“শকুনি উবাচ" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ কার কুটিলতায় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল? এমন প্রশ্ন উঠলে মহাভারত সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান রাখা ব্যক্তিও নির্দ্বিধায় একটি নাম উচ্চারণ করবেন— শকুনি। আমাদের অন্যতম জনপ্রিয় দুটি বাগধারা কংস মামা আর শকুনি মামা'। কংসের পরিচয় সবিস্তারে না জানলেও শকুনি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি যে এই লােকটি পাশা খেলে দ্রৌপদীকে অপমানের দরুন এক সময় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ হয়েছিল। | কিন্তু এই সাধারণ জ্ঞান’-এর বাইরে মহাভারতের মহারণ্যে শকুনিকে খুঁজতে গেলে অনেক বাধাবিপত্তি বেরিয়ে তার কাছে পৌঁছতে হয়। কেননা, প্রথমত, ব্যাসদেব একটা অসাধারণ খল চরিত্র সৃষ্টি করলেন বটে কিন্তু তার সম্পর্কে মহাকাব্যে তেমন কিছুই আমাদের জানিয়ে যাননি। দ্বিতীয়ত, যেটুকু জানিয়েছেন, আমাদের প্রচলিত ভার্সনে আমরা শকুনিকে ব্যাসদেবের অঙ্কন অনুসারে পাই না। বাজার অর্থনীতির যুগে শকুনি চরিত্রটি সিনেমার ‘ভিলেন’রূপে আমাদের কাছে পরিচিত। মহাভারতের শকুনির প্রতিটি কাজের পেছনে রয়েছে কিছু কারণ। আমরা শকুনির কুটিলতা সম্পর্কে জানি কিন্তু শকুনির শকুনি’ হয়ে ওঠার গল্পটা জানা হয়নি। আমি সেই শকুনির খোঁজ করেছি যিনি ধর্ম অর্থাৎ কর্তব্যের উপরে বুদ্ধিকে, পরিকল্পনাকে স্থান দেন। এমন একটি মানুষকে সন্ধান করার চেষ্টা করেছি যে মূলত তার সময় থেকে অনেক এগিয়ে ছিলেন। অর্থাৎ, আধুনিক মূলত ব্যাসদেব যে চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন তিনি নিজে সে চরিত্রের পূর্ণতা দেননি। হতে পারে সৃষ্টিশীল মানুষের খামখেয়ালি স্বভাবের স্বীকার হয়েছিলেন শকুনি। অথবা এমন হওয়া সম্ভব, ব্যাসদেব আসলে শকুনিকে একটা সাইড ক্যারেক্টার হিসেবেই নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে মহাভারত যখন ‘কাহিনি' হয়ে গেল তখন শকুনি হলেন এর খলনায়ক আর হাজার হাজার বছর পরে তাকে খল চরিত্র করে সহজেই চালু সিনেমা তৈরি করা গেল। শকুনিকে খল চরিত্র করেই জটিল মহাভারত হয়ে গেল সহজ। কিন্তু সেখানেও শকুনিকে ‘গথাম সিটি’র ‘জোকার’-এর মতাে জটিল চরিত্র তৈরি করে প্রায় সবাই তাকে বলিউডি ভিলেন’ করেই রেখে দিলেন।
জন্ম ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে, কীর্তনখোলা নদীর তীরে, বরিশাল শহরে। নদীর অন্য পাড়ে দিনার গ্রামে পিতৃপুরুষের ভিটা। সেখানেই শৈশবের কিছু অংশ কেটেছিল। অতঃপর ছয় বছর বয়সে পিতামাতার হাত ধরে রাজধানীতে আগমন। শিক্ষাজীবন শুরু মায়ের কাছে। এরপর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে, স্কুল জীবনের দশ বছর কাটিয়ে বর্তমানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’-এ অধ্যয়নরত। লেখালেখির সূচনা ভালোলাগা থেকে। ইচ্ছে ছিল দু’ একটা গল্প লেখার। লিখতে লিখতে একটা উপন্যাসও হয়ত কখনও দাঁড়িয়ে যাবে, এ আশাও ছিল। কিন্তু কেমন করে যেন গল্প থেকে ইতিহাসের পথে চলা শুরু। হয়ত ইতিহাসের ভেতরে অনেক গল্প থাকে বলেই এ যাত্রায় এতো আগ্রহ। ইতিহাস থেকে এখন ছোটগল্প, উপন্যাস, সমালোচনা; লেখালেখি চলছেন। লিখেছেন বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে, জাতীয় দৈনিকে। সবকিছু সঙ্গে করে অনেকদিন লিখে যাওয়ার ইচ্ছা।