স্বাধীন গণমাধ্যম বনাম ‘দায়িত্বশীল’ গণমাধ্যম, কোনটি বেশি আকাঙ্খিত ? গণমাধ্যম জগতে এ বিতর্ক বহু পুরোনো। স্বাধীন গণমাধ্যমেরই দায়িত্বশীল হওয়ার কথা। তাহলে স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম, দুটি ভিন্ন ধারণার জন্ম হলো কেন ? স্বাধীন গণমাধ্যমের ধারণা যেখানে ব্যর্থ, সেখানেই জন্ম হয় দায়িত্বশীল গণমাধ্যম ধারণার। গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ ফ্রেডরিক এস সিবার্ট, থিওডর পিটারসন ও উইলবার শ্র্যাম তাদের ‘ফোর থিওরিস অব প্রেস’ বইতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত চার ধরনের গণমাধ্যমের কথা তুলে ধরেছেন। এগুলো হলো―কর্তৃত্ববাদী প্রেস, কমিউনিস্ট প্রেস, লিবার্টিরিয়ান প্রেস এবং সোশ্যালি রেসপনসিবল প্রেস। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকলেই গণমাধ্যম চর্চার সব জনস্বার্থ-সংশ্নিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিল হয় এমন ভাবনা এবং বিশ্বাস সর্বক্ষেত্রে প্রমাণিত নয়। ১৯৭১ সালের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নব্য স্বাধীন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চর্চার অবাধ সুযোগ দিয়েছিলেন। এই সুযোগ বেশ নেতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়েছিল তৎকালীন সংবাদপত্রগুলো। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে গণমাধ্যমের যে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার কথা ছিল, সেটা তখনকার সংবাদপত্রগুলো রাখতে পারেনি; বলা যায় বিশেষ উদ্দেশ্য সামনে রেখে রাষ্ট্রের আকাঙ্খিত ভূমিকা তারা পালন করেনি।