ধুমঘাট স্টেশনে প্রথমবার দেখি মলিনার মলিন অবয়ব। তার সেই দেহ অবয়ব স্টেশনের ধূলিবালিতেও ঢাকা পড়ে না। মলিনার যৌবনদীপ্ত দেহসৌন্দর্য সবার চোখে না পড়লেও যার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিশক্তি রয়েছে তার ঠিকই চোখে পড়ে। তার মধ্যে আমিও একজন। যদিও সে স্টেশনের এক কোণে প্ল্যাটফর্মের ধূলিবালিতে সারাক্ষণ পড়ে থাকে। সব সময় অন্যমনস্ক হয়ে বসে থাকে। যদিও কারোর দিকে দৃষ্টি দেয়ার মতো তার কোনো অবকাশ নেই। প্রায় সময় তার দৃষ্টি থাকে অনেক দূরে। আপাতদৃষ্টে তার দৃষ্টি দেখে মনে হয় অলীক কোনো অদৃশ্য দৃশ্যে তার দৃষ্টি পড়ে আছে। সে অন্য কোনো অজানা ভাবনায় প্রায় সময় চিন্তামগ্ন থাকে। সে সহজে ফিরায় না তার দৃষ্টি কাছের কোনো দৃশ্যে। কেউ গায়ে পড়ে অহেতুক তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে সে তাকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে। তার নিষ্পলক দৃষ্টি যেন ওই লোককে গিলে খাবে এমন মনে হয়। যদিও সে মুখে কোনো কথা কখনো বলে না। কথা না বলার কারণ কেউ জানে না। আদৌ সে কথা বলতে পারে কি না তা-ও কেউ জানে না। তার অনীহার জায়গাটি কোথায় তা-ও কেউ খুঁজে পায় না। কেউ তা খোঁজার চেষ্টাও করে না। নিশ্চয়ই কথা না বলার গভীর কোনো রহস্য তার মধ্যে লুকিয়ে আছে। যার সন্ধান কেউ পায় না।