রিয়াজ ফাহমী এর ‘নিভৃতে’ উপন্যাস এর সেই নামহীন প্রধান চরিত্রটির কথা মনে আছে? ঘটনাচক্রে তাঁকে মুখোমুখি হতে হয় আরেক নিভৃতে থাকা মানুষ আবীর চৌধুরীর সাথে। দুই নিঃসঙ্গ মানুষ, কিন্তু গল্প ভিন্ন। আবীর চৌধুরী, একজন নিঃসঙ্গ কলেজ প্রফেসর। হঠাৎ তাঁর কাছে অদ্ভুত ঠিকানাবিহীন এক চিঠি আসে। স্যার, বহুবছর আগে ক্লাসে একদিন গল্প শুনিয়েছিলেন। একটা ছোট গল্প। গল্পে একটা মেয়ে প্রতিরাতেই একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। তীব্র সেই কান্নার আওয়াজ। প্রথমে একটা বাচ্চার কান্না শোনা যায়। এরপর দুটো। তারপর তিনটা। একসময় অসংখ্য বাচ্চার কান্নার আওয়াজে মেয়েটার বদ্ধ উম্মাদের মতো অবস্থা হয়। স্যার গল্পটা কি এখন আপনার মনে পড়েছে? ঘন্টা পড়ে যাওয়াতে আপনি আর গল্পটা শেষ করতে পারেননি। আমি সেই গল্পের বাকি অংশ শুনতে চাই। ইতি হেনা। আবীর চৌধুরী গল্প শুনতে চাওয়ার কারণটা ধরতে পারলেন। অচেনা এই মেয়েটার জন্য অদ্ভুত এক কষ্ট বোধ করতে লাগলেন। বুঝে গেলেন জীবনে প্রতারিত হয়েও নিজের জন্য কোনো দু:খ নেই। সব দু:খ পৃথিবীর আলো দেখতে না পারা এক শিশুর জন্য। এই দুঃখ মাতৃত্বের দুঃখ। মাতৃত্বের সুখের চেয়ে মাতৃত্বের দুঃখ হয় প্রবল। খুবই প্রবল। এতটুকু পড়ে যারা আবীর চৌধুরীকে চেনার চেষ্টা করছেন, তাঁরা এ উপন্যাস পড়ে সত্যিই চমকে যাবেন।
জম্ম ২১ ডিসেম্বর, ১৯৭৯। ঢাকায় থাকি। একটি ব্রিটিশ কোম্পানিতে দক্ষিণ এশিয়া জোনের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছি। তবে সুযোগ পেলেই ডুবে যাই লেখালেখিতে। আমার প্রথম উপন্যাস ‘নিভৃতে’ প্রকাশিত হয় ২০২০ এর জুনে। এই বই কতজন পড়ল আমি সেই চিন্তা বাদ দিয়ে পনেরো দিন পর প্রকাশ করলাম মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা আমার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘বাবা’। এরপর ডিসেম্বরে প্রকাশ করলাম নিভৃতে সিরিজ এর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘নির্জন’। ২০২১ এ যাত্রা শুরু করি আমার সবচেয়ে প্রিয় উপন্যাস ‘একজন নির্জনতম’ দিয়ে। জীবনানন্দ দাশের জীবনীভিত্তিক এই উপন্যাসটি ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। আশা করি ভবিষ্যতেও জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে আরও লিখব। এই লেখক পরিচিতি যখন লিখছি তখন প্রকাশের অপেক্ষায় আছে ‘নারীরণ্য’। নিভৃতে সিরিজ এর তৃতীয় উপন্যাস এটি। আমার বেড়ে ওঠা বরিশাল ও ঢাকায়। শিক্ষাজীবন কেটেছে বরিশাল ক্যাডেট কলেজ ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক।