আল্লাহর বান্দারা, একটি আশ্চর্যজনক আয়াত—যা দয়াময় আল্লাহ তাআলার রহমতের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়—সেই আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর মুমিন বান্দাদের লক্ষ্য করে বলেন : يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ ‘তিনি তাদের ভালোবাসেন এবং তারাও তাঁকে ভালোবাসে।’ (সুরা আল-মায়িদা : ৫৪)
. ইবনুল কাইয়িম রহ. বলেন, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, আমরা আল্লাহ তাআলাকে ভালোবাসি। কারণ ফকির ধনীকে এবং অসম্মানিত ব্যক্তি সম্মানিত ব্যক্তিকে ভালোবাসাটা স্বাভাবিক ব্যাপার। যে কারও প্রতি দয়া বা অনুগ্রহ করে, তার প্রতি মানসিক দুর্বলতা বা মনের আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, রাজা তার প্রজাকে ভালোবাসা, আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের ভালোবাসা এবং তাদের সব ধরনের নিয়ামত দিয়ে ভরপুর করে রাখা। মনে রাখবে, আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের মধ্যে নির্দিষ্ট কাউকে ভালোবাসাটা অনেক বড় একটি বিষয়। সেই বান্দার জন্য অনেক বড় শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপার এটি। যার মূল্য কেবল সেই ব্যক্তিই অনুধাবন করতে সক্ষম, যে ব্যক্তি মহান রব্বুল আলামিনকে ভালোভাবে তাঁর গুণাবলি সহকারে চিনে।
আল্লাহ তাআলা বান্দাকে ভালোবাসার একটি আলামত হলো, তাকে দুনিয়ার ভোগবিলাস থেকে হিফাজত করা। তার মাঝে এবং দুনিয়ার নিয়ামতরাজি ও প্রবৃত্তির মাঝে আড়াল সৃষ্টি করে রাখা। তাকে দুনিয়ার চাকচিক্য দ্বারা কলুষিত হওয়া থেকে রক্ষা করা, যাতে সেগুলোর দ্বারা বান্দার অন্তর অসুস্থ হয়ে না যায়। আবু সাইদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সা. বলেছেন : إِنَّ اللَّهَ لَيَحْمِي عَبْدَهُ الْمُؤْمِنَ مِنَ الدُّنْيَا، وَهُوَ يُحِبُّهُ كَمَا تَحْمُونَ مَرِيضَكُمْ مِنَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ تَخَافُونَهُ عَلَيْهِ ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর মুমিন বান্দাকে ভালোবেসে দুনিয়া থেকে হিফাজত করেন, যেমনিভাবে তোমরা তোমাদের অসুস্থ ব্যক্তির ব্যাপারে ভয় করায় তাকে খাবার ও পানীয় থেকে দূরে রাখো।’ (মুসনাদু আহমাদ : ২৩৬২২)
শাইখ খালিদ আর-রাশিদ—দাঈ। সৌদি আরবের পূর্ব-প্রদেশের শহর আল-খোবারে ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। মহল্লার মসজিদে হিফজুল কুরআনের হালকায় বসতেন। শৈশব থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল আকর্ষণ। তবে স্বপ্ন ছিল তিনি সামরিক অফিসার হবেন। ক্রিমিনোলজি নিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করার জন্য তিনি আমেরিকা চলে যান। পড়াশোনা শেষে তিনি নিজ দেশে ফিরে আসেন এবং ফুটবল খেলতে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। ১৪১২ হিজরির রমাজান মায়ের কথায় তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তিনি দীনি ইলম অর্জনে মনোনিবেশ করেন। এবং আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে গিয়ে প্রবল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ২০০৫ সালে ডেনমার্কের একটি পত্রিকা প্রিয় নবি সা.-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করলে তিনি প্রতিবাদী হন এবং গ্রেপ্তারি বরণ করেন।