শিশির বুঝতেই পারেনি যে, রেড ড্রাগন এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। রেড ড্রাগনকে ফাঁদে ফেলতে গিয়ে নিজেই আটকা পড়ে গেছে রেড ড্রাগনের ফাঁদে। এখন হাত-পা বেঁধে তাকে ফেলে রাখা হয়েছে গোপন এক কক্ষের মধ্যে। আসলে কক্ষ নয়, বড় একটা কোল্ডস্টোরে। এই স্টোরের মধ্যে শুধু ইলিশ মাছ আর ইলিশ মাছ। ইলিশ মাছ বড় পছন্দের রেড ড্রাগনের। এরই মধ্যে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। এভাবে তাপমাত্রা কমলে একসময় জমে যাবে তার শরীর। তারপর নিশ্চিত মৃত্যু। এমনই চাচ্ছে রেড ড্রাগন। মৃত্যুর পর কী হবে তা আর ভাবতে চাচ্ছে না শিশির। এখন একমাত্র ভরসা লেলিন। লেলিন চেষ্টা করছে তাকে উদ্ধার করতে। কিন্তু যখন দেখল লেলিনও আটক হয়েছে রেড ড্রাগনের হাতে তখন একেবারেই হতাশ হয়ে পড়ল সে। হাত-পা বাঁধা লেলিন তার সামনে এখন। শীতে সে নিজে যেমন কাঁপছে, একইভাবে কাঁপছে লেলিনও। মুক্তির কিংবা পালানোর কোনো সুযোগ নেই। বাইরে রেড ড্রাগন, সজাগ-সতর্ক। অপেক্ষা করছে তাদের মৃত্যু প্রহরের। এদিকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে আরও দ্রুত। মেঝেতে যে পানি ছিল তাও বরফে পরিণত হয়েছে। একটা হাত অবশ হয়ে আসছে। শক্তি পাচ্ছে না শরীরে, ঝাপসা হয়ে আসছে চোখ। বুঝতে পারছে মৃত্যু আসন্ন। শেষ পর্যন্ত কি নিজেদের মুক্ত করতে পেরেছিল শিশির আর লেলিন? নাকি নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছিল ভয়ঙ্কর রেড ড্রাগনের হাতে?
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।