“আত্নজা ও একটি করবী গাছ” বই এর ভূমিকা: লক্ষ করছি নানা কারণে আমার প্রায় সব গল্পেরই পাঠ বদলে যাচ্ছে। এজন্য আমার নিজের দায় অবশ্য কম নয়। মূল পাণ্ডুলিপির ক্রটির জন্য অধিকাংশ গল্পেরই প্রথম ছাপায় মুদ্ৰণ-প্ৰমাদ ও অন্যান্য ভ্ৰান্তির অন্ত ছিল না। পরে সেই সব গল্প বহুবার বহুভাবে পুনর্মুদ্রিত বা সঙ্কলিত হয়েছে। যাঁরা তা করেছেন, তাঁদের কেউ আমার অনুমতি নিয়েছেন, কেউ নেন নি। যাঁরা নিয়েছেন, তাদের জন্য আমি সবসময় সংশোধনের কাজ করে দিতে পারি নি। একই গল্পের ভিন্ন ভিন্ন সংশোধনও আমি অবস্থার চাপে করে ফেলেছি। নানা জায়গায় সঙ্কলিত একই গল্পের বিভিন্ন পাঠ সম্পর্কে আমি সচেতন হলাম বইটির বর্তমান সংস্করণের বেলায়। দেখা যাচ্ছে, সম্মতি না নিয়ে যাঁরা আমার গল্প পুনর্মুদ্রিত করেছেন, তাঁরা যেমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন, আমিও তেমনি করেছি। এই সংস্করণের অন্তর্ভুক্ত গল্পগুলির কিছু পরিমার্জন হয়েছে। গল্পগুলির বর্তমান পাঠই আমি চূড়ান্ত বলে বিবেচনা করি। ভবিষ্যতে কোনা কারণে যাঁরা এই গল্পগুলিকে ব্যবহার করবেন, তাদেরও তাই বিবেচনা করতে বলি। নতুন ষষ্ঠ সংস্করণের ভূমিকা আগের সংস্করণের মুদ্ৰণ-প্ৰমাদ এবং ছোটোখাটো ভুল-ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছে। কোনো পরিমার্জন হয় নি। এই নতুন সংস্করণ প্রকাশ করার জন্য সাহিত্য প্রকাশ-এর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
সাম্প্রতিক বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় একটি নাম হাসান আজিজুল হক। ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান জেলার যবগ্রামে তার জন্ম । নিজের গ্রাম থেকে স্কুলের পড়া সাঙ্গ করে ওপার-বাংলায় চলে যান। তিনি, দর্শনশাস্ত্রের পড়াশোনার পর অধ্যাপনা করেন সেখানকার কয়েকটি কলেজে। ১৯৭৩ সাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনের অধ্যাপক, এখন অবসরপ্রাপ্ত। অধ্যাপনার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘকাল অনেক গল্পের স্ৰষ্টা তিনি। গল্প অনেক লিখেছেন, কিন্তু, রহস্যময় কোনো কারণে, উপন্যাস-লেখায় বিশেষ আগ্ৰহ দেখান নি প্ৰতিভাবান এই কথাসাহিত্যিক । এ-বইটি প্ৰকাশিত হবার সঙ্গে সঙ্গে পাঠকসমাজের উৎসুক প্রতীক্ষার যেন অবসান হলো, আমাদের হাতে এসে পৌঁছল হাসান আজিজুল হকের হৃদয়স্পশী এই উপন্যাস : ’আগুনপাখি’ ।