“স্মৃতি ও শ্রুতিতে মানিকগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধ" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ‘হিন্দু-মুসলমানের গুলবাগ এ বাংলা’-র ভাগ্য চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয় ৭১-র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। হাজার বছরের বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায় হল স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও প্রতিষ্ঠার ঘটনা। এ জনযুদ্ধের আঁকাড়া বাস্তবতার চিত্র উন্মোচনে সাক্ষ্য ও প্রতিবেদন সংগ্রহ করা প্রকৃত ইতিহাস বিনির্মাণের প্রতিষ্ঠিত মাধ্যম হিসেবে আজ বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। মাত্র ৪৭ বছর পূর্বে বাংলাদেশে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের অনেক ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ, তথ্য-উপাত্ত রহস্যজনকভাবে হারিয়ে গেছে। ক্ষমতার পালাবদলে এসব ঐতিহাসিক উপাদান সংগ্রহ ও সংরক্ষণের চেয়ে বরং বিকৃতি ও বিলােপসাধন করা হয়েছে। কিন্তু এসব করেও প্রকৃত ইতিহাসকে চাপা দেয়া বা ধ্বংস করা যায় না। কারণ ইতিহাস জীবন্ত, ইতিহাস তার নিজের সুরে কথা বলে। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের আকাইভ থেকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বহু গােপন দলিল প্রকাশ করে চলছে, তাতে করে ভবিষ্যতে ইতিহাসের রূপরূপান্তর, বাঁকবদল ও ভাঙ্গাগড়া অনিবার্য হয়ে ওঠেছে। কৃষক, শ্রমিক তথা প্রান্তজনবাসীর ভাষ্য থেকে তথ্য নিয়ে প্রকৃত ইতিহাস বের করে আনাই এ মৌখিক ইতিহাসের মূল উপজীব্য। আমি গ্রন্থ রচনার জন্য মানিকগঞ্জের ৪৫ জন বিশিষ্ট মুক্তিযােদ্ধার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। বিভিন্ন ব্যস্ততার মধ্যেও তাঁরা এ সুযােগ দেয়ায় আমি সবার কাছে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।