পাহাড় ঘেরা একটি গ্রাম। গ্রামের নাম সাংলাই পাড়া। বান্দরবান জেলায়, রোয়াংছড়ি উপজেলাতে সাংলাই পাড়া অবস্থিত। ছবির মতো সুন্দর সাংলাই গ্রাম। রোয়াংছড়ি বাজার থেকে মাত্র আধঘণ্টা পায়ে হাঁটার পথ। সেই সাংলাই গ্রামে ২৯ তারিখ নভেম্বর মাস ১৯৮৬ সালে ইয়াংঙান ম্রোর জন্ম । তার পিতার নাম মাংকম ম্রো এবং মাতার নাম প্লংকম ম্রো। ইয়াংঙান ম্রো, সাত ভাই-বোনদের মধ্যে সবার ছোট। তার অন্য দুই ভাই লংঙি ম্রো আর ইচ্যং ম্রো । তার চার বোন- রিয়েন ম্রো, সংলেং ম্রো, লেংপাও ম্রো এবং রুইচুম ম্রো। ইয়াংঙানদের পরিবার ১৯৮৯ সালে সাংলি পাড়া থেকে বান্দরবান সদর উপজেলায়, বাইট্যাপাড়ায় চলে যান। পিতা মাংকম ম্রো তার ছোট ছেলে ইয়াংঙান ম্রোকে ১৯৯১ সালে ম্রো আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। ২০০৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করে রাঙ্গামাটি সরকারী কলেজে ভর্তি হন। পরে ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচ্যভাষা বিভাগে ভর্তি হন এবং ২০১২ সালে অনার্স এবং মাস্টার্স পাস করেন। ইয়াংঙান বাংলার পাশাপাশি নিজেদের ম্রো মাতৃভাষায়ও অনেক লেখালেখি করেছেন। সেসব লেখায় ম্রোদের জীবন-জীবিকা আর সুখ-দুঃখের কাহিনি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ইয়াংঙান ম্রো সমাজ আর সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করতে খুবই আগ্রহী। পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশে জীবন আর সমাজ বাস্তবতার এক অপূর্ব মিথস্ক্রিয়া উজ্জ্বল হয়ে ধরা দিয়েছে ‘জুম পাহাড়ের মানুষ’ উপন্যাসে। পাহাড়ের নৈসর্গিক দৃশ্যাবলী, লোকজ জীবন ও সংস্কৃতি, মানবিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন অত্যন্ত কাছ থেকে সেখানকার একজন সচেতন সদস্য হয়ে অবলোকন করেছেন লেখক। তার এই জীবনাভিজ্ঞান অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাবে প্রাঞ্জল ভাষায় তিনি তুলে ধরেছেন এখানে। দেশের অভ্যন্তরে বসবাসরত পাহাড়ী জনপদের জীবন-জীবিকা ও সাংস্কৃতিক আবহের এক অনবদ্য চিত্ররূপময়তা ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে।