ঘোলাটে মেঘের বিকালটা মরে সন্ধ্যার আঁধার জমেছে। আঁধারের ফাঁক গলে ভিজে যাচ্ছে রূপের নগরী পানতুমাই। পাহাড়ের গা বেঁয়ে শুভ্র জলরাশি দেখে মনে হচ্ছে যেন বিছিয়ে রাখা হয়েছে সাদা শাড়ি৷ আর সেই সাদা শাড়ির পাড়ের নিঁখুত নকশা হরিদ্বর্ণ সুতার তৈরি। কখনো দু'এক পশলা বৃষ্টি, আবার মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া। নদীর পাড়ের খোলা প্রান্তর জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সেই অশান্ত হাওয়া। চঞ্চল মন আনমনা হয়ে উঠেছে খেয়ামের। পিয়াইন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে মুগ্ধ নয়নে ঝর্ণার অপরূপ সুধা নিতে সে মত্ত। এত সুন্দর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তার আগে কখনো দেখা হয়নি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ছাতার নিচ থেকে বেরিয়ে পড়েছে সে। গোলগাল স্নিগ্ধ মুখখানায় বিন্দু বিন্দু জলে সিক্ত তার। হাওয়ার তোড়ে মাথা থেকে ওড়ানার আঁচল পড়ে আলগা খোঁপা হঠাৎ খুলে গেল। এ সুযোগে তার ওই দীর্ঘ, রেশম কালো চুলগুলো মুক্ত হয়ে উড়তে থাকল অবাধ্য ভঙ্গিতে। এমন ঐন্দ্রজালিক ক্ষণে বিধাতার নিখুঁত সৃষ্টি অতি কাছ থেকে দেখে অভিভূত এক জোড়া চোখ। আসন্ন শ্রাবণ ধারার সিক্ত হাওয়ার স্পর্শ আর সম্মুখের জলের মিতালি থেকেও আরও সুন্দর বিন্দু বিন্দু জলে ভেজা ওই সাধারণ মুখটি। সবচেয়ে চমৎকার মুখটার হাসি। এ যেন ধ্রুত সত্য, এক অপার্থিব, নৈসর্গিক সৌন্দর্য তার মাঝে। বর্ষার পর এভাবে কখনো কোনো সৌন্দর্যকে মনে লাগেনি মেহফুজের। ইলশেগুঁড়ির সাঁঝক আকাশ তলে দাঁড়িয়ে সে আজ সহস্রবার স্বীকার করতে প্রস্তুত, 'সে শ্রাবণো মনোহারিণী! ঐশ্বর্যময় শ্রাবণের অদ্বিতীয়া রানি!'
ইসরাত জাহান দ্যুতির লেখালেখির সময়টা খু্ব দীর্ঘদিনের না হলেও তবে এই লেখালেখির সঙ্গে স্বল্প দিনেই তার সম্পর্ক অনেকটা গড়ে উঠেছে আত্মিক সম্পর্কের মতো। ২০২০ এর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার প্রথম উপন্যাস 'প্রভাতকিরণ' প্রকাশ পায়। এরপর পাঠকদের মনে স্থান পেয়ে যান তিনি এই উপন্যাসের দ্বারাই৷ ফাইন্যান্স বিভাগে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি লেখক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছেন প্রতিনিয়ত। ব্যক্তিগত জীবনের সুখ সমৃদ্ধির বাইরেও তিনি সুখ আর আনন্দ খুঁজে পান তার লেখা শব্দগুলোর মাঝে। শব্দগুলো থেকে একেকটা বাক্য তৈরি করে কয়েকটি কাল্পনিক চরিত্রের জীবনপ্রবাহের রূপ সৃষ্টিতেই তিনি পরিতৃপ্তি বোধ করেন।