সমাজের সর্বত্র সকল পেশার মুসলিমই তার প্রাত্যহিক জীবনের দিন, সপ্তাহ, মাস, বছর, যুগ শেষ করে কেউ কেউ ৭০-৮০ বছর এমনকি ১০০ বছরকাল অতিক্রান্ত করছে। তিনি যদি জানতেন যে, দৈনন্দিন ফরয কার্যাবলি সম্পন্ন হওয়ার পরও একজন মুসলিমকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী আরও কিছু নফল কার্যাবলি সম্পন্ন করলে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভ সম্ভব, তাহলে আমার বিশ্বাস গোটা মুসলিম উম্মাহর আমালিয়াত যিন্দেগী আরো সুন্দর ও গুছানো হতো। এই বইয়ের প্রত্যেকটি দু‘আ ও যিক্র রাসূলুল্লাহ’র শেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী সাজানো হয়েছে। একই সাথে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন্ দু‘আ কখন, কাকে, কেন শিখিয়েছেন তা স্পষ্ট করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট হাদীসও পেশ করা হয়েছে। অনেকে বলেছেন, বইটিতে কুরআন-হাদীসের দু‘আ-যিকির-এর বাংলা উচ্চারণ যুক্ত করতে, কিন্তু এর দ্বারা আরবী বেশ কিছু হরফের উচ্চারণ বিকৃত হওয়ার আশঙ্কায় তা দিতে পারিনি। সত্যি বলতে, দুনিয়ার প্রয়োজনে আমরা কত কিছুই তো শিখি। আখিরাতের অনন্ত জীবনের সাফল্য লাভের আগ্রহ নিয়ে কেউ চেষ্টা করলে এতটুকু আরবী শেখা খুব বেশি সময়ের ব্যাপার নয়। উলামা-মাশায়েখ বা গবেষকদের সুবিধার জন্য যথাসম্ভব রেফারেন্স প্রদান করা হয়েছে। বইটি দিন-রাত্রির সময়ের ব্যাপ্তি অনুযায়ী দৈনন্দিন জীবনে ‘আমল ও যিক্র, আরবী মাসসমূহের ক্রমান্বয়ে দিবসসমূহের ‘আমল এবং দৈনন্দিন জীবনে ইসলামী হুকুম-আহকাম ও পারস্পরিক নানামুখী সম্পর্কের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করা হয়েছে।
ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। ১৯৭৬ সালের ১ নভেম্বর, সোমবার ফেনী জেলার ইজ্জতপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম, মো: ছাদেক বিন সেকান্দার এবং মাতার নাম, হোসনেয়ারা বেগম মুক্তা বিনতে আব্দুল খালেক। ইজ্জতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে স্থানীয় দাইয়াবিবি আজিমিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেন। পরবর্তীতে উচ্চতর পড়াশুনার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আগমন করেন এবং কৃতিত্বের সাথে আলিম, ফাযিল ও কামিল পাস করেন। ২০০২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) ও ২০০৩ সালে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পারিবারিক দীনী-ইল্মি পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন এই লেখক। আনুষ্ঠানিক একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি আত্মনিয়োগ করেন লেখা-লেখিতে। গড়ে তোলেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, পাঠাগার। পেশাগত জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও তিনি একজন লেখক, গবেষক, সমাজে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া-লেখার বৃত্তি প্রদান, সামাজিক, শিক্ষা-সাংস্কৃতিক ও ব্যবসার উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন। লেখক দীর্ঘ প্রায় দু’যুগ ধরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, স্মারক, স্মরণিকায় নিয়মিত লেখা ও সম্পাদনা করে আসছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত বই হলো, ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি, ইসলাম বনাম পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, তাকওয়া মু’মিন জীবনের ভূষণ, ইসলামী আন্দোলন: শরয়ী মর্যাদা, ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি এবং তার পিএইচ-ডি থিসিস ‘মাওলানা মমতাজ উদ্দীন আহ্মাদের আরবি ও বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চা’ পা-ুলিপি প্রকাশের অপেক্ষায়। তিনি শিক্ষা ও ব্যবসায়িক কাজে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ আইকাব-২০০৯, এইচ.বি.আর.আই-২০১২, রিহ্যাব-২০১৪, ওআই.সি-এসি.এফ-২০১৭, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী স্মৃতি সম্মাননা-২০১৭ এর পদক ও সম্মাননা পত্রে ভূষিত হন। তার সহধর্মিণীর নাম নাহিদ আঞ্জুম নাবিলা। তিনি তিন সন্তানের জনক।