সম্মানিত পাঠক, আমরা যারা মুসলিম সমাজে বেড়ে উঠেছি শিশুকাল থেকেই কাফির, মুশরিক ও মুনাফিক এ পরিভাষাগুলো শুনে থাকি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো, কাফির ও মুশরিকদের কিছুটা চিহ্নিত করতে পারলেও মুনাফিকদের ব্যাপারে আমরা একেবারেই বেখবর । অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আল-কুরআনুল কারিমের অসংখ্য জায়গায় মুনাফিকদের পরিচিতি ও গতিপ্রকৃতি তুলে ধরেছেন। সুরা আল-মুনাফিকুন নামে পূর্ণ একটা সুরা নাজিল করেছেন। রসুলল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ্য হাদিসে তাদের সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তবুও আমরা গাফিল সতর্ক হই না। বরং নিজেদের মাঝেই প্রকটিত হয় মুনাফিকদের অসংখ্য আলামত। বারবার দিতে হয় আমাদের গাফলতির খেসারত। প্রতিযুগে মুসলিম সমাজ কাফির-মুশরিকদের থেকে যতটুকু না ক্ষতিগ্রস্ত হয় এরচেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মুনাফিকদের কপটতায়। নিফাক নামক ঘুন পোকায় কুঁড়ে কুঁড়ে খায়, মুসলিম সমাজের মেরুদণ্ডকে। অসার করে দেয় এ সমাজের পুরো সত্তাকে। এ স্লো-পয়জনে আক্রান্ত হলে আর কোন নিস্তার থাকে না। ইমাম ইবনু কইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহ 'সিফাতুল মুনাফিকিন' নামক পুস্তিকায়। আল কুরআনুল কারিম ও সুন্নাহর আলোকে নিফাকি নির্ণয়ের সূত্রাবলি সুবিন্যস্তভাবে তুলে ধরেছেন। মাকতাবাতুশ শামেলায় প্রথম দেখা মাত্রই কিতাবটি এক শ্বাসে পড়ে ফেলি। বাংলাভাষী মুসলিমদের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সাথে সাথে অনুবাদ শুরু করি। সেই ২০১৮ ইং তে অনুবাদ সম্পন্ন করার পর এর বেশকিছু অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করি। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে বইটি পাঠক নন্দিত প্রকাশনি "আর রিহাব পাবলিকেশন্স থেকে 'মুনাফিক চেনার উপায়' নামে প্রকাশিত হচ্ছে। বাংলাভাষী মুসলিমদের দ্বীন চর্চায় যদি সামান্যতমও উপকারে আসে তাহলে আমরা এ প্রয়াসকে সার্থক জ্ঞান মনে করব। বইয়ের সার্বিক মানোন্নয়নে বোদ্ধা পাঠকের সুচিন্তিত মতামত সাদরে গৃহীত হবে। হে আল্লাহ, আপনি এ বইয়ের লেখক, পাঠক, অনুবাদক, সম্পাদক, প্রকাশক সকলকে উত্তম দান করুন। আমিন। ইতি