রামাদান মাস আমাদের জন্য এক বিশেষ নেয়ামত। জীবন বদলের মাস হিসেবে রামাদান মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআনকে হৃদয়ঙ্গম করণে রামাদান আমাদের নিকট মহান অতিথি। একে যথাযথ উদযাপনেই আমাদের সফলতা। রামাদানকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আল্লাহ ফরজ করেছেন। তাকওয়ার গুণে সমৃদ্ধ হতে রামাদান একটি কার্যকর ইবাদাত। প্রতি বছর রামাদান পালন করে যাচ্ছি, কিন্তু রামাদানের উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারছি না। রামাদানকে অনেকটা আমরা কিছু অনুষ্ঠান সর্বস্ব ধর্মীয় কাজ হিসেবে উদযাপন করে যাচ্ছি। রামাদানের আগমনে আমরা সাময়িক কুরআনের কাছে থাকি, মাসজিদে প্রবেশ করি। চোখের পলকে ৩০টি দিন ইফতার-সাহরীতে, ভোজন-বিলাসিতায়, রান্নাঘরে, সুরমা আতর মাখামাখি, কেনাকাটা আর নিত্য দিনের ব্যস্ততায় কেটে যায়। কিন্তু রামাদান মুসলিম উম্মাহর জন্য কী বার্তা নিয়ে আসলো, কী-ই-বা বার্তা দিয়ে গেল? তা আমরা উপলব্ধির জায়গায় নিতে পারছি না। ফলতঃ রামাদান পরবর্তী আমি, আমার পরিবার ও সমাজটি সেই পূর্বের জায়গায় থেকে যায়। অথচ, উম্মাহর এরূপ শোচনীয় অবস্থার ব্যাপারে আপসোস করে বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, “আপসোস তার জন্য যে তাঁর জীবনে রামাদান পেল কিন্তু তাঁর গুনাহ মাফ করে নিতে পারল না।” এ মাসের এবং সিয়ামের গুরুত্ব সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে নবী বলেছেন, “রামাদান মাস একটি বরকতময় মাস, এ মাসে আল্লাহ তোমাদের ওপর রোযা ফরয করেছেন।” “সিয়াম ও কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।” “যে ব্যক্তি পূর্ণ ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রামাদানের রোযা রাখে, তার পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।” হাদীসে কুদসীতে এসেছে, “আল্লাহ বলেন, সিয়াম আমার জন্য এবং আমি এর পুরস্কার দিব।”
ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। ১৯৭৬ সালের ১ নভেম্বর, সোমবার ফেনী জেলার ইজ্জতপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম, মো: ছাদেক বিন সেকান্দার এবং মাতার নাম, হোসনেয়ারা বেগম মুক্তা বিনতে আব্দুল খালেক। ইজ্জতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে স্থানীয় দাইয়াবিবি আজিমিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেন। পরবর্তীতে উচ্চতর পড়াশুনার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আগমন করেন এবং কৃতিত্বের সাথে আলিম, ফাযিল ও কামিল পাস করেন। ২০০২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) ও ২০০৩ সালে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পারিবারিক দীনী-ইল্মি পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন এই লেখক। আনুষ্ঠানিক একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি আত্মনিয়োগ করেন লেখা-লেখিতে। গড়ে তোলেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, পাঠাগার। পেশাগত জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও তিনি একজন লেখক, গবেষক, সমাজে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া-লেখার বৃত্তি প্রদান, সামাজিক, শিক্ষা-সাংস্কৃতিক ও ব্যবসার উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন। লেখক দীর্ঘ প্রায় দু’যুগ ধরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, স্মারক, স্মরণিকায় নিয়মিত লেখা ও সম্পাদনা করে আসছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত বই হলো, ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি, ইসলাম বনাম পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, তাকওয়া মু’মিন জীবনের ভূষণ, ইসলামী আন্দোলন: শরয়ী মর্যাদা, ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি এবং তার পিএইচ-ডি থিসিস ‘মাওলানা মমতাজ উদ্দীন আহ্মাদের আরবি ও বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চা’ পা-ুলিপি প্রকাশের অপেক্ষায়। তিনি শিক্ষা ও ব্যবসায়িক কাজে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ আইকাব-২০০৯, এইচ.বি.আর.আই-২০১২, রিহ্যাব-২০১৪, ওআই.সি-এসি.এফ-২০১৭, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী স্মৃতি সম্মাননা-২০১৭ এর পদক ও সম্মাননা পত্রে ভূষিত হন। তার সহধর্মিণীর নাম নাহিদ আঞ্জুম নাবিলা। তিনি তিন সন্তানের জনক।