“জলের জমিন" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ একটা গল্পের বই হবে...। যার গল্পগুলাের কোনাে পূর্বপরিকল্পনা কিংবা পূর্বচিন্তার আভাস থাকবে না। গল্প গল্পের মতােই শুরু হবে। যতদূর টেনে নিয়ে যাবে, ঠিক ততখানিই গল্প । হতে পারে সেটা একটা বড়, ছােট কিংবা অণুগল্প । তাই কেবল মাথায় রেখেছিলাম লেখক বনফুলের ‘যা বলার তা বলা হয়ে যাবে, যা ঘটবার তা ঘটে যাবে। কিন্তু রেশটুকু থেকে যাবে’ কথাটা। কিন্তু তারপরও এলােমেলাে ভাবনাগুলাে ভাষা পেতে প্রায় দেড় বছর সময় লেগেছে। মার্ক টোয়েনের লাইফ অন দ্য মিসিসিপি পড়তে পড়তে ভেবেছি, পৃথিবীর প্রকৃতি ও জীবন কখনােই কি স্থির ছিল না ? কেন ছিল না ? সবকিছু কেন ছবির মতাে চিরকাল সুন্দর নয় ? কে যেন উত্তর দেয়, পৃথিবীতে সবকিছুই টাইম ট্রাভেলার। সেটা জীব বা জড় যা-ই হােক। যতক্ষণ অস্তিত্ব ততক্ষণই সবাই জানান দিতে চায়। পৃথিবী এভাবেই এগিয়ে গেছে, যাবে। আমিও এই টাইম ট্রাভেলের অংশ। চিরায়ত ঘাত-প্রতিঘাতের ক্যানভাসে আঁচড় কাটায় ব্যস্ত। গল্পগুলাের কিছু চরিত্র আমার চেনা। হাঁটতে হাঁটতে চলতে ফিরতে দেখেছি, কথা বলেছি। কিন্তু ওরা যে সব সময় ওদের মতােই ভাষা পেয়েছে, তা বলা যাবে না। আমি ওদের ওলট-পালট করে দিয়েছি। আবার এমনও হয়েছে, অনেক চরিত্র আমার একেবারেই অপিরিচিত। কিন্তু ওরা আমার মাথায় এসে ভর করেছে। কাউকে কাউকে আমি তাড়িয়ে দিয়েছি। আবার কাউকে কাউকে নিয়ে আমি ভেসেছি গল্পের ডিঙায়। একেকজনকে নিয়ে একেক রকম নির্মাণ। না দেখা কাল, পরিবেশ থেকে ছুটেছি একেবারেই চেনা সময়ে। এসব কিছু মিলিয়েই জলের জমিন।
হক ফারুক। তরুণ কথাসাহিত্যিক ও কবি হিসেবে দ্যুতি ছড়িয়ে চলেছেন। জন্ম ২৭ মার্চ, ১৯৮১। লক্ষীপুরের বিরাহিমপুর গ্রামে। আরমানিটোলা গর্ভমেন্ট হাই স্কুল, নটর ডেম কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও সাউথ-ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। সমাজ-বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ও মার্কেটিংয়ে এমবিএ ডিগ্রি নিয়েছেন। বর্তমানে জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে জাতীয় দৈনিক যুগান্তর-এ কর্মরত। বাবা সায়েদুল হক, মা শাহীন আরা বেগম। ভাই হক ইকবাল আহমেদ ও বোন কাবা কাওসাইন। তার স্ত্রী মেহেরী হাসান; তিন সন্তান মায়ান, ফারিন ও মাজিন। ‘জলের জমিন’ তার দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ। প্রকাশনা: কবিতা : ‘নিঃসঙ্গতার পাখিরা’ ২০১৯ (অন্যপ্রকাশ), মেঘদরিয়ার মাঝি (২০২০) (অন্যপ্রকাশ)। গল্প : ‘শহরে দেবশিশু’ (পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স) (২০২০)। প্রবন্ধ : ‘ধীমান কথন’ ২০১৯ (বাংলানামা)। ইতিমধ্যে সিটিব্যাংক-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯ পেয়েছেন।