প্রকৃতিতে বিরাজমান নিয়মগুলো সৃষ্টির শুরু থেকেই সক্রিয় ছিল। এ নিয়মগুলোর নির্ভুল প্রয়োগের ফলে ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসের ২০ তারিখ মার্কিন নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং অ্যাপোলো-১১ নভোযানযোগে চাঁদে অবতরণ করতে পেরেছিলেন। এটি ছিল এক বিস্ময়কর ও যুগান্তকারী ঘটনা। একটি ক্ষুদ্র মানুষের- তার চেয়েও ক্ষুদ্রতর একটি পদক্ষেপ মানবজাতির জন্য ছিল এক মহা উল্লম্ফন। চাঁদে পৌঁছার এ ঘটনা ঘটতে বা ঘটাতে মানুষকে বিংশ শতাব্দীর প্রায় শেষপাদ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কারণ, মানুষ বহুদিন পর্যন্ত প্রকৃতিকে ভীতির চোখে দেখেছে। প্রকৃতিকে বিশ্লেষণ, চর্চা ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করার চিন্তার চাইতে তারা একে পূজা ও অর্চনার বিষয় করে রেখেছিল। এর উপর করেছিল দেবত্বারোপ। কিন্তু প্রকৃতিকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্যই। সপ্তম শতাব্দীতে কুরআন নাযিল হওয়ার পর থেকেই প্রকৃতি সম্পর্কে মানুষের ধারণার আমূল পরিবর্তন ঘটে। কুরআনের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে মুসলমানরাই প্রথমত প্রকৃতিকে মানুষের কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত করার চিন্তাভাবনা শুরু করে। পূর্ববর্তী প্রজন্মের কোনো অবদানকে অগ্রাহ্য না করেই তারা বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। কুরআন প্রচারিত একত্ববাদ তাদেরকে এ সাধনার পথে আলো দেখিয়েছে। এই বইতে তারই প্রামাণ্য দলিল উপস্থাপন করা হয়েছে। মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা সৃষ্টি ইসলামের এক বিরাট অবদান। বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের সূচনা ও অগ্রগতি সাধন করে ইসলামই আধুনিক সভ্যতার স্থপতি হবার গৌরব অর্জন করেছে।