বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবনী নিয়ে প্রতি বছর সারা পৃথিবী থেকে বিভিন্ন ভাষায় কমপক্ষে ১০০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়। ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম : আরবের আদি ইতিহাস ও ঐতিহ্যনির্ভর জীবনী’ বইটি সারা পৃথিবীতে তাঁকে নিয়ে যত বই প্রকাশিত হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম। মার্টিন লিঙ্স একজন খ্রিস্টান ছিলেন। এই বইটি লেখার পরপরই তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর মুসলিম নাম আবু বকর সিরাজ আল-দীন। তিনি অক্সফোর্ড ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ও আরবি সাহিত্যে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বারো বছর ধরে মিশরের কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ছিলেন। তিনি একজন ইসলামিক গবেষক, বিশ্ব ইসলামিক সংস্থার পরামর্শক এবং ‘দি আর্ট অব ইসলাম’ নামক প্রদর্শনীর জন্য আর্টস কাউন্সিল কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি সৌদি আরবের ‘কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়’-এর আমন্ত্রেণে মক্কায় অনুষ্ঠিত ‘ইসলামিক শিক্ষা’ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। এই বইটি ছাড়াও তিনি ‘কোরানিক আর্টস অব ক্যালিগ্রাফি অ্যান্ড ইলিউমিনেশন’ বইয়ের লেখক। ‘কমপ্যারেটিভ রিলিজিওন অ্যান্ড দ্য ইসলামিক কোয়ার্টারলি’ সাময়িকী এবং এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার ‘দি নিউ এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলামিক’-এর জন্য অসংখ্য অনুচ্ছেদ (নিবন্ধ) লিখেছেন। মুল ইংরেজি বই '‘Muhammad : His Life Based on the Earliest Sources'' রেফারেন্স বই হিসেবে সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। অসম্ভব প্রাঞ্জল ভাষায় বইটি অনুবাদ করেছেন ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া-এর দুজন প্রফেসর ড. মো. এমতাজ হোসেন এবং ড. মো. মনজুর রহমান। সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, গবেষক এমনকি Nonbeliever–দের জন্যও অবশ্য পাঠ্য একটি বই। বইটি একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করে উঠতে ইচ্ছে হবে না। বইটি একবার পড়ে দেখুন, আপনার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। আশা করি বইটি সবার কাছে সমাদৃত হবে।
Title
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম : আরবের আদি ইতিহাস ও ঐতিহ্যনির্ভর জীবনী
মার্টিন লিংগস (জানুয়ারী ২৪, ১৯০৯ - মে ১২, ২০০৫)। একজন নওমুসলিম। ইসলামি নাম আবু বক্কর সিরাজুদ্দিন। তিনি একজন পশ্চিমা লেখক, শিক্ষাবিদ ও ফ্রিটজফ শুয়ানের শিষ্য ও শেক্সপিয়র বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মোহাম্মদ: হিজ লাইফ বেইসড অন দ্যা আর্লিয়ার সোর্স (Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources) বইয়ের লেখক হিসাবেই সমধিক পরিচিত। বইটি ১৯৮৩ সালে প্রথম প্রকাশ পায় এবং অদ্যাবধি মুদ্রিত হয়ে চলেছে। বইটির জন্য পাকিস্তান ও মিশর সরকার থেকে পুরস্কার লাভ করেন। ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত সীরাত সম্মেলনে তার এ গ্রন্থটি ইংরেজিতে লিখিত নবীর শ্রেষ্ঠ জীবনী হিসাবে বিশেষ মর্যাদায় প্রশংসিত হয়েছে। তিনি ম্যানচেস্টারের বুরনেইজে একটি প্রোটেষ্ট্যান্ট পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন পর্যন্ত যথাক্রমে ক্লিফটন কলেজ, ম্যাগডালেন কলেজ এবং অক্সফোর্ডে পড়াশুনা করেন। তারপর লিখুয়্যানিয়ার ভিয়্যাউতাস ম্যাগনাস বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীন ইংরেজি ভাষা- এ্যাংলো এবং আধুনিক ও পুরাতনের মধ্যবর্তী ইংরেজি ভাষার রুপ মিড্যাল ইংলিশ (Middle English) অধ্যায়ন করেন। কায়রোতে এক যুগের অধিক সময় বসবাস কালে তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষার শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন এবং শেকসপিয়ার বিরচিত নাটকের বাৎসরিক পরিবেশনার আয়োজন করতে থাকেন। ১৯৪০ সালে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার একটি বইয়ের ভূমিকা লিখেছেন ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লস। মৃত্যুর কিয়দকাল পূর্বে এ বিষয়ে দেওয়া একটি সাক্ষৎকার তার মৃত্যুর পর ‘শেক্সপিয়ার্স স্পীরিচ্যুয়ালিটি: এ পারস্পেকটিভ, এ্যান ইন্টারভিউ উইথ মার্টিন লিংগস’ নামে চলচিত্রের রুপ লাভ করে।