মানব-জীবনে সীরাত-চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে রাসূলুল্লাহ (স.) এর আদর্শের অনুসরণ-অনুকরণ প্রতিটি মুসলমানের জন্য অতীব জরুরী। এ কারণেই পবিত্র কুরআনের প্রায় চল্লিশেরও অধিক জায়গায় নবীজী (স.)এর আনুগত্যের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীতে যত জ্ঞান-বিজ্ঞান আবিষ্কার হয়েছে এবং আগামীতে হবে সকল কিছুর উৎস পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। আর এই কুরআন বুঝতে হলে সীরাত তথা মহানবী (স.) এর জীবনী পর্যালোচনার বিকল্প নেই। আম্মাজান হযরত আয়েশা ( রা.) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল রাসূলুল্লাহ স. এর সীরাত ও আখলাক সম্পর্কে। তিনি বলেছিলেন, “তাঁর আখলাক (সীরাত) ছিল আল-কুরআন।” অর্থাৎ কুরআনে কারীম হলো নবীজী স. এর জীবন-চরিতের সংরক্ষিত ও লিখিত নমুনা। এ ছাড়া মুমিনের যে কোন আমলের নিক্তি বা মাপযন্ত্র হবে সীরাত। অর্থাৎ যা কিছু এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, তা সত্য। আর যা সামঞ্জস্য রাখবে না, তা অসত্য। তাই সঠিক ও শুদ্ধরূপে আমলের ধারা চালু রাখতেও সীরাত পাঠের বিকল্প নেই। আমাদের বক্ষমাণ গ্রন্থটি ব্যাপক সাড়া জাগানো আরবি শামায়েল গ্রন্থ মিম্ মায়িনিশ্ শামায়িল’-এর সাবলিল ও সুখপাঠ্য অনুবাদ। এর লেখক ১৯৩৪ সালে দামেস্কের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দুমা নগরীতে জন্ম নেওয়া সালেহ আহমদ আশ-শামি। মোট দশটি অধ্যায়ে অত্যন্ত সুনিপুণ ও বিশ্বস্ত হাতে তুলে ধরেছেন নবি-চরিত্রের প্রায় সব কটা দিক। ইমাম তিরমিযি, ইমাম বাগাভি, ইবনে কাসিরের মতো বিশ্ববিখ্যাত রচয়িতাদের সিরাত বা শামায়েল গ্রন্থ গুলোও এতটা পূর্ণতা পায়নি। গ্রন্থটির গ্রহণযোগ্যতার আরেকটি দিক হলো, এতে বর্ণিত প্রায় সব কটা হাদিস সহিহ ও হাসান পর্যায়ের। কোথাও দুর্বল হাদিস উল্লেখ থাকলে সেটা চিহ্নিত। আমরা আশাবাদী, বইটি বাংলা ভাষাভাষীদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করবে। (ইনশাআল্লাহ)