মুজিব শতবর্ষ—২০২০ এ রচিত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ আবদুল মালেক এর কবিতার বই ‘শব্দসম্ভার’ প্রিয় পাঠকের জন্য এক চমৎকার উপহার। বই এ ৫০টি কবিতাই অত্যন্ত সুন্দর ও মর্মস্পর্শী। শব্দ ও ছন্দে অলংকৃত। আধুনিকতার দুর্ভেদ্য ও কঠিন শব্দ পরিহার করা হয়েছে। পাঠককে আকৃষ্ট করতে এ রকম কবিতার তুলনা হয় না। যেমন শব্দের বাগান কবিতায় কবি লিখেছেন ‘অভিধানের ঔরসে/শব্দরা আছে রঙ্গে রসে।’ ‘ভালোই সুন্দর’ কবিতায় লিখেছেনÑ ‘মন্দকে কখনো দিতে নেই প্রশ্রয়/প্রশ্রয় দিলে ভালো লজ্জিত হয়।’ ‘কবিরা যুগে যুগে শ্রেষ্ঠ সবার’ কবিতায় লিখেছেন, ‘মহৎ প্রাণ কবিদের যেখানেই পদার্পন/সেখানেই রেখে যাচ্ছেন তাঁরা অমূল্য ধন! ‘মন ও মননে খাঁটি’ কবিতায় লিখেছেন, ‘মানুষ মাপার মাপকাঠি/মন ও মননে যিনি খাঁটি’! ‘হৃদয় মন চোখ’ কবিতায় লিখেছেন, ‘হৃদয় মন, চোখ/ভালোবাসার সুখ’। ‘আমার অনুসন্ধিৎসু কবিমন’ কবিতায় কবি লিখেছেন, ‘আমার অনুসন্ধিৎসু, অনাড়ম্বর কবিমন/কলমের আচঁড়ে সৃষ্টি করছে কবিতার ভুবন!’ ‘শব্দ সম্ভার’ কবিতায় কবি লিখেছেন, ‘প্রতিটি লিখায় শুধু, শব্দেরই কারুকাজ/লেখা শেষে এটি ধারণ করে অভূতপূর্ব সাজ! ‘অফুরন্ত ধন, অফুরন্ত শব্দ’, কবিতায় কবি বলেছেন, ‘কবিরা মহান, কবিতা মানুষকে/মহান করে তুলে/কবি পৃথিবীটাকে ভরে দিতে চায়/কবিতার ফুলে ফুলে!
সৈয়দ আবদুল মালেক একজন নিভৃতচারী ও প্রচারবিমুখ লেখক। সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তাঁর বিচরণ। সব্যসাচী লেখক বলতে যা বুঝায়, সৈয়দ আবদুল মালেক তাই। তিনি তাঁর শৈশব থেকেই কবিতার ভুবনে বিরচণ করে আসছেন। ক্লাস থ্রি-তে পড়তেই “আকাশের তারা” নামে তাঁর প্রথম কবিতা দিয়ে সাহিত্যের রহস্যময় ভুবনে যাত্রা শুরু করে বিরামহীনভাবে লিখে চলেছেন সাহিত্যের সব শাখায়। তাঁর প্রথম পছন্দ কবিতা। কবিতার পাশাপাশি লিখে চলেছেন ছড়া, গান, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ প্রভৃতি শাখায়। এছাড়া তিনি পত্রিকায় নিয়মিত কলামও লিখে চলেছেন। ইতিমধ্যে তিনি কয়েক হাজার কবিতা, ছড়া ও গান লিখে সাহিত্যের ভাÐারকে সমৃদ্ধ করেছেন। লিখেছেন প্রচুর কিন্তু একেবারেই প্রচারবিমুখ। অত্যাবশ্যকীয় জরুরি সার্ভিসের আওতায় এক্সিকিউটিভ ব্যাংক কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োজিত থাকায় তাঁর লেখা এতদিন প্রকাশিত হয়েছে স্বল্প পরিসরে আর তাই প্রচারও হয়েছে কম। বর্তমান সময়ে এসে প্রতিটি ২১শে বইমেলায় তাঁর দুই/চারটি করে বই প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি যেন নজরুলের মত এক স্বভাব কবি।