"অপারেশন তালপুকুর" বইয়ের ফ্ল্যাপে লিখা টুটুল সঁকোর পাড়ে এসে ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে তমাল গাছটার দিকে কিছু সময় তাকিয়েছিল। সারা গাছ ভর্তি ঝি ঝি পােকা। মিট মিট করে আলাে জ্বলছে। শুনছিল ঝি ঝি পােকার গুনগুন শব্দ। ছােট খাল। খুব বেশি পানিও নেই। কোন ভয়ও নেই। খুব স্বাভাবিকভাবে সাঁকোর উপর উঠে এক এক করে দড়িগুলাে কেটে দিল। তারপর খুব সাবধানে সাঁকোর এপারে এসে খেয়াল করল দূরে তীক্ষ্ম একটা টর্চের আলাে। এদিকেই আসছে। পেছন পেছন আরাে কয়েকটা টর্চ। টুটুল খুব দ্রুত ধানক্ষেতের মধ্যে হারিয়ে গেলাে। গুটি গুটি পায়ে যে পথে এসেছিল সে পথেই মতিন চাচার গােয়ালঘরে গিয়ে উঠলাে। সে রাতে আর কেউ ঘুমাতে পারেনি। গভীর রাতে মুহুর্মুহু গুলির শব্দে আকাশ বাতাস কেঁপে উঠলাে। মতিন চাচাদের বাড়ির বউ ঝি, ছেলেবুড়াে সবাই বাড়ি ছেড়ে পেছনের জংলাপুকুর পাড়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। পুকুরপাড় থেকে টুটুল তাকিয়ে দেখছে আকাশে আগুনের বৃষ্টি। যুদ্ধ কী তা টুটুল নিজের চোখে দেখছে। টুটুলের বাবা গড়াই দত্ত টুটুল আর শশীকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলছে ভগবান জানে, কী হচ্ছে। পুকুরের পাড় ঘেঁষে ঢালুতে সবাই মাথা নিচু করে শুয়ে আছে। কারও মুখে কোন কথা নেই।