আমরা কি পারবো এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে যেখানে বিদেশীরা শিক্ষা, চাকুরী ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য আসতে ভীড় জমাবে? পারলে কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে জানতে হবে, কেন কিছু জাতি পৃথিবীকে শাসন করে আর অন্যরা শাসিত হয়? কী কারণে বাংলাদেশের অর্ধেক আয়তনের ’এথেনস’ বিশ্বজয়ী সভ্যতায় পরিণত হয়েছিল? ইতালির ছোট শহর রোম কীভাবে পুরো পৃথিবীকে কয়েক হাজার বছর ধরে নিয়ন্ত্রণকারী সাম্রাজ্য হিসেবে গড়ে উঠেছিল? অশিক্ষিত, বিশৃঙ্খল, দরিদ্র আরবরা কীভাবে অর্ধেক পৃথিবীতে হাজার বছর ধরে সুবিচার আর সুশাসনের উদাহরণ গড়ে তুলেছিল, পৃথিবীর নানা প্রান্তের জ্ঞান-বিজ্ঞানের সম্মিলন ঘটিয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিল? অনুর্বর ভূমি আর প্রতিকূল আবহাওয়ার বৃটিশরা কীভাবে পরিণত হয়েছিল বিশ্বজয়ী শক্তিতে? দারিদ্রের কারণে যে সিঙ্গাপুরকে ফেডারেশন থেকে বের করে দিয়েছিল মালেশিয়া, কীভাবে সে আজ চোখ ধাঁধাঁনো নগর রাষ্ট্রে পরিণত হল? মানব সভ্যতার ছয় হাজার বছরের ইতিহাসে যে সব জাতি পৃথিবীতে তাদের শক্তি ও কর্মের চিহ্ন রেখে গেছে সেই রকম ত্রিশটি জাতির ইতিহাসকে লেখক যেমন গল্পের মত ঢঙ্গে উপস্থাপন করেছেন, তেমনি অনুসন্ধান করে বের করে এনেছেন তাদের প্রত্যেকের উত্থানের চালিকা শক্তি। সুদীর্ঘ কালের ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্ম বিশ্বাস, শিক্ষা ও জনচরিত্রের নির্যাস নিংড়ে বের করে এনেছেন উত্থানের প্রাণ ভোমরা আর তার আলোকে বিশ্লেষণ করেছেন বাঙালির শক্তি ও দুর্বলতার বহুবর্ণিল দিক। সবশেষে বাতলে দিয়েছেন বাংলাদেশকে শক্তিশালী, উন্নত, অগ্রসর ও সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত করার বিস্তারিত পথ। পৃথিবী ও বাংলাদেশের ইতিহাসের উপর উপনিবেশী শক্তিগুলো যে ধুলো, ময়লা ও রঙ মাখিয়ে রেখেছিল, তার থেকে বের করে পৃথিবীর ইতিহাস পরিশুদ্ধ করার প্রচেষ্টাও করেছেন লেখক। বইটি পড়ার পর অবশ্যই বাংলাদেশ ও পৃথিবীর অতীত ও ভবিষ্যত নিয়ে আপনাকে নতুন করে ভাবতে হবে।
Title
ত্রিশ জাতির ইতিহাসের আলোকে বাংলাদেশের উত্থানযাত্রার পথ
আমিনুল মোহায়মেন পেশায় তথ্য প্রযুক্তিবিদ। প্রযুক্তি শিখতে পাড়ি জমিয়েছিলেন মিশরে। ইঞ্জিনিয়ারিং এর পাশাপাশি আরবি ভাষাও আয়ত্ব করেন সেখানে সাত বছরের অবস্থান কালে। সে সময় তিনি পেয়েছেন আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারগণের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ। ত্রিশ বছরের পেশাগত জীবনের প্রায় পুরোটা তিনি কাজ করেছেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়সহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অটোমেশনের সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন। পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন আর্থার এন্ডারসন নামের একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানে। তারপর দেশে ফিরে যোগ দেন প্রশিকাতে, কম্পিউটার বিভাগের প্রধান হিসেবে। জন্ম ঝিনাইদহে, সেখানেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা এবং দুই পরীক্ষাতেই সম্মিলিত মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি, ভালো না লাগায় বছরখানেক পর সরকারি বৃত্তি নিয়ে মিশরে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া। জ্ঞান ও গবেষণার বহুমাত্রিকতায় আমিনুল মোহায়মেনের বিচরণ। একদিকে যেমন তিনি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার মত সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন, তেমনি মানব সভ্যতার ইতিহাস ও উত্থান-পতন নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং বই লিখেছেন, আবার পড়াশোনা করেছেন সামষ্টিক অর্থনীতি, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং ধর্ম নিয়ে, যা তাকে দিয়েছে ইসলামকে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার দুর্লভ ক্ষমতা।