"থিংক এন্ড গ্রো রিচ" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ লক্ষ্য অর্জনের উপায়, লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞার সাথে অবিচল থাকা এবং লক্ষ্য অর্জনে অন্যের মানসিক সমর্থন অর্জনের উপায়। পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে, হিল তার সময়ের ধনী এবং সবচেয়ে সফল ব্যবসায়ীদের সাথে। বিশ্বস্তভাবে কাজ করে ডকুমেন্ট এবং সহযােগিতা গ্রহন করেছিলেন। যার ফলে থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ প্রকাশিত হয়েছে। এই সংস্করণ এবং থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচের সমস্ত সংস্করণগুলি স্ক্র্যাচ থেকে শুরু হওয়া এই লােকদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে যাদের কাছে চিন্তা, আইডিয়া এবং সংঘবদ্ধ পরিকল্পনা ব্যতীত ধনসম্পদের বিনিময়ে দেওয়ার মতাে কিছুই ছিলাে। এখানে অর্থোপার্জনের দর্শন এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত অর্জন-তত্ত্বের সংক্ষিপ্তসার রয়েছে, ঠিক যেমন এটি আমাদের গঠনমূলক অর্থনৈতিক বছরগুলিতে আমেরিকার সর্বাধিক সফল পুরুষদের আসল অর্জনের লক্ষ্যগুলি থেকে সংগঠিত হয়েছে। এটি কী করবেন এবং এটি কীভাবে করবেন তাও বর্ণনা করে! থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচের এই বিশেষ সংস্করণের জন্য, নেপােলিয়ন হিল ফাউন্ডেশন চারটি গুরুত্বপূরণ সাফল্যের নীতিগুলিতে মনােনিবেশ করেছে : ইচ্ছা, কল্পনা, দৃঢ়তা এবং মাস্টার মাইন্ড এবং পাশাপাশি বইয়ের সমাপ্তি অধ্যায়ের ছয়টি সম্বােধনকারী ভয়ের ভূত। মনের শক্তি কীভাবে আপনাকে চিন্তাভাবনা এবং ধনী হতে সাহায্য করতে পারে এই বইতে তার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে!
আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করা অলিভার নেপোলিয়ন হিল আত্মোন্নয়নধর্মী রচনা লেখকদের মাঝে প্রথমদিককার একজন। ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও সফলতা লাভের বিভিন্ন দিক লেখনীতে তুলে এনে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল আত্মোন্নয়নমূলক লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হিলের। নেপোলিয়ন হিলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সাউথইস্ট ভার্জিনিয়ায় ২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ সালে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শেষ পর্যন্ত ল'স্কুলের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। এর আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সাথে, সেই ১৩ বছর বয়স থেকে। ১৯০৮ সালে এন্ড্রু কার্নেগীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে হিলের জীবনে আসে বিশাল পালাবদল। তখনকার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পপতি কার্নেগী তাকে পরামর্শ দেন ধনী ও সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে ও তাদের সাফল্যের সূত্র সম্পর্কে জানতে। এরপর তিনি বিশ্ববিখ্যাত সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন। এই তালিকায় আছেন হেনরি ফোর্ড, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলসহ আরো অনেকে। এমন ৪৫টি সাক্ষাৎকারের লব্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম রচনা 'দ্য ল অব সাকসেস'। এই বইয়ে তিনি সাফল্যের সূত্রকে ব্যখ্যা করেছেন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, পুঁজিবাদের সমন্বয়ে মূর্ত দর্শন দিয়ে। নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ সাফল্যগাঁথার চেয়ে সাফল্যের পেছনের সূত্র সহজীকরণের পাথেয় হিসেবে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিখ্যাত এই লেখকের চরিত্রের কিছু রহস্যময় বৈশিষ্ট্য মানুষকে ভাবিয়েছেও বটে। তিনি দাবি করতেন, আত্মাদের সাথে তাঁর যোগাযোগ আছে, তাঁকে দেয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান, সাফল্যের মন্ত্র। হিল এই বিষয়টি তাঁর ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বই 'গ্রো রিচ(!) উইথ পিস অব মাইন্ড' এ খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করেছেন। বর্তমানে তাঁর জীবনের অজানা কিছু অধ্যায় উঠে এসেছে গবেষকদের চোখে। তবে নেপোলিয়ন হিল এর বই সমগ্র বিতর্কিত ব্যক্তিজীবনের প্রভাবেও জনপ্রিয়তা হারায়নি। তাঁর রচিত 'থিংক এন্ড গ্রো রিচ' সর্বকালের সেরা আত্মোন্নয়নমূলক দশটি বই এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ হলো 'অ্যাটিটিউড মেন্টাল পজিটিভা', 'দ্য মাস্টার কি টু রিচেস', 'সাকসেস হ্যাবিটস' ইত্যাদি। বিতর্কিত চরিত্রের এই লেখক ১৯৭০ সালের ৮ নভেম্বর বেশ রহস্যজনকভাবে মারা যান। ধারণা করা হয়, তিনি পারকিনসন্স সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন।