প্রেম ও পাপ উপন্যাসে মূলত আমাদের এই সমাজের চিত্র ভেসে উঠেছে। একা নামের সহজ সরল সুন্দরী মেধাবী মেয়েটি, যার পুরো পৃথিবীজুড়ে ছিল তার লেখাপড়া, বান্ধবী আর পরিবার। এর বাইরের জগৎ সম্পর্কে তার কোনো ধারণাও ছিল না। এই লোভী, স্বার্থপর দুনিয়ার কিছু মানুষ এর ভালোবাসা, কিছু মানুষের মমতা, বিপদে পাশে থাকা অজানা কোনো মানুষের নিঃসার্থ ভালোবাসা ও মমতার পরশ আর বিপদে দূরে সরে যাওয়া আপনজন...এগুলো সেই সহজ সরল একাকে অনেক বদলে দিয়েছে। অবাক হয়ে সে দেখেছে, মানুষ কীভাবে মানুষকে ঠকায়। ধোকা খাওয়ার যন্ত্রণা যেমন তার কোমল মনটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিয়েছে, অপরদিকে তীব্র প্রতিবাদী মেয়েটি তার ভালোবাসার মানুষটাকে নিজেই আইনের হাতে তুলে দিতে অনড় ছিল। প্রেম ভালোবাসার প্রতি চরম ঘৃণা আর নতুন কোনো সম্পর্কে না জড়ানোর দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মেয়েটা হঠাৎ বাধ্য হলো, একজনকে জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে নিতে, যে মানুষটার জীবনটা একা ছাড়া বৃথা, তার জীবনে, অন্তরে, অনুভূতি আর অনুভবে শুধুই একা; অথচ সে না বুঝেই মিথ্যে মরীচীকার পেছনে ছুটেছিল। অবশ্য সেই প্রতারণাটার বড়ই দরকার ছিল। জীবনে কষ্ট, দুঃখ প্রতারণা আর মানুষরুপী কিছু লোভী জানোয়াররা মানুষকে বদলে দেয় আর অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়।
শাহনাজ বেগম জন্মগ্রহণ করেন ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র সংসদ ভবনের অদূরবর্তী লালমাটিয়া এলাকায়। তাঁর পিতা ডাঃ মোহাঃ তাহির বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। মেডিসিন বিভাগে বাংলাদেশর খ্যাতিমান একজন সফল অধ্যাপক। তাঁর মাতা ফাতেমা বেগম একজন গৃহিণী। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে শাহনাজ বেগম সর্বকনিষ্ঠ। এই মেধাবী ছাত্রী ও মননশীল লেখক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজ থেকে। অতঃপর ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে। এরপর আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেন। তাঁর লেখার বৈশিষ্ট্য এই যে, চারপাশে যা দেখেন তার মধ্য থেকেই গল্পের রসদ সংগ্রহ করেন। এই কারণে তাঁর গল্পের স্বাদ ভিন্ন, গল্প অপূর্ব এবং পরিবেশায় মমতার ছাপ বিদ্যমান।