বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপান ভ্রমণ, জাপান সরকারের সাথে হ্নদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক, জাপানি পরামর্শকদের বাংলাদেশে আগমন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুর্ণগঠনে আর্থিক ও কারিগরী সহযোগিতা বাংলাদেশকে এক নতুন অধ্যায়ের দিকে ধাবিত করে। জাপানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন খুবই পরিচিত এবং শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই জাপানিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আবিস্কার করেন একজন মহান নেতা হিসেবে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর পর একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনুসন্ধিৎসু চোখ নিয়ে দৃষ্টিপাত করেননি, মহান নেতার আসনে বরন করে নেন তাঁরা। অপরপক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও জাপানের ইতিহাসের সাথে পরিচিত ছিলেন। তাঁর বক্তৃতায় একথা অনেকবার উঠে এসেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভগ্নস্তূপ থেকে গড়ে ওঠা জাপানকে তিনি কল্পনায় বাংলাদেশকে ওই স্থানে দেখতে চেয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে জাপান ভ্রমণ এবং দেশটির নেতৃত্বাধীন সরকারের সাথে যোগাযোগ বাংলাদেশ পুর্ণগঠনে জাপানি সহযোগিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ করে তুলেছিল। কালের স্রোতে বঙ্গবন্ধুর দেখা জাপান, বন্ধুত্বের উষ্ণ আলিঙ্গন, বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের শুরুর দিকটাই বা কেমন ছিল- এগুলো নিয়ে ভাবা দরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীতে নানান বিষয়ে প্রকাশনার অবতারণা প্রেক্ষিত বিষয়টি সেই চমৎকার সুযোগ আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে। বইটিতে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে জাপানের ঘনিষ্ঠতা, বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানান মাত্রিকতা উঠে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
প্রফেসর ড. মাে. আনােয়ারুল ইসলাম পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার সােনাতলা গ্রামে ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি মাসে অনুগ্রহণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ হতে স্নাতক সম্মান, স্নাতকোত্তর এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ থেকে এম ফিল ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৭ সালে ভারত সরকারের লারশিপ নিয়ে দার্জিলিংয়ের উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঔপনিবেশিক শাসনামলের শিক্ষার ওপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৮ সালে তিনি ঢাকা মিরপুর সেনানিবাসের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি) থেকে ক্যাপস্টোন কোর্স সমাপ্ত করেছেন। ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যােগ দেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সংঙ্গে যুক্ত থেকে পর্যায়ক্রমে বিভাগের সভাপতি, হলের প্রভােস্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের প্রশাসক পদে কাজ করেছেন। ২০১৬-২০২০ সাল পর্যন্ত পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাে-ভাইস চ্যান্সেলর পদে নিয়ােজিত ছিলেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলাের মধ্যে বাংলার সংবাদপত্রের ইতিহাস (২০০৯), সংবাদপত্র ও বাংলাদেশের অভ্যুদয় (২০১৩), আমাদের বঙ্গবন্ধু (২০১৮), পাবনায় বঙ্গবন্ধু (২০২০), বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক (২০১১) উল্লেখযােগ্য।