযােজন-বিয়ােজন, তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ সর্বোচ্চ দণ্ডনীয় অপরাধ, শাশ্বত বিধানকে তখন ননীর হাতের পুতুল সদৃশ্য। ব্যাখ্যা-বিকৃতির আবরণে নানারঙের স্বার্থ উদ্ধারের অপ্রতিরােধ্য প্রামাণ্য হাতিয়ার বানিয়ে।